Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

এ বার আগুন বনস্পতি তৈরির কারখানায়

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কদম্বগাছির ধর্মতলার ওই কারখানাটি দীর্ঘদিন ধরেই চলছে। সেখানে মূলত তুসের তেল এবং বনস্পতি তৈরি হয়। শ’খানেক কর্মী সেখানে কাজ করেন। প্রতিদিনের মতো এ দিনও ভোর থেকেই কারখানা চালু হয়ে যায়।

জ্বলন্ত: কারখানার আগুন নেভানোর চেষ্টা দমকলকর্মীদের। রবিবার, কদম্বগাছিতে। নিজস্ব চিত্র

জ্বলন্ত: কারখানার আগুন নেভানোর চেষ্টা দমকলকর্মীদের। রবিবার, কদম্বগাছিতে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:৩৪
Share: Save:

নিউ ব্যারাকপুরের চেয়ার তৈরির কারখানায় বিধ্বংসী আগুনে পাঁচ কর্মীর মৃত্যু হয়েছিল। সেই ঘটনার এক সপ্তাহের মধ্যে ফের আগুন লাগল আর একটি কারখানায়। রবিবার সকালে বারাসত লাগোয়া দত্তপুকুরের কদম্বগাছিতে বনস্পতি তৈরির কারখানায় আগুন লেগে আতঙ্ক ছড়াল এলাকায়। সে সময়ে ওই কারখানায় প্রচুর কর্মী কাজ করছিলেন। তাঁরা কোনও রকমে বাইরে বেরিয়ে আসেন। দমকলের ১১টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘণ্টা চারেকের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এ দিন ওই কারখানায় আগুন লাগার জেরে প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে বারাসত-টাকি রোডে যান চলাচলও বন্ধ হয়ে যায়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কদম্বগাছির ধর্মতলার ওই কারখানাটি দীর্ঘদিন ধরেই চলছে। সেখানে মূলত তুসের তেল এবং বনস্পতি তৈরি হয়। শ’খানেক কর্মী সেখানে কাজ করেন। প্রতিদিনের মতো এ দিনও ভোর থেকেই কারখানা চালু হয়ে যায়। স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন সকাল ৭টা নাগাদ কারখানার এক প্রান্তের একটি ঘরে আগুন লাগে। কারখানার ভিতরে প্রচুর দাহ্য পদার্থ ছিল। ফলে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে থাকে। সে সময়ে কারখানায় কর্মরত কর্মীরা আতঙ্কে ছোটাছুটি শুরু করেন। জনাকয়েক কর্মী প্রথমে নেভানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু সেখানে কোনও অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল না। ফলে জল দিয়ে তাঁরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করলেও তা বিশেষ সফল হয়নি।

আধঘণ্টার মধ্যে আগুন পুরো কারখানায় ছড়িয়ে পড়ে।

খবর পেয়ে প্রথমে দমকলের দু’টি ইঞ্জিন এসে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। কিন্তু দ্রুত আগুন কারখানায় ছড়িয়ে পড়তে থাকে। পরিস্থিতি সামলাতে পরে দমকলের আরও ন’টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে আনা হয়। ওই কারখানাটি বারাসত-টাকি রোডের ধারে হওয়ায় ক্রমশ আতঙ্ক ছড়াতে শুরু করে। ওই রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। কারখানাটির পাশেই বিদ্যুতের পাওয়ার গ্রিড ক্যাম্পাস। আগুন ছড়ানোর আশঙ্কায় আশপাশের বাড়ির বাসিন্দারাও আতঙ্কে ছোটাছুটি শুরু করেন। তবে, দমকলের তৎপরতায় অন্য কোনও বাড়িতে আগুন ছড়ায়নি।

দীর্ঘদিন ধরে চলা কদম্বগাছির ওই কারখানাটি আদৌ বৈধ কি না, তা জানা নেই স্থানীয় পঞ্চায়েতের। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য মৃত্যুঞ্জয় দাস জানাচ্ছেন, কারখানাটি থেকে দূষণ ছড়াত বলে এলাকাবাসীরা আগেও পঞ্চায়েতে অভিযোগ করেছিলেন। কারখানাটির প্রয়োজনীয় নথিপত্র খতিয়ে দেখা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

দমকলের প্রাথমিক অনুমান, শর্ট সার্কিট থেকে এ দিন আগুন লেগে থাকতে পারে। এ ছাড়া জমে যাওয়া বনস্পতি তেল গলাতে অনেক সময়ে তাতে আগুন দেওয়া হয়। সেখান থেকেও আগুন ছড়াতে পারে বলে অনুমান। তবে দমকল সূত্রে জানা গিয়েছে, কারখানাটির ভিতরে প্রচুর দাহ্য বস্তু মজুত থাকলেও সেখানে আগুন নেভানোর কোনও ব্যবস্থা ছিল না। মফস‌্সলের এই ধরনের কারখানাগুলিতে যে আদৌ কোনও নজরদারি নেই, এই ঘটনার পরে তা ফের প্রমাণিত হল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Fire Vanaspati Factory
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE