সাহায্য: চেক তুলে দিচ্ছেন কানাইলাল রায়। নিজস্ব চিত্র
প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতা করার সময়ে দেখেছেন, বহু ছেলেমেয়ের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায় স্রেফ টাকার অভাবে। নিজেরও তেমন আর্থিক সঙ্গতি না থাকায় ইচ্ছে থাকলেও ওই ছেলেমেয়েদের পাশে থাকতে পারেননি। কিন্তু তখন থেকে মনে কানাইলাল রায়ের মনে স্বপ্নটা ছিল, আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া ছেলেমেয়েদের পাশে থেকে তাদের পড়াশোনায় সাহায্য করবেন।
এর আগে কানাইলালবাবু স্থানীয় চৌবেড়িয়া অন্নদাসুন্দরী মিত্র উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে ৩ লক্ষ টাকা দান করেছেন। গোপালনগর থানার চৌবেড়িয়া এলাকার বাসিন্দা চুরাশি বছরের মাস্টারমশাই এ বার নিজের সঞ্চিত অর্থ থেকে চৌবেড়িয়া দীনবন্ধু মিত্র উচ্চ বিদ্যালয়কে ২ লক্ষ টাকা দান করলেন মঙ্গলবার।
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই টাকা ব্যাঙ্কে রাখা হবে। তা থেকে যা সুদ মিলবে, তা দিয়ে পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির প্রথম তিনজন পড়ুয়াকে স্কলারশিপ দেওয়া হবে। এর ফলে গরিব পড়ুয়ারা যেমন উপকৃত হবে, ভাল ফল করার মানসিকতাও তৈরি হবে বলে মনে করছেন স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তীর্থজিৎ মুখোপাধ্যায়।
তবে এতেও মানসিক শান্তি নেই বৃদ্ধ মানুষটির। বললেন, ‘‘২ লক্ষ টাকার কত আর সুদ হবে। ওই টাকায় কত জনকে আর সাহায্য করা সম্ভব। কিন্তু আমার তো আর সামর্থ্য নেই। বয়সও হচ্ছে।’’
কানাইলালবাবু ছিলেন স্থানীয় গোপীনাথপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের বেতন ১৯৫৪ সালে ছিল মাত্র ৫৫ টাকা। সে সময়ে চোখের সামনে দেখেছি, ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া ছেড়ে দিচ্ছে অভাবের জন্য। অত অল্প বেতন পেতাম তখন। অনেককে ইচ্ছে থাকলেও সাহায্য করতে পারিনি। ভাবতাম কোনও একটা সময় আসবে, যখন আমাদের গরিব এলাকায় শিক্ষা প্রসারের জন্য কিছু একটা করতে পারব।’’
কানাইলালবাবুর চার ছেলেমেয়ে। মেয়েদের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। বড় ছেলে চিকিৎসক। কানাইলালবাবুর কথায়, ‘‘একমাত্র শিক্ষাই পারে সুখ-শান্তি দিতে। এটাই পড়ুয়াদের বুঝতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy