মেলার মঞ্চে তন্বী। নিজস্ব চিত্র
কালীপুজোকে কেন্দ্র করে চলছে মেলা। হঠাৎই সেখানে একটা ঘোষণা শোনা গেল— একটি শিশু ক্যানসারে আক্রান্ত। আপানারা যে যা পারেন অর্থ দিয়ে ওকে আশীর্বাদ করুন।
এমন একটি ঘোষণার পর স্বভাবতই প্রচুর মানুষ সেই শিশুটির চিকিৎসার খরচে সাহায্য করতে এগিয়ে এলেন। দ্রুত উঠে গেল বেশ কয়েক হাজার টাকা।
ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার বনগাঁর সাতভাই কালীতলা মন্দিরকে ঘিরে চলতে থাকা মেলা-চত্বরে। ক্যানসারে আক্রান্ত পাঁচ বছরের তন্বীর আরোগ্য কামনায় তার পরিবারের সদস্যেরা সেদিন ওই মন্দিরে পুজো দিতে গিয়েছিলেন। পুরো পৌষ মাস ধরে এখানে মেলা চলে। দূর দূরান্ত থেকে বহু মানুষ পুজো দিতে এবং মেলা ঘুরতে আসেন। ওই দিন এলাকার প্রাক্তন বিধায়ক গোপাল শেঠও পুজো দিতে গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে তন্বীর পরিবারের সঙ্গে তাঁর দেখা হয়ে যায়। শিশুটির অসুস্থতার কথা আগে থেকেই জানতেন তিনি। তখনই ২৫ হাজার টাকা শিশুটির পরিবারকে দেন তিনি। আরও এক লক্ষ টাকা তুলে দেবেন বলে আশ্বাস দেন।
কিন্তু এখানেই থেমে না থেমে মেলা কমিটির মঞ্চে উঠে গোপালবাবু মাইক হাতে সাহায্যের জন্য ঘোষণা করতে থাকেন। ওই ঘোষণা শুনে মেলায় আসা লোকজন যে যা পেরেছেন টাকা দিয়েছেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই ২৭ হাজার টাকা উঠে যায়। দু’একটি সংগঠনের তরফেও সাহায্য করা হয়। আরও কয়েকজন ভবিষ্যতে অর্থ সাহায্য করার আশ্বাস দেন। ছোট ছেলেমেয়েরাও সাধ্যমতো সাহায্য করে।
ওই অর্থ ও মানুষের সাহায্য পেয়ে ভরসা পাচ্ছে তন্বীর পরিবার। বনগাঁ শহরের প্রতাপগড় এলাকার বাসিন্দা প্রদীপ হালদারের দুই মেয়ের মধ্যে ছোট তন্বী। অক্টোবর মাসে তার ক্যানসারের কথা জানতে পেরে ভেঙে পড়েছিল গোটা পরিবার। পেশায় ওষুধের দোকানি প্রদীপের পক্ষে মেয়ের চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করা প্রায় অসম্ভব।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মাঝে মধ্যেই মাথায় যন্ত্রণা হত তন্বীর। তার মামা দেবর্ষি সরকার জানান, তাঁরা প্রথমে ভেবেছিলেন, ওর হয়তো নার্ভের অসুখ হয়েছে। বনগাঁয় চিকিৎসক দেখিয়েও ওকে সুস্থ করে তোলার চেষ্টা হয়। পরে তাঁরা কলকাতায় নিউরো মেডিসিনের চিকিৎসকের পরামর্শ নেন। নানান পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানা যায়, তন্বীর মাথায় টিউমার রয়েছে। তা থেকে ক্যানসার বাসা বেঁধেছে।
তন্বীকে বেঙ্গালুরুতে নিয়ে গিয়ে অস্ত্রোপচার করানো হয়েছে। দেবর্ষি বলেন, ‘‘কলকাতায় কয়েক দিনের মধ্যে ফের বায়োপসি হবে ওর। তারপর শুরু হবে কেমোথেরাপি। এত অর্থ আমাদের পক্ষে খরচ করা সম্ভব নয়। জমানো টাকা যা ছিল, সব শেষ।’’ পরিবারের তরফে স্কুল, কলেজ, ক্লাব ও পরিচিত মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে অর্থসাহায্যের জন্য। সাহায্য এবং সাহায্যের আশ্বাস দুইই মিলছে।
যোগাযোগ নম্বর: ৭৮৭২০৭৯৪৮১
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy