আবদ্ধ: এ ভাবেই জমে রয়েছে জল। নিজস্ব চিত্র
ডেঙ্গির আতঙ্কে কাঁপছে শহর থেকে জেলা। জ্বরে মৃত্যুমিছিলের যেন শেষ নেই উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গায়। একে একে শামিল হচ্ছে পার্শ্ববর্তী এলাকাও। প্রতিদিন একাধিক মৃত্যুর খবরে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। অবশেষে নড়েচড়ে বসেছে শহরে ডেঙ্গির প্রকোপ না-মানা কলকাতা পুরসভাও। অথচ দীর্ঘ দিন ধরে এলাকায় জমে থাকা জল নিয়ে গা-ছাড়া ভাব মধ্যমগ্রাম পুরসভার। পুর কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা।
কোথাও কোমর, কোথাও হাঁটু। কোথাও বা গোড়ালি সমান জলে ডুবে আছে মধ্যমগ্রামের বেশ কিছু এলাকা। বাসিন্দাদের মতে, মাস দুয়েকের বেশি হয়ে গেল জল নামার নাম নেই। দু’নম্বর ওয়ার্ডের শৈলেশনগর, তিন ও সাত নম্বর ওয়ার্ডের পাটুলি শিবতলা, আট নম্বর ওয়ার্ডের শ্রীনগর তিন নম্বর দক্ষিণ, নয় নম্বর ওয়ার্ডের মিলনপল্লি এবং ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের ক্ষুদিরামপল্লির এলাকায় অবস্থা বেহাল। বাড়ি থেকে বেরিয়ে জল এড়াতে বেশির ভাগ বাসিন্দাকে বাঁশের সাঁকো পেরোতে হয়। প্রতি বছরের এটাই চেনা ছবি।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুর কর্তৃপক্ষের কাছেও এটাই যেন স্বাভাবিক। তাই ডেঙ্গির ভরা মরশুমেও পুরসভার হেলদোল নেই। মলিনা দাস নামে এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘এই এলাকাগুলির জমি নিচু। তাই বর্ষা-শুরুর বৃষ্টিতেই জল জমতে থাকে। একটানা বৃষ্টি হলে তো আর কথাই নেই। কড়া রোদ পেলেও জমা জল শুকোতে কম করে মাস দুয়েকের ধাক্কা।’’ আর এক বাসিন্দা সনাতন শী জানান, প্রতি বছরই পুরসভা আশ্বাস দেয়। কিন্তু পরিস্থিতির একতিলও উন্নতি হয়নি। আকাশে মেঘ দেখলে মনেও আশঙ্কার মেঘ জমতে থাকে বাসিন্দাদের।
মধ্যমগ্রাম পুরসভার চেয়ারম্যান রথীন ঘোষ জানান, সুতি ও বিদ্যাধরী খালের বিচ্ছেদ নিচু ওই জায়গায় জল জমার সমস্যা বাড়িয়েছে। সুতি খাল চলতে চলতে মাঝমাঠে হারিয়ে গিয়েছে। ফলে নিকাশির জল সুতি হয়ে বাণীকণ্ঠ খালে পড়ার রাস্তাও বন্ধ। দু’টি খালের মধ্যে সংযোগ করতে ৩.৮ কিলোমিটার পথই বাধা। রোহান্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের ওই অংশ নিয়েই এত দিন জটিলতা ছিল। সেখানকার চাষিরা কোনও ভাবেই জমি ছাড়তে চাইছিলেন না। তাঁর আশ্বাস, ‘‘এ বার জমি দিতে রাজি হয়েছেন তাঁরা। দ্রুত কাজ শুরু হবে।’’
কিন্তু সে তো পরের কথা। এই মুহূর্তে চারদিকে ডেঙ্গি আর অজানা জ্বর বাড়ছে। সেখানে জমা জল নামাতে পুরসভার ভূমিকা কী? রথীনবাবুর দাবি, ‘‘মশার লার্ভা যাতে জন্মাতে না পারে, তাই কোনও ভাবেই জল জমতে দেওয়া যাবে না। কাউন্সিলরদের বারবার এলাকা পরিদর্শন করে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। কিন্তু এই এলাকাগুলিতে জল জমা নিয়ে আমাকে কেউ রিপোর্ট দেননি।’’ তবে কি কাউন্সিলররা ঠিক মতো কাজ করছেন না? সরাসরি এর উত্তর না দিয়ে তিনি জানান, জল জমা নিয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। জমা জল দ্রুত পাম্প করে যশোর রোড ও বাণীকণ্ঠের দিকে ফেলার ব্যবস্থা করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy