বাড়ির-পথে: ক্যানিংয়ের গ্রামে। ছবি: প্রসেনজিৎ সাহা
আয়লার পরে এলাকায় চাষের জমি নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। সে ভাবে হাতে কোনও কাজ না থাকায় বাড়তি রোজগারের আশায় সুন্দরবনের গোসাবা, বাসন্তী থেকে বহু মানুষ পাড়ি দিয়েছিলেন ভিন রাজ্যে। সেই থেকেই ভিন রাজ্যে মূলত শ্রমিকের কাজ করছেন তাঁরা।
বছরে দু’একবার গ্রামে ফিরলেও কয়েক দিন পরে আবারও ফিরে যেতেন কেরল, আন্দামান, চেন্নাই কিংবা অন্য কোনও রাজ্যে। তবে এ বার করোনাভাইরাসের আতঙ্কে সেই সমস্ত রাজ্যে বন্ধ কাজ। অগত্যা ভিন রাজ্য থেকে বাড়ির দিকে রওনা দিয়েছেন হাজার হাজার মানুষজন। কিন্তু আপাতত কার্যত কর্মহীন হয়ে পড়লেন এঁরা। এলাকায় ফিরে বিকল্প কাজ পাবেন সকলে, সে নিশ্চয়তাও নেই। কবে ফিরবেন, ফিরেও কাজ মিলবে কিনা, সেই আশঙ্কা রয়েছে।
ক্যানিংয়ের মহকুমাশাসক বন্দনা পোখরিয়াল বলেন, “সুন্দরবনের বহু মানুষ কাজের জন্য আন্দামান, কেরল-সহ অন্য রাজ্যে যান। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে তাঁরা বাড়ি ফিরে আসছেন। আমরা বিষয়টিতে নজর রাখছি।’’
ব্লক প্রশাসন ও স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসনের উদ্যোগে এই সমস্ত মানুষকে চিহ্নিত করার কাজ চলছে। সর্দি, কাশি, জ্বর না হলেও তাঁদেরকে আগামী কিছু দিন বাড়িতেই থাকার নির্দেশ দিচ্ছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার চেন্নাই থেকে ফিরেছেন গোসাবার কচুখালির বাসিন্দা রণজিৎ মণ্ডল। তিনি বলেন, “যেখানে কাজ করতাম, সেখানে সব বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এই করোনাভাইরাসের আতঙ্কে সব কর্মীদের ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাই বাড়ি ফিরে এলাম।” কবে আবার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, তা জানেন না কেউই। দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে কাজ শুরু না হলে কী ভাবে সংসার চলবে, তা নিয়ে চিন্তিত অনেকেই। গোসাবার আরামপুরের বাসিন্দা নন্দ সর্দার, নলিনী মণ্ডলরা বলেন, “গ্রামে কাজ ছিল না বলে ভিনরাজ্যে গিয়েছিলাম। এখন সেই সুযোগও চলে গেল। কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আবার কাজ শুরু হবে জানি না। দ্রুত সব কিছু স্বাভাবিক না হলে কি করে সংসার চালাবো?” পাশাপাশি ভিন রাজ্য থেকে বাড়ি ফেরায় এখানে বাড়িতে থাকার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। ফলে এখনই স্থানীয় ভাবে কাজ খোঁজার উপায়ও নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy