গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়া ট্রলারগুলিতে দেওয়া হয়েছিল বিপদ সঙ্কেত যন্ত্র। কিন্তু এই যন্ত্র ঠিকমতো ব্যবহার করতে পারছে না মৎস্যজীবীরা বলে জানিয়েছে মৎস্য দফতর। তা নিয়ে এখন চিন্তায় তাঁরা।
মৎস্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়া ট্রলারগুলিতে এই যন্ত্র দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তা অনেক সময়ই ব্যবহার করা হচ্ছে না বলে জানা গিয়েছে। অনেকে সমুদ্রে নিয়ে গিয়েও নাড়াচাড়া করতে গিয়ে ভুলবশত যন্ত্রের বোতাম টিপে ফেলছে। তাতে সমস্যায় পড়ছে মৎস্য দফতর।
স্যাটেলাইট যোগাযোগের মাধ্যমে বিপদের খবর উপকূলরক্ষী বাহিনীর কাছে পৌঁছতে ২০১৫ সাল থেকে এই যন্ত্র বিলি করে মৎস্য দফতর। কিন্তু তা নিয়ে দফতরের আধিকারিকদের অভিজ্ঞতা খুবই খারাপ। তাঁদের দাবি, ব্যবহারের বদলে অপব্যবহার বেশি করা হচ্ছে এই যন্ত্রের। মৎস্য দফতরের এক আধিকারিক জানান, মাঝ সমুদ্রে নৌকো ঝড়ে পড়লে, আগুন লাগলে অথবা কেউ নৌকো থেকে পড়ে গেলে বোতাম টিপতে হবে।
কিন্তু দেখা গিয়েছে, বাড়িতে থাকাকালীন বাচ্চারা খেলার সময় তাতে চাপ দিয়ে ফেলছে। অথবা নৌকো নোঙর থাকাকালীন কোনও মৎস্যজীবী সেটি ভুল করে চাপ দিয়ে ফেলেছে। বোতাম চাপার পর উপগ্রহের মাধ্যমে চেন্নাই হয়ে হলদিয়া উপকূলরক্ষী বাহিনীর কাছে খবর এলে তা আবার যাচাই করতে বলা হয় মৎস্যকর্তাদের। তখনই ঘটনাগুলি নজরে আসছে।
ইতিমধ্যেই বড় ইঞ্জিনের ট্রলারগুলিতে এই যন্ত্র প্রায় আড়াই হাজারের মতো বিলি করা হয়েছে। জেলায় আরও প্রায় আড়াই হাজার যন্ত্র প্রয়োজন। দফতরের কর্তারা জানিয়েছেন, তাঁরা যন্ত্র দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কী ভাবে তা চালাতে হবে তার একটি ডেমো ট্রলার মালিককে দিয়ে দেন। কিন্তু গভীর সমুদ্রে যাঁরা মাছ ধরতে যাবেন তাঁদের মধ্যে সচেতনতা প্রয়োজন।
মৎস্যজীবী সংগঠনের নেতা বিজন মাইতি, সতীনাথ পাত্ররা জানাচ্ছেন, সংগঠনের তরফেও বিপদ সঙ্কেত যন্ত্র নিয়ে প্রচার করা হয়েছে। তবে তার ফল মিলতে দেরি হবে। তাঁদের কথায়, ‘‘ওয়্যারলেস মেশিন খারাপ থাকলে দুর্ঘটনায় এই যন্ত্র বিশেষ ভাবে সাহায্য করে বলে সবাইকেই এ ব্যাপারে সচেতন করার কাজ চলে। নিয়ম করে তা এ বছরও করা হবে।’’
মৎস্যজীবীদের নিরাপত্তার জন্য এই যন্ত্র বিলি করার কাজ এখন সারা বছরই হচ্ছে। লাইফ জ্যাকেট এবং বিমা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে গভীর সমুদ্রে ট্রলার নিয়ে যাওয়ার আগে। তবে দ্রুততার সঙ্গে সব ট্রলারেই এই যন্ত্র বিলি করার দাবি জানিয়েছেন মৎস্যজীবীরা।
দু’মাস বন্ধ থাকার পর এ বছরই জুনের মাঝামাঝি থেকে শুরু হয়েছে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার মরসুম। যন্ত্রের অপব্যবহার নিয়ে তাই চিন্তায় রয়েছে মৎস্য প্রশাসন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy