Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

সুন্দরবনকে প্লাস্টিক ও থার্মোকলমুক্ত করতে এ বার উদ্যোগী বন দফতর

প্রতি বছর ১লা সেপ্টেম্বর থেকেই সুন্দরবনে পর্যটন মরসুম শুরু হয়। এ সময় থেকেই বাড়তে থাকে সুন্দরবনে দূষণের মাত্রা। তাই সেপ্টেম্বর মাসের পয়লা তারিখ থেকেই সুন্দরবনকে দূষণমুক্ত করার জন্য উদ্যোগী করেছে বন দফতর ও যৌথ বন  পরিচালন কমিটি। 

সুন্দরবন। ফাইল চিত্র

সুন্দরবন। ফাইল চিত্র

প্রসেনজিৎ সাহা ও সমীরণ দাস
শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:৫৪
Share: Save:

সুন্দরবনকে প্লাস্টিক ও থার্মোকলমুক্ত করতে নতুন করে উদ্যোগী হল বন দফতর। দক্ষিণ ২৪ পরগনা বিভাগীয় বন দফতর রবিবার ঝড়খালিতে একটি পথসভা করে। সেখানে বনকর্মীদের পাশাপাশি পুলিশ কর্মী, স্থানীয় স্কুলের পড়ুয়া, শিক্ষক শিক্ষিকা ও যৌথ বন সুরক্ষা কমিটির সদস্যেরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রতি বছর ১লা সেপ্টেম্বর থেকেই সুন্দরবনে পর্যটন মরসুম শুরু হয়। এ সময় থেকেই বাড়তে থাকে সুন্দরবনে দূষণের মাত্রা। তাই সেপ্টেম্বর মাসের পয়লা তারিখ থেকেই সুন্দরবনকে দূষণমুক্ত করার জন্য উদ্যোগী করেছে বন দফতর ও যৌথ বন পরিচালন কমিটি।

রবিবার বন দফতর প্রায় সত্তর জন স্কুল পড়ুয়াকে নিয়ে ঝড়খালি থেকে বনি ক্যাম্প পর্যন্ত একটি শিক্ষামূলক ভ্রমণের ব্যবস্থা করে। অন্য দিকে, কুলতলির কৈখালি থেকে সুন্দরবন ভ্রমণের সূচনা করা হয়। ছাত্রছাত্রীদের মাধ্যমেই ছড়িয়ে দেওয়া হয় পরিবেশ সচেতনতার বার্তা। থার্মোকল রুখতে এ দিন কৈখালিতে উপস্থিত লঞ্চকর্মীদের হাতে তুলে দেওয়া হয় স্টিলের থালা গ্লাস। কোনও ভাবেই যাতে প্লাস্টিক বা থার্মোকলের ব্যবহার না হয়, সে ব্যাপারে সতর্ক করা হয় লঞ্চকর্মী এবং স্থানীয় পর্যটন ব্যবসায়ীদের। ঝড়খালির সমস্ত লঞ্চ ও ভুটভুটির মাঝি ও কর্মী এবং এলাকার ভাত খাওয়ার হোটেলগুলিকে স্টিলের থালা ও গ্লাস তুলে দেওয়া হয়।

এই ভ্রমণপথে যাওয়া-আসার সময়ে পড়ুয়ারা যে সমস্ত পর্যটকদের দেখা পাবেন, তাঁদের প্লাস্টিক ও থার্মোকলের ব্যবহার বন্ধের জন্য সচেতন করবে। অন্য দিকে, প্লাস্টিকের ব্যবহারের ফলে কী ভাবে সুন্দরবন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সে সম্পর্কেও পড়ুয়াদের বার্তা দেওয়া হবে বলে জানায় বন দফতর।

প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ বন্ধের জন্য এলাকার দোকানগুলির হাতে কাপড় ও চটের পরিবেশবান্ধব ব্যাগ তুলে দেওয়া হয়। এ বিষয়ে যৌথ বন পরিচালন কমিটির অন্যতম সদস্য প্রণব মণ্ডল বলেন, “সুন্দরবনকে সম্পূর্ণরূপে প্লাস্টিক মুক্ত করার জন্য আমরা বন দফতরের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ শুরু করেছি। মানুষকে সচেতন করেই সুন্দরবনকে দূষণমুক্ত করতে হবে।’’

এই কর্মসূচিতে যোগ দেওয়া দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী উৎসা সরকার বলে, “সুন্দরবনকে বাঁচানোর জন্য আমরা এগিয়ে এসেছি। পড়াশোনার ফাঁকে ফাঁকে এ বিষয়ে এলাকার সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সুন্দরবনে বেড়াতে আসা পর্যটকদেরকেও সচেতন করব।’’ ২৪ পরগনা বন বিভাগের ডিএফও সন্তোশা জি আর বলেন, “আমরা অনেক দিন ধরেই বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে সুন্দরবনকে প্লাস্টিক ও থার্মোকলমুক্ত করার চেষ্টা করছি। এই কাজে নতুন করে স্কুল পড়ুয়া, যৌথ বন পরিচালন কমিটির সদস্যদেরাও যোগ দিয়েছে।’’

এই অনুষ্ঠানের পাশাপাশি এ দিন সুন্দরবনের পাখি নিয়ে লেখা ও সুন্দরবনের তথ্য সম্বলিত বই গাইডদের হাতে তুলে দেওয়া হয় বন দফতরের তরফ থেকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE