Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

ডেঙ্গি-আতঙ্ক ছড়াচ্ছে হালিশহরে

ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের ভাটপাড়া এবং গারুলিয়ায় জ্বরে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। তাদের মধ্যে এক জনের মৃত্যু ডেঙ্গিতে হয়েছে বলে সরকারিভাবে স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে। তার ফলেই আতঙ্ক আরও জাঁকিয়ে বসেছে হালিশহরের বেশ কিছু এলাকায়। পুরসভা অবশ্য জানিয়েছে, ডেঙ্গি ঠেকাতে তারা সাধ্যমতো লড়ে যাচ্ছে।

—প্রতীকী চিত্র

—প্রতীকী চিত্র

সুপ্রকাশ মণ্ডল 
শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:১৭
Share: Save:

ভাটপাড়া, গারুলিয়ার পরে এ বার হালিশহর।

এই পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে জ্বরের প্রকোপ দিন দিন বাড়ছে। ইতিমধ্যে কয়েক জনের ডেঙ্গি ধরাও পড়েছে। বাড়িতে বাড়িতে জ্বর প্রকোপ শুরু হওয়ায় এলাকায় ছড়িয়ে রড়েছে আতঙ্ক।

ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের ভাটপাড়া এবং গারুলিয়ায় জ্বরে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। তাদের মধ্যে এক জনের মৃত্যু ডেঙ্গিতে হয়েছে বলে সরকারিভাবে স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে। তার ফলেই আতঙ্ক আরও জাঁকিয়ে বসেছে হালিশহরের বেশ কিছু এলাকায়। পুরসভা অবশ্য জানিয়েছে, ডেঙ্গি ঠেকাতে তারা সাধ্যমতো লড়ে যাচ্ছে।

এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গত দু’-তিন সপ্তাহ ধরে হালিশহরের সরকার-বাজার, নবনগর, প্রসাদনগর এলাকায় কয়েক জনের জ্বর শুরু হয়। গত দু’ সপ্তাহে তা রীতিমতো ছড়িয়ে পড়েছে। শহরের ৮, ৯, ১৭ নম্বর ওয়ার্ড এবং লাগোয়া এলাকায় এই মুহূর্তে শতাধিক ব্যক্তি জ্বরে আক্রান্ত। তাঁদের মধ্যে ছ’জনের রক্তে ডেঙ্গি ধরা পড়েছে বলে জানা গিয়েছে।

৯ নম্বর ওয়ার্ডের মিঠুন পাইন নামের এক ব্যক্তির দিন তিনেক আগে ডেঙ্গি ধরা পড়ে। পুরসভাকে তা জানানোও হয়। তার পরেই হালিশহরের পুরপ্রধান এবং অন্যান্য কাউন্সিলরেরা তাঁর বাড়িতে যান। বাড়ি বা আশপাশে যাতে জল না জমতে দেওয়া হয়—তা নিয়ে ওই এলাকায় পুরসভার পক্ষ থেকে গত কয়েকদিন ধরে প্রচার চালানো হয়েছে। অন্য ওয়ার্ডেও প্রচার চলছে।

হালিশহরের বিস্তীর্ণ এলাকায় নিকাশি ব্যবস্থা ঢেলে সাজার কাজ চলছে। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, এর ফলে বেশিরভাগ রাস্তাতে জল জমে রয়েছে। বৃষ্টি হলে এমনিতেই এলাকা জলে ডুবে যায়। তার উপরে নিকাশি নালা তৈরির জন্য প্রতিদিন রাস্তা এবং সংলগ্ন এলাকায় জল জমছে। এই সব জায়গাই এখন মশার আঁতুড়ঘর। তা থেকেই ছড়াচ্ছে জ্বর। গত মাসে ভাটপাড়ায় দু’দিনের জ্বরে দুই যুবকের মৃত্যু হয়। তার মধ্যে এক জন আয়ুর্বেদিক ডাক্তারির ছাত্র। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ভিন রাজ্যের ওই ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে বলে স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছিল। অন্য যুবকের মৃত্যুর কারণ লেখা হয়েছিল ‘মাল্টিঅর্গান ফেলিওর’। তবে দু’জনের পরিবারেরই অভিযোগ, জ্বর ভুগেই মৃত্যু হয়েছে তাঁদের। ভাটপাড়াতে জ্বরের প্রকোপ গত এক মাসে আরও বেড়েছে। একই অবস্থা হালিশহরেও। সেখানে তিন মহিলার মৃত্যু হয়েছে। সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ সূত্রের খবর, ডেঙ্গিতেই মৃত্যু হয়েছে শিবানী ঘটক নামে এক মহিলার। গত সপ্তাহে কৃষ্ণা মুখোপাধ্যায় নামে এক মহিলার মৃত্যু হয় জ্বরে ভুগে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ভাটপাড়া, নৈহাটি, হালিশহর, কাঁচরাপাড়ার জ্বরে আক্রান্ত অনেকে কল্যাণী জেএএম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তাঁদের অনেকের রক্তেই ডেঙ্গি মিলেছে। আক্রান্তদের অনেকে ব্যারাকপুর বিএন বসু হাসপাতালেও ভর্তি রয়েছেন।

হালিশহরের পুরপ্রধান অংশুমান রায় বলেন, ‘‘নিকাশির কাজের জন্য জল জমছে এটা ঠিকই। তবে, সেই জমা জলে যাতে মশা ডিম পাড়তে না পারে, সে জন্য সেখানে মশা মারার তেল, ব্লিচিং পাউডার ছড়ানো হচ্ছে। একই সঙ্গে সাধারণ মানুষেরও সচেতন হওয়ার প্রয়োজন। তা না হলে ডেঙ্গির বিরুদ্ধে লড়া যাবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mosquito Dengue Panic
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE