অভিযুক্ত বধূ। নিজস্ব চিত্র
সকাল ছ’টা। হঠাৎ থানায় এক মহিলা ঢুকে কেঁদে গড়িয়ে পড়লেন বড়বাবুর পায়ের কাছে। বললেন, ‘‘আমাকে গ্রেফতার করুন। আমি শ্বশুরমশাইকে কুড়ুল দিয়ে কুপিয়ে খুন করে এসেছি।’’
মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে স্বরূপনগরের সগুনা পঞ্চায়েতের দক্ষিণ কাচদহ গ্রামে। পুলিশ জানিয়েছে, নিহতের নাম দিলদার মণ্ডল (৬০)। এ দিন বিকেলে তাঁর পুত্রবধূ জেসমিনা বিবিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
কেন এই খুন?
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর এগারো আগে পাশের রসুই গ্রামের বাসিন্দা জেসমিনার সঙ্গে বিয়ে হয় কাচদহের জুলফিকরের। তাঁদের তিন সন্তান। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই শ্বশুর ও শাশুড়ি জেসমিনার উপর মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার চালাত। এ নিয়ে এলাকায় দু-একবার সালিশিও হয়। ঘটনার আগের দিনও জেসমিনাকে মারধর করে তার শ্বশুর বলে অভিযোগ। পুলিশকে জেসমিনা জানিয়েছে, অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে শ্বশুরকে খুন করার পরিকল্পনা করে সে। ভোর রাতে সবাই ঘুমানোর সময়েই সে দিলদারকে খুন করে।
এ দিকে জেসমিনার স্বামী জুলফিকর পুলিশে লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন যে, তাঁর বাবাকে জেসমিনা নয়, জেসমিনার দাদা টুকুল মণ্ডল খুন করেছে। জেসমিনাও সে সময় দাদার সঙ্গে ছিল। জুলফিকর জানান, রাতে তিন ছেলেমেয়েকে নিয়ে স্ত্রী ও তিনি ঘুমিয়েছিলেন। হঠাৎ ভোর রাতে চিৎকার শুনে ঘুম ভাঙে তাঁর। উঠে দেখেন যে, তাঁর বাবাকে পিছন থেকে ধরে রয়েছে জেসমিনা। আর জেসমিনার দাদা কোদাল দিয়ে কোপাচ্ছে। তিনি চিৎকার করলে জেসমিনার দাদা ঘটনাস্থল থেকে পালায়। জুলফিকর বলেন, ‘‘জেসমিনার দাদা আমার বাবার কাছ থেকে এক লক্ষ টাকা নিয়েছিল। সেই টাকা চাওয়ার জন্যই বাবাকে খুন করল সে।’’
গ্রামবাসীরা জানান, এলাকায় ভাল মানুষ হিসেবেই পরিচিত ছিল দিলদার। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায় রক্তাক্ত অবস্থায় দিলদার পড়ে রয়েছেন মাটিতে। দেহটি ময়না-তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy