Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Basirhat Hospital

ক’টা দিন বাড়িতে বই পড়ে, গান শুনে কাটিয়েছেন রূপালি

বছর বেয়াল্লিশের রূপালি টাকি পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের স্টেশন পাড়ার বাসিন্দা। বাড়িতে স্বামী, দুই ছেলেমেয়ে ও বৃদ্ধ বাবা-মা।

কাজে যোগ দিতে প্রস্তুত রূপালি। নিজস্ব চিত্র

কাজে যোগ দিতে প্রস্তুত রূপালি। নিজস্ব চিত্র

নবেন্দু ঘোষ
হাসনাবাদ শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০২০ ০৬:৩৯
Share: Save:

করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ফিরে কাজে যোগ দিতে চলেছে বসিরহাট হাসপাতালের নার্স রূপালি বসু।

বছর বেয়াল্লিশের রূপালি টাকি পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের স্টেশন পাড়ার বাসিন্দা। বাড়িতে স্বামী, দুই ছেলেমেয়ে ও বৃদ্ধ বাবা-মা। রূপালি ২০০৫ সালে হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের সান্ডেলারবিল হাসপাতালে নার্স হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেন। ২০১৬ সাল থেকে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে কর্মরত।

১৩ জুন তাঁর সামান্য জ্বর আসে। তা ছাড়া আর কোনও উপসর্গ দেখা দেয়নি। ১৫ জুন, সোমবার কাজে যান। সেখানে তাঁর লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। সেই থেকে রূপালি বাড়ির দোতলায় সম্পূর্ণ পৃথক ভাবে থাকতে শুরু করেন।

১৭ জুন রিপোর্ট এলে দেখা যায়, তিনি করোনা পজ়িটিভ। সরকারি চিকিৎসক বাড়িতে এসে পরামর্শ দেন। বাড়িতে রেখেই চিকিৎসার ব্যবস্থা হয়।

সেই মতো রূপালি সাধারণ পুষ্টিকর খাবার যেমন মাছ, মাংস, শাক-সব্জি, দুধ, ফল ইত্যাদি খেতেন। শরীরচর্চা করতেন।

স্বামী অসীম জানান, কাগজের থালা-গ্লাসে খাবার-জল দোতলার একটি জায়গায় রেখে দেওয়া হত। সেখান থেকেই রূপালি নিয়ে নিতেন। ওই থালা-গ্লাস রূপালির ঘরের নিদিষ্ট জায়গায় রেখে পড়ে পুড়িয়ে দেওয়া হত।

রূপালি জানান, তাঁর শারীরিক অবস্থার কোনও অবনতি হয়নি। তাই প‍্যারাসিটামল ও অ্যান্টিবায়োটিক ছাড়া আর কিছুই খেতে হয়নি। জানা গেল, চার দেওয়ালের মধ্যে রূপালি দিনরাত কাটাতেন মূলত বই পড়ে আর গান শুনে।

তাঁর ১১ বছরের মেয়ে, ১৫ বছরের ছেলে, বৃদ্ধ বাবা-মায়ের দেখভাল করতেন অসীম। এ ভাবেই ১৪ দিন কাটানোর পরে ফের তাঁর করোনা পরীক্ষা হয়। ১ জুলাই নেগেটিভ রিপোর্ট আসে। এখন সম্পূর্ণ সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন রূপালি।

১৩ জুলাই ফের বসিরহাট হাসপাতালে কাজে যোগ দিতে চলেছেন বলে জানালেন। রূপালি বলেন, “করোনা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়া ঠিক নয়। আমাদের সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে এবং সরকারি সমস্ত পরামর্শ মেনে চলতে হবে। আর করোনা আক্রান্ত হলে মনের জোর রাখতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, ‘‘আমাদের লড়াই করোনার বিরুদ্ধে, করোনা রোগীর বিরুদ্ধে নয়। নার্স হিসেবে যে কোনও রোগীর সেবার দায়িত্ব সম্পূর্ণ ভাবে পালন করতে আমি প্রস্তুত।’’

অসীমের কথায়, ‘‘স্ত্রী আক্রান্ত হওয়ার পরে কোনও রকম সামাজিক সমস্যার মধ্যে পড়িনি। প্রতিবেশীরা সকলেই খুব সাহায্য করেছেন। ফোন করে বারবার খোঁজ-খবর নিয়েছেন। গত ২২ দিন আমরা কেউ বাড়ির বাইরে যাইনি। প্রতিবেশীরাই সব রকম সাহায্য করেছেন আমাদের।”

পরিবারের অন্যদেরও করোনা পরীক্ষা করানো হয়েছে এবং সকলেরই রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে বলে জানিয়েছে বসু পরিবার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Basirhat Hospital Covid 19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE