Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus in west bengal

বাড়ছে সংক্রমণ, লাগাম দিতে বৈঠক উত্তর ২৪ পরগনায়

বর্তমানে উত্তর ২৪ পরগনায় দৈনিক গড় সংক্রমণ ৮০০-র বেশি। সংক্রমণে কলকাতার সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে জেলাটি।

অসচেতন: ফলের বাজারে ক্রেতা ও বিক্রেতা কারও মুখেই মাস্ক নেই। বুধবার, বারাসতের হৃদয়পুর স্টেশনের কাছে। ছবি: সুদীপ ঘোষ

অসচেতন: ফলের বাজারে ক্রেতা ও বিক্রেতা কারও মুখেই মাস্ক নেই। বুধবার, বারাসতের হৃদয়পুর স্টেশনের কাছে। ছবি: সুদীপ ঘোষ

সুপ্রকাশ মণ্ডল
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২০ ০৩:২৪
Share: Save:

মাঝখানে ব্যবধান শুধু উৎসবের দিনগুলির। তার পরেই বারাসত পুরসভা এলাকায় দৈনিক করোনা সংক্রমণের হার বেড়ে গিয়েছে। আগের থেকে রোজ ১৫-২০ জন করে বেশি করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন।

শুধু এই পুরসভাতেই দৈনিক ৩৫-৪০ জন করে আক্রান্ত হলে গোটা জেলায় সংক্রমণ কী ভাবে ছড়াচ্ছে, তা ভেবে চিন্তিত জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা। কারণ, উত্তর ২৪ পরগনায় দৈনিক সংক্রমিতের সংখ্যা এখনও ৮০০-র বেশি থাকছে।

বারাসত পুর কর্তৃপক্ষ আবার চিন্তিত নাগরিকদের অসচেতনতা দেখে। কারণ, পথেঘাটে মাস্ক না-পরা মানুষের ভিড় দিন দিন বাড়ছে। পুর কর্তৃপক্ষের পর্যবেক্ষণ, সংক্রমিত অনেককে আইসোলেশনে থাকতে বলা হলেও তাঁরা পরিবারের সঙ্গে মিশছেন। স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা মনে করছেন, অনেক আক্রান্ত বিধি ভেঙে বাইরেও ঘুরছেন। করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, এই সন্দেহে লালারসের নমুনা পরীক্ষার জন্য দিয়ে এসে অনেকে দেদার বাজারে ঘুরছেন, এমন প্রমাণও মিলেছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। তার ফলেই সংক্রমণ বাড়ছে বলে আশঙ্কা।

কী ভাবে এই অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়, তার পথ খুঁজছেন পুর কর্তৃপক্ষ। বুধবার পুরসভার সঙ্গে একটি বৈঠক করেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক এবং অন্যান্য আধিকারিকেরা। মূলত বাড়িতে আইসোলেশনে থাকা রোগীদের নিয়ে এই বৈঠকে আলোচনা হয়। তাঁরা ঠিক মতো নিয়ম মানছেন না বলেই জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে বলে মনে করেছেন স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা।

বারাসত পুরসভায় পুজোর আগে দৈনিক করোনায় আক্রান্ত হচ্ছিলেন ২০-২৫ জন। পুজোর কয়েক দিন পর থেকে সেই সংখ্যাটা বেড়ে ৩০-৩৫ জন হয়ে যায়। বারাসত পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান সুনীল মুখোপাধ্যায় বলেন, “ছোট একটি পুরসভা এলাকায় যদি দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ৩০-এর বেশি হয়, তা হলে কী ভাবে তার মোকাবিলা করা যাবে? অনেক মানুষ এখনও সচেতন নন। মাস্ক ছাড়াই বাজার-হাটে ঘোরাঘুরি করছেন তাঁরা।” মঙ্গলবার একটি রক্তদান শিবিরে গিয়ে সুনীলবাবু বলেন, “আমরা সব দোকানদারদের অনুরোধ করছি, মাস্কবিহীন ক্রেতাদের যেন তাঁরা জিনিসপত্র বিক্রি না করেন। সকলে যদি এই পন্থা নেন, তা হলে ক্রেতারা নিশ্চয়ই মাস্ক পরবেন।”

বর্তমানে উত্তর ২৪ পরগনায় দৈনিক গড় সংক্রমণ ৮০০-র বেশি। সংক্রমণে কলকাতার সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে জেলাটি। সংক্রমণের হারের ক্ষেত্রে উপরের দিকে রয়েছে দক্ষিণ দমদম, উত্তর দমদম পুরসভা এবং বারাসত পুরসভা এলাকা। বারাসত পুরসভায় অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছিল যে, পুজোর আগে, এক দফা লকডাউনের পরে ফের কয়েকটি বাজার এক সপ্তাহের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছিল। কিন্তু সংক্রমণে লাগাম পরানো যায়নি।

শীত পড়ার সঙ্গে সঙ্গে সংক্রমণ আরও বাড়বে বলেই মনে করছেন স্বাস্থ্য কর্তারা। সপ্তাহ দেড়েক আগে জেলার সংক্রমণ কিছুটা কমেছিল। কিন্তু, তার পর থেকে সংক্রমিতের সংখ্যা হ্রাসের কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। বুধবারও বারাসতের বিভিন্ন বাজারে বহু মানুষকে মাস্ক ছাড়াই ঘুরতে দেখা গিয়েছে। মানা হচ্ছে না দূরত্ব-বিধিও। এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ চাইছেন, দিল্লির মতো সেখানেও মাস্ক ছাড়া বাইরে বেরোলে মোটা টাকার জরিমানা করা হোক প্রশাসনের তরফে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

North 24 parganas Coronavirus in west bengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE