জ্বরের আতঙ্ক গত বছরের ডেঙ্গির স্মৃতি ফিরিয়ে এনেছে ভাটপাড়ায়। ইতিমধ্যে জ্বরে দুই যুবকের মৃত্যু হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। মৃতদের মধ্যে একজন আয়ুর্বেদিক ডাক্তারি পড়ুয়া।
স্বাস্থ্য দফতর, মহকুমা প্রশাসন বা ভাটপাড়া পুরসভা— কেউই অবশ্য ডেঙ্গির কথা স্বীকার করেনি। মৃত্যুর শংসাপত্রেও ডেঙ্গি বা জ্বরের উল্লেখ নেই। তবে পরিবারের লোকেরা জানিয়েছেন, জ্বরে ভুগেই মৃত্যু হয়েছে তাঁদের। পুরসভা জানিয়েছে, মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে পুরসভা দীর্ঘ দিন ধরেই কাজ করে চলেছে। তবে পুর এলাকায় যে জ্বরের প্রকোপ শুরু হয়েছে, তা জানিয়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ। তাঁদের বক্তব্য, বহু প্রচারের পরেও সচেতনতা ফেরেনি সাধারণ মানুষের।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতদের নাম শুভম প্রসাদ (২৩) এবং আদেশ সাউ (২২)। শুভম উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা। তিনি স্থানীয় পানপুরের একটি বেসরকারি আয়ূর্বেদিক মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়া ছিলেন। কাঁকিনাড়ার কাঁটাডাঙায় ভাড়াবাড়িতে থাকতেন। দিন পাঁচেক আগে জ্বর আসে তাঁর। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথমে বাড়িতে নিজেই চিকিৎসা শুরু করেন। দিন দু’য়েক আগে অবস্থার অবনতি হওয়ায় এক চিকিৎসককে ডাকা হয়। সে দিনই বাড়িতে মৃত্যু হয় ওই যুবকের। মৃত্যুর শংসাপত্রে লেখা হয়েছে, ‘কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’ বা হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে মৃত্যু হয়েছে শুভমের। সেই কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট ডেঙ্গির জন্যই ঘটেছে কিনা, তা অবশ্য জানা যায়নি।
আদেশও কাঁকিনাড়ারই বাসিন্দা। একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতেন। দিন চারেক আগে জ্বরে পড়েন। পরিবারের লোকেরা জানিয়েছেন, জ্বর না কমায় তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। রবিবার তাঁকে ব্যারাকপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সোমবার রাতে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুর কারণ লেখা হয়েছে, ‘মাল্টিঅর্গান ফেলিওর।’
ভাটপাড়ার পুরপ্রধান তথা বিধায়ক অর্জুন সিংহ বলেন, ‘‘দু’জনের কারওর মৃত্যুর কারণ ডেঙ্গি নয়। তবে এলাকায় জ্বর ছড়াচ্ছে। আমাদের হিসেবে ১৩ জন আক্রান্ত বলে জেনেছি। আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তবে মানুষ পুরোপুরি সচেতন না হলে পুরসভার একার পক্ষে লড়াই সম্ভব নয়।’’
ব্যারাকপুরের অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অপূর্ব রায় বলেন, ‘‘ডেঙ্গি বা অজানা জ্বরের কোনও খবর আমাদের কাছে নেই। খোঁজ নিয়ে দেখব।’’
গত বছর যখন উত্তর ২৪ পরগনমার বিস্তীর্ণ এলাকায় জ্বর ছড়াল, তখন অনেকের মৃত্যুর কারণ হিসাবে শসাপত্রে ‘হৃদযন্ত্র বিকল’ বা ‘সেপটিসেমিয়া’র মতো কারণ লেখা ছিল। সে বার নানা মহলে অভিযোগ ওঠে, সরকার ডেঙ্গির তথ্য চাপতে চাইছে। রাজ্যের বিরোধী দলগুলিও তা নিয়ে সরব হয়। এ বার ভাটপাড়ার ঘটনা ডেঙ্গি হোক বা না হোক, পুরসভা ও স্বাস্থ্য দফতরের আরও সচেতন হওয়া উচিত বলে মনে করছেন এলাকার মানুষজন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy