ভাটপাড়া-সহ ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রের নানা এলাকায় শান্তি ফেরানো ও সম্প্রীতি বজায় রাখার দাবিতে শুক্রবার ফের একসঙ্গে পথে নামলেন সূর্যকান্ত মিশ্র, বিমান বসু, সোমেন মিত্রেরা। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়
লোকসভা ভোটের আগে জোটের প্রশ্নে সহমত হননি তাঁরা। তবে ভোটের পর থেকে পাশাপাশিই হাঁটছেন বাম এবং কংগ্রেস নেতারা। শান্তি ফেরানোর দাবিতে এর আগে যৌথ মিছিল হয়েছিল ভাটপাড়ায়। সেই দাবিকে সামনে রেখেই শুক্রবার ব্যারাকপুরে মিছিল করলেন সূর্যকান্ত মিশ্র, বিমান বসু, সোমেন মিত্র, মহম্মদ সেলিমেরা।
ভাটাপাড়া ও কাঁকিনাড়া এলাকায় ভোটের সময় থেকে লাগাতার হিংসা-হানাহানি চলছে। শান্তি ফেরাতে ২৫ জুন সিপিএম-সহ সব বামপন্থী দল ও কংগ্রেস কাঁকিনাড়ায় শান্তি মিছিল করতে চেয়েছিল। সে দিন পুলিশ বাধা দিলে ভাঙা হয়েছিল ব্যারিকেড। ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা সূর্যবাবু, সোমেনবাবুদের কাছে ৭ দিন সময় চেয়েছিলেন। মাঝে শান্ত হলেও কাঁকিনাড়া ফের অশান্ত। ব্যারাকপুরে এ দিন মিছিল করে তাই পুলিশ কমিশনারকে ফের দাবিপত্র দিলেন কংগ্রেস ও বাম নেতারা। তবে এ দিনের কর্মসূচিতে ছিল না কোনও দলের ঝান্ডা।
ব্যারাকপুর স্টেশন থেকে মিছিল শুরু হয়েছিল এ দিন। চিড়িয়া মোড়ের পাইপ রোডে মঞ্চ বাঁধা হয়েছিল। সিপিএম নেত্রী গার্গী চট্টোপাধ্যায় মিছিলে যোগ দেওয়া কর্মী-সমর্থকদের রাস্তার উপরে বসে পড়তে বলেন। তার ফলে বিকালে ঘণ্টাদুয়েক তিনমুখি রাস্তা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। আটকে পড়ে প্রচুর স্কুল বাস। তবে নেতারা স্কুল বাস ছেড়ে দিতে বলেন। কংগ্রেসের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা (শহরাঞ্চল) সভাপতি তাপস মজুমদার বলেন, মানুষের ভিড়ে রাস্তা আটকে গিয়েছিল। তাঁরা রাস্তা রোখেননি। মিছিলে ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেসের অমিতাভ চক্রবর্তী, শুভঙ্কর সরকার, মায়া ঘোষ, কৃষ্ণা দেবনাথেরাও।
ভাটপাড়ার অশান্তি প্রসঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেনবাবু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দায়ী করেন। তিনি বলেন, “আড়াই মাস হয়ে গেল একটা এলাকায় হিংসা বেড়েই চলেছে। বিভাজনের রাজনীতি হচ্ছে। অথচ মুখ্যমন্ত্রী নাকি কিছুই বুঝতে পারছেন না। আর তার পুলিশ অশান্তিও থামাতে পারছে না।” তাঁর দাবি, “হয় পুলিশ গোলমাল বন্ধ করুক। তা না হলে আমরা গণআন্দোলনের মাধ্যমে পুলিশকে শান্তি ফেরাতে বাধ্য করব।” বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমানবাবুও বলেন, “তৃণমূলের হুকুম তামিল করতে করতে পুলিশ কাজ করতে ভুলে গিয়েছে বলে অশান্তি হচ্ছে। পুলিশকে কাজ করতে দিতে হবে। পুলিশ যদি শান্তি ফেরাতে না পারে, তা হলে আরও বড় আন্দোলন হবে।”
চিড়িয়া মোড়ের সভায় বিমানবাবু বলেছেন, ‘‘রাজ্যে শান্তি ও আইনের শাসন ফেরাতে তৃণমূল এবং বিজেপিকে বাদ দিয়ে সকলকে সঙ্গে নিয়ে চলতে আমরা রাজি।’’ প্রশ্নের উত্তরে সোমেনবাবুর মন্তব্য, ‘‘আগামী দিনেও একসঙ্গে চলা হবে। একসঙ্গে চলা এই তো শুরু হল।” এর পরে ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে কংগ্রেস-বাম জোট প্রসঙ্গেও প্রদেশ সভাপতির জবাব, “তা তো হবেই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy