Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

কলাচাষের প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ

টিস্যু কালচার প্রকল্পে কলাগাছের চারা দেওয়া হয়েছিল চাষিদের। সেগুলি লাগানো, বড় করে তোলা এবং রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বরাদ্দ হয়েছিল টাকা, সার। কিন্তু কৃষকেরা সে সব প্রয়োজনের তুলনায় কম পরিমাণে পেয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

শান্তশ্রী মজুমদার
নামখানা শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০১৭ ০১:১৭
Share: Save:

টিস্যু কালচার প্রকল্পে কলাগাছের চারা দেওয়া হয়েছিল চাষিদের। সেগুলি লাগানো, বড় করে তোলা এবং রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বরাদ্দ হয়েছিল টাকা, সার। কিন্তু কৃষকেরা সে সব প্রয়োজনের তুলনায় কম পরিমাণে পেয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

নামখানার হরিপুর পঞ্চায়েত এলাকার এই ঘটনায় সম্প্রতি বিডিও অফিস ছাড়াও দুর্নীতিদমন বিভাগেও অভিযোগ দায়ের করেছেন তৃণমূল সমর্থক এক চাষি। কয়েক লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তুলছেন আরও অনেকে।

প্রশাসন এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৫-১৬ অর্থবর্ষে পঞ্চায়েত থেকে প্রচুর চাষিকে কলাগাছের চারা দেওয়া হয়েছিল। একশো দিনের কাজের প্রকল্পে সেই গাছগুলি লাগানোর কথা ছিল। কিন্তু তারপরে আর টাকা পাননি কৃষকেরা। এ রকমই অভিযোগ তুলেছেন চন্দনপিড়ির চাষি প্রভাস জানা। প্রভাসবাবু বলেন, ‘‘গাছ প্রতি ১৩১ টাকা করে পাওয়ার কথা ছিল। তার বাইরে ৪০ বস্তা জৈব সার। কিন্তু অর্ধেক সার পেয়েছি। আর মাত্র ৬ হাজার টাকার কিছু বেশি টাকা পেয়েছি।’’ প্রায় ৮০০ কলা গাছের চারা লাগিয়েছিলেন ওই চাষি। অর্থাৎ, প্রায় ১ লক্ষ টাকা প্রাপ্তি ছিল তাঁর। প্রভাসবাবুর দাবি, এলাকায় এ রকম আরও অনেকেই কম টাকা পেয়েছেন।

প্রভাসবাবুদের অভিযোগ, প্রকল্পের সুপারভাইজার জানিয়েছিলেন, গাছ লাগানো, পরিচর্যায় ৬ হাজারের বেশি টাকা পাওয়া যাবে না। যদিও পরে প্রভাসবাবুরা প্রকল্পের শ্রমদিবসের হিসেব নিতে গিয়ে দেখেন, ওই প্রকল্পে মাস্টার রোলে প্রচুর নাম ঢুকিয়ে টাকা তোলা হয়েছে। তাদের কেউই ওই প্রকল্পে কাজই করেনি।

উত্তর চন্দনপিড়ির আর এক চাষি সুখদেব মিস্ত্রির ক্ষেত্রে মাস্টার রোলের কাগজ ইন্টারনেট থেকে জোগাড় করার পরে দেখা গিয়েছে, তাঁর ২২৫টি কলাগাছের চারার জন্য প্রাপ্য ছিল প্রায় ৩০ হাজার টাকা। তিনি পেয়েছেন মাত্র ২ হাজার টাকা। তাঁর কথায়, ‘‘সারও দিচ্ছিল না। অনেকবার ঘোরাঘুরির পরে পাঁচ কুইন্ট্যাল সার পেয়েছি। আমিও বিডিও অফিসে অভিযোগ জানাব।’’ এই চাষিরও দাবি, তাঁর নামে যে মাস্টার রোল তৈরি করা হয়েছে, তাতেও কিছু জবকার্ড হোন্ডারদের নাম রয়েছে। কিন্তু তাদের কেউই সুখদেববাবুর বাড়িতে কলাগাছের চারা লাগাতে বা জল দিতে যাননি।

তবে ওই প্রকল্পের সুপারভাইজার সুনীল দাস পাল্টা দোষারোপ করেছেন চাষিদের দিকেই। তাঁর কথায়, ‘‘চাষিরাই ভুয়ো জবকার্ড হোন্ডারদের অ্যাকাউন্ট নম্বর দিয়েছিলেন। তাঁদের কাছে টাকা না পেয়ে এখন নিজেরাই ভুল অভিযাগ তুলছেন আমার নামে।’’ হরিপুর পঞ্চায়েতের প্রধান বন্যিবন্যা কর এ সব অভিযোগ উড়িয়ে দাবি করেছেন, একশো দিনের কাজ এখন অনেক স্বচ্ছ্ব। সেখানে এ রকম অভিযোগ তোলার জায়গা নেই। তাঁর কথায়, ‘‘প্রকল্পের বোর্ডে যে টাকাটা লেখা থাকে, তার পুরো টাকা কি চাষি পান? কিন্তু তারা ভুল ধারণা থেকে এ সব অভিযোগ তুলছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Banana Cultivation Corruption
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE