Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

ফাটল ধরা সেতু পার নিয়ে সংশয়

গোবরডাঙার কালীবাড়ি মোড়ের কাছে  গাইঘাটা-গোবরডাঙা সড়কের উপরে গোবরডাঙা সেতুটির নীচ দিয়ে বয়ে গিয়েছে যমুনা নদী। সেতুর পোশাকি নাম, ‘প্রভাবতীদেবী  সরস্বতী সেতু’

 সেতুর এই পরিস্থিতির জন্যই চিন্তা মানুষজনের। ছবি: সুজিত দুয়ারি

সেতুর এই পরিস্থিতির জন্যই চিন্তা মানুষজনের। ছবি: সুজিত দুয়ারি

সীমান্ত মৈত্র
গোবরডাঙা: শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:০৮
Share: Save:

সেতুটির দু’দিকের রেলিংয়ের মধ্যে কোথাও ফাটল ধরেছে। কোথাও একাংশ ভেঙে গিয়েছে। সেখান থেকে জং ধরা লোহার রড বেরিয়ে। সেতুর ফুটপাতের স্ল্যাব কয়েকটি ভেঙে গিয়েছে। সেতুর উপরের চারটি সংযোগস্থলও (জয়েন্ট) খারাপ। কয়েকটি গর্ত তৈরি হয়েছে।
তারমধ্যে দিয়েই চলছে যাত্রী-বোঝাই বাস-ট্রাক, নানা যানবাহন। বনগাঁ থেকে বসিরহাট যাওয়ার অন্যতম সেতু এটি। রোজ হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করেন।
গোবরডাঙার কালীবাড়ি মোড়ের কাছে গাইঘাটা-গোবরডাঙা সড়কের উপরে গোবরডাঙা সেতুটির নীচ দিয়ে বয়ে গিয়েছে যমুনা নদী। সেতুর পোশাকি নাম, ‘প্রভাবতীদেবী সরস্বতী সেতু’। অতীতে এখানে কাঠের সাঁকো ছিল। ১৯৯৪ সালে বাম আমলে পাকা সেতুর শিলান্যাস হয়। তারপরে তৈরি হয় সেতু।
মঙ্গলবার মাঝেরহাট ব্রিজ ভেঙে পড়ার পরে এখানকার মানুষও দ্রুত সেতুর পরিকাঠামো মেরামত করার দাবি তুলেছেন। স্থানীয় ভ্যান চালক হাসান মণ্ডল বলেন, ‘‘ভারী ট্রাক সেতুর উপর দিয়ে গেলে দুলতে থাকা। খুব ভয় লাগে। বেহালার ঘটনার পরে তো আরও ভয় ধরেছে সকলের মনে।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, সেতুটি তৈরি হওয়ার পর থেকে আর সে ভাবে রক্ষণাবেক্ষণ হয়নি। সেতুর উপরে গর্ত হলে পূর্ত দফতরের লোকজন এসে মেরামত করে দিয়ে যায়। কিন্তু শুধু ওইটুকুই। সেতুর পুর্ণাঙ্গ সংস্কার হয়নি কখনও। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষাও হয় না। স্থানীয় বাসিন্দা কৃষ্ণচন্দ্র নাগ বলেন, ‘‘সেতুতে নীল সাদা রঙ করা ছাড়া সেতু তৈরির পরে আর রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়নি। সেতুটির কিছু জায়গা ভেঙে গিয়েছে। যে কোনও দিন বিপদ ঘটে যেতে পারে।’’
গোবরডাঙার পুরপ্রধান সুভাষ দত্ত জানিয়েছেন, শীঘ্রই পূর্ত দফতরকে চিঠি দেওয়া হচ্ছে, সেতু দ্রুত সংস্কারের জন্য। নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ যে হয় না, সে কথা মানছেন পুরপ্রধানও।
কিছু দিন আগে সেতুর উপরে রাস্তার একাংশ বসে গিয়েছিল। সেটি অবশ্য জোড়াতালি দিয়ে মেরামত করা হয়েছে। পূর্ত দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, নিয়মিত সেতুর পরিস্থিতি পরিদর্শন করে দেখা হয়। এপ্রিল মাসে সেতুর ‘ফিজিক্যাল অডিট’ হয়েছে। ছোটখাট মেরামতির কাজ নিয়মিত করা হয় বলেও দফতরের কর্তাদের দাবি। তবে ভারী যানবাহন উঠলে সেতু যে দুলে ওঠে, সে বিষয়ে পূর্ত দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘সেতুটি দুললেই বুঝতে হবে মুভমেন্ট ঠিক আছে। এতে ভয়ের কিছু নেই।’’
সাধারণ মানুষ অবশ্য এই যুক্তিতে আশ্বস্ত হচ্ছেন না। তাঁদের বক্তব্য, সেতুটি তৈরির পরে তো এমন ভাবে দুলে উঠত না। পূর্ত দফতরের বারাসত ডিভিশনের নির্বাহী বাস্তুকার ২ অরুণ ঘোষ বলেন, ‘‘সেতুটির চারটি জয়েন্ট খারাপ হয়ে গিয়েছে। পুজোর পরে সেগুলি পাল্টে দেওয়া হবে। কাজের দরপত্র ডাকার কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। কাজ শেষ হতে আড়াই মাস সময় লাগবে।’’
পূর্ত দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, কলকাতার উড়ালপুলগুলিতে যে ধরনের জয়েন্ট বসানো থাকে, এ বার গোবরডাঙার সেতুতে একই ধরনের জয়েন্ট ব্যবহার করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bridge Administration Gobardanga
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE