Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

করোনা-ভয়ে ভাড়াটিয়াকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিলেন মালিক

করোনা সংক্রমণ রুখতে কেন্দ্রীয় সরকার লকডাউন ঘোষণা করায় কেরল থেকে ফিরে আসেন সুধীর।

গাছতলায় বসে আছেন সুধীর। নিজস্ব চিত্র

গাছতলায় বসে আছেন সুধীর। নিজস্ব চিত্র

প্রসেনজিৎ সাহা
ক্যানিং শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২০ ০৫:৪৭
Share: Save:

করোনা আতঙ্কের জেরে এ বার ভাড়াটিয়াকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে।

সুধীর হালদার নামে ওই ব্যক্তি কখনও ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের বিশ্রামাগার থাকছেন। আবার কখনও তাঁকে দেখা যাচ্ছে গাছতলায়।

গত ২৩ মার্চ সুধীর কেরল থেকে ফেরেন। সেখানে তিনি ঠিকাদারের তত্ত্বাবধানে ট্রেনের সাফাইকর্মীর কাজ করতেন। মাস ছ’য়েক আগে তিনি এই কাজে যোগ দেন। করোনা সংক্রমণ রুখতে কেন্দ্রীয় সরকার লকডাউন ঘোষণা করায় কেরল থেকে ফিরে আসেন সুধীর। ক্যানিং থানার তালদি রাজাপুর এলাকায় সোনা ঘরামির বাড়িতে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে ভাড়া থাকেন তিনি। কেরল থেকে ফিরে সরকারি নির্দেশ মেনে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার পর তিনি পরিবারের কাছে যান। অভিযোগ, তখন বাড়ির মালিক তাঁকে বাড়িতে ঢুকতে বাধা দেন। আগামী এক মাস যেন তিনি বাড়িতে না ঢোকেন সেই নিদান দেন বাড়িওয়ালা। হাসপাতালে শারীরিক পরীক্ষা করিয়েই তিনি বাড়িতে ফিরেছেন বলে জানালেও তাঁকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি সেখানে। এমনকী গ্রামের লোকজন দিয়ে তাঁকে সেখান থেকে বের করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।

পরিবারের কাছে ফিরতে না পেরে আবারও ক্যানিং হাসপাতালে চলে আসেন তিনি। হাসপাতালে ভর্তি থাকার জন্য চিকিৎসকদের কাছে আবেদন জানান। কিন্তু শারীরিক কোনও সমস্যা না থাকায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি নিতে চাননি চিকিৎসকরা। তাঁরা ১৪ দিন সুধীরকে হোম কোয়রান্টিনে থাকার পরামর্শ দেন। কিন্তু বাড়ি ফিরতে না পারায় তা সম্ভব হয়নি। সুধীর বলেন, “বাড়িওয়ালা বাড়িতে ঢুকতে না দিলে আমি বিডিও অফিসে যাই। তাঁরা আবার আমায় হাসপাতালে পাঠান। সেই থেকে এই ভাবে হাসপাতাল চত্বরেই দিনরাত কাটছে আমার। ডাক্তারবাবুরা আমায় হোম কোয়রান্টিনে থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন।’’ বাড়িওয়ালা বলেন, “যাঁরাই বাইরে থেকে আসছেন তাঁদেরকে বাড়িতে একা থাকার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। আমার বাড়িতে অনেক মানুষ থাকেন। কমন পায়খানা, বাথরুম, টিউবওয়েল সকলে ব্যবহার করি। উনি এখানে থাকলে বাকিদের সমস্যা হতে পারে তাই ওনাকে ১৪ দিন বাইরে কাটিয়ে এখানে ফিরতে বলেছি।’’

ক্যানিং ১ বিডিও নীলাদ্রি শেখর দে বলেন, “চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি উনি একজন সুস্থ, স্বাভাবিক মানুষ। করোনাভাইরাসের কোনও লক্ষ্মণ সুধীরের শরীরে নেই। যেহেতু তিনি অন্য রাজ্য থেকে এসেছেন তাই হোম কোয়রান্টিনে রাখা হবে। বাড়িওয়ালা সুধীরকে বাড়িতে উঠতে না দিলে সরকারি কোয়রান্টিনে তাঁকে রাখা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE