—প্রতীকী ছবি।
গত বছর ডিসেম্বর মাসে কৃষ্ণপ্রসাদ আদর্শ বিদ্যাপীঠে শিক্ষিকাদের দিকে জলের বোতল ছুড়ে মারা, প্রতিবন্ধী শিক্ষককে মারধরের অভিযোগ ঘিরে তুলকালাম বেধেছিল। পরিচালন সমিতির সভাপতি অশোক দাস, প্রধান শিক্ষক সহ অনেকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ হয়। তারপর থেকে পঠন-পাঠন স্বাভাবিক হয়েছে। কিন্তু গোঁসা করে পরিচালন সমিতির সভাপতি-সহ কয়েকজন সদস্য প্রায় ৯ মাস ধরে স্কুলের বৈঠকে হাজির হচ্ছেন না বলে অভিযোগ। তার জেরে তফসিলি হস্টেলে খাওয়া বন্ধ, এ বছর পোশাক পায়নি ছাত্রছাত্রীরা।
স্কুল কর্তৃপক্ষ খোদ শিক্ষামন্ত্রীর কাছে চিঠি লিখে সমস্যার সমাধান চেয়েছিলেন। গত ১৬ অগস্ট শিক্ষা দফতর থেকে চিঠি দিয়ে (মেমো নম্বর: ৭২৮/এসসিজি) জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) বাদল পাত্রকে বিষয়টিতে দ্রুত এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে বলা হয়। তারপরেও এক মাস কেটে গেল, অবস্থার বদল হয়নি। বাদলবাবু বলেন, ‘‘বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব।’’
টাকা খরচ করা থেকে শুরু করে স্কুলের অডিট সমস্তটাই হয় সভাপতির সইয়ে। যে কারণে, সভাপতি গরহাজির থাকায় সমস্যা তৈরি হয়েছে।
তফসিলি জাতি ও উপজাতিভুক্ত ছাত্রদের হস্টেলের খাওয়া-দাওয়াতেও সমস্যা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে টাকা খরচের শংসাপত্র (ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট) না দিলে পরের বার টাকা আসে না। স্কুলের অডিট হচ্ছে না, ছাত্রীদের শৌচাগার পরিষ্কার করা যাচ্ছে না। অভিভাবক পরিতোষ দাস জানালেন, বাথরুমে দুর্গন্ধের জন্য স্কুলের ছাত্রীদের গ্রামবাসীদের বাড়ির বাথরুমে যেতে হচ্ছে। পানীয় জলেরও সমস্যা রয়েছে। অস্থায়ী শিক্ষকদের মাইনে বন্ধ প্রায় ১২০০ ছাত্রছাত্রীর ওই স্কুলে। ব্যাঙ্কে টাকা পড়ে রয়েছে। অথচ দীর্ঘদিন থেকে লাইটের বিল দেওয়া যায়নি, যে কোনও দিন স্কুলের বিদ্যুৎ সংযোগ ছিন্ন হতে পারে। অভিভাবকেরা মাঝে মধ্যেই বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন।
তৃণমূলের ব্লক নেতাদের এক অংশের নির্দেশেই সভাপতি অনুপস্থিত থাকছেন বলে অভিযোগ। যদিও তা অস্বীকার করে তৃণমূল ব্লক সভাপতি পরমেশ্বর মণ্ডল বলেন, ‘‘বার বার ফোন করা হলে তিনি ধরছেন না। পদে আসীন থেকে এ ভাবে ছাত্রছাত্রীদের অসুবিধা করা যায় না। কাজ না করলে পদ ছাড়া উচিত।’’
প্রধান শিক্ষক দেবাশিস ভৌমিক বলেন, ‘‘সে সময়ে আমার বিরুদ্ধেও অভিযোগ হয়েছিল। তা বলে আমি তো রাগ করে বসে যাইনি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে কাজ করছি। কিন্তু সভাপতি না আসায় সমস্যা হচ্ছে।’’
কেন আসছেন না স্কুলের বৈঠকে? অশোকবাবুর যুক্তি, ‘‘প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে আমার মতানৈক্য রয়েছে। নিজের মতো চালাতে চাইছেন তিনি। নানা সময়ে খারাপ ব্যবহার করছেন। সে জন্যই অপমানিত হয়ে স্কুলে যাই না।’’ যদিও তিনি এ বিষয়ে এখনও পর্যন্ত লিখিত কোনও অভিযোগ কোথাও দেননি। স্কুলের স্টাফ কাউন্সিল সদস্য দীপনারায়ণ করণ বলেন, ‘‘স্কুলে যখন পড়াশোনার সুস্থ পরিবেশ ফিরেছে, সে সময়ে আর্থিক ভাবে স্কুলকে বিপদে ফেলতে চাইছেন সভাপতি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy