Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus in West Bengal

জেলা জুড়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা

প্রায় রোজই নতুন করে আক্রান্ত হওয়ার খবর আসছে বিভিন্ন এলাকা থেকে।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০২০ ০৩:৩৫
Share: Save:

বেশ কিছুদিন হল শিথিল হয়েছে লকডাউন। বহু মানুষ আগের মতো কাজে বেরোচ্ছেন। পাশাপাশি প্রায় রোজই শয়ে শয়ে পরিযায়ী শ্রমিক এলাকায় ফিরছেন। আর এই দুয়ে মিলেই জেলা জুড়ে হু হু করে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। শুধু দক্ষিণ ২৪ পরগনা স্বাস্থ্য জেলাতেই গত এক সপ্তাহে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৮২ জন। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে,এই স্বাস্থ্য জেলায় গত ৮ জুন পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ২০৫ জন। তাঁদের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন ৯৬ জন। মারা গিয়েছিলেন ১৩ জন। অর্থাৎ অ্যাক্টিভ করোনা রোগীর সংখ্যা ছিল ৯৪ জন। ১৫ জুন আক্রান্তের সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮৭ জনে। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১০০ জন। মৃত্যু হয়েছে ১৫ জনের। অর্থাৎ এই মুহূর্তে অ্যাক্টিভ করোনা রোগীর সংখ্যা ১৭০ জন।

পরিসংখ্যান বলছে, গত এক সপ্তাহে জেলায় নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৮২ জন, সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৪ জন। মৃত্যু হয়েছে দুজনের। চিকিৎসাধীন করোনা অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা ৭৬ জন। এদের মধ্যে পরিযায়ী শ্রমিক আছেন ৩৩ জন। জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি করোনা আক্রান্তের সংখ্যা মহেশতলা ও রাজপুর-সোনারপুর পুরসভা এলাকায়।

প্রায় রোজই নতুন করে আক্রান্ত হওয়ার খবর আসছে বিভিন্ন এলাকা থেকে। রবিবার ভাঙড় ১ ব্লকের কাশিয়াডাঙা ও দক্ষিণ খড়গাছি এলাকার বাসিন্দা দুই শ্রমিক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। কাশিয়াডাঙার ওই শ্রিমিক দিল্লি থেকে সম্প্রতি ফিরেছিলেন। দক্ষিণ খড়গাছি এলাকার শ্রমিক ফেরেন চেন্নাই থেকে। প্রশাসনের নির্দেশে তাঁদের কোয়রান্টিন সেন্টারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেই সময় তাঁদের লালারসের নমুনাও সংগ্রহ করা হয়। এ দিন রিপোর্ট আসলে দেখা যায় তাঁরা করোনা পজিটিভ। এরপরই তাঁদের এমআর বাঙ্গুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ক্যানিংয়ে বাষট্টি বছরের এক বৃদ্ধা করোনা-আক্রান্ত হয়েছেন। রবিবার মাতলা ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের গোয়ালাপাড়ার বাসিন্দা ওই বৃদ্ধার করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে। তাঁকে কলকাতার এমআর বাঙ্গুর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি তাঁর পরিবারের ছয় সদস্যকে উদ্ধার করে ক্যানিং কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁদের ও লালারস পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। সোমবার ক্যানিং ১ বিডিও নিলাদ্রিশেখর দের নির্দেশে ওই বৃদ্ধার বাড়ি ও আশপাশের এলাকা জীবাণুমুক্ত করেছে দমকল। পুরো এলাকাটিকে কন্টেনমেন্ট জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। কীভাবে বৃদ্ধা সংক্রমিত হলেন তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

ডায়মন্ড হারবার স্বাস্থ্য জেলাতেও বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। স্বাস্থ্য দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই স্বাস্থ্য জেলার অধীন ডায়মন্ড হারবার ও কাকদ্বীপ মহকুমা এলাকায় প্রতিদিনই কেউ না কেউ আক্রান্ত হচ্ছেন। সম্প্রতি কুলপির গ্রামে দুজনের করোনা ধরা পড়েছে। একজনের বাড়ি রামকিশোর পঞ্চায়েতের নারায়ণপুরে। অপরজন কামারচাক পঞ্চায়েতের তুলসী গ্রামের বাসিন্দা। প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নারায়ণপুর গ্রামের বছর পঁয়ত্রিশের মহিলা দিন কয়েক আগে অসুস্থ বাবাকে দেখতে কাকদ্বীপে গিয়েছিলেন। সেখানে দিন কয়েক থাকার পর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। কিন্তু কাউকে না জানিয়ে বাড়িতে ফিরে আসেন। বিষয়টি কোনও ভাবে স্বাস্থ্য দফতরের নজরে আসে। বৃহস্পতিবার ওই মহিলাকে বাড়ি থেকে এনে বেলপুকুর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে লালারস সংগ্রহ করা হয়েছিল। রবিবার সন্ধ্যায় সেই টেস্টের রিপোর্ট আসলে দেখা যায় তিনি করোনা পজিটিভ। তুলসী গ্রামের বছর সত্তরের এক বৃদ্ধ সপ্তাহখানেক আগে জ্বর, শ্বাসকষ্ট নিয়ে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানেই তাঁর লালারস পরীক্ষা হয় এবং করোনা ধরা পড়ে।

জেলাশাসক পি উলগানাথন বলেন, “এখনও পর্যন্ত জেলায় প্রায় ৪০০ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৮ জনের। মৃতদের সকলেরই বয়স ৬০ বছরের উপরে। প্রতিদিন নতুন করে আক্রান্ত হচ্ছে ১৫-২০ জন। আক্রান্তরা অধিকাংশই পরিযায়ী শ্রমিক এবং শহরতলী এলাকার বাসিন্দা। সকলকেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus in West Bengal COVID-19 Coronavirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE