Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

আমবাগানে জুয়ার ঠেক, উদ্ধার হল যুবকের মৃতদেহ

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাবু ভ্যান চালাতেন। স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা। তিনি হুগলিতে বাপের বাড়িতে আছেন। রবিবার সকালে সেখানে যাবেন বলে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন বাবু। তারপর থেকেই নিখোঁজ।

শোকার্ত: মৃত বাবু গাজির মা। ছবি: নির্মল বসু

শোকার্ত: মৃত বাবু গাজির মা। ছবি: নির্মল বসু

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাদুড়িয়া শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০১:০৮
Share: Save:

নেশার ঠেক থেকে উদ্ধার হল এক যুবকের দেহ। বাদুড়িয়ার আটঘরা গ্রামের আমবাগানে পড়েছিল বাবু গাজি ওরফে কালু (২৫) নামে ওই যুবকের দেহ। স্থানীয় সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়না-তদন্তে পাঠায়।

বাবু থাকতেন চাঁদপুর গ্রামের পূর্বপাড়ায়। তাঁর মা মুমতাজ বেগমের দাবি, তাঁর ছেলেকে গাঁজা-জুয়ার ঠেকে নিয়ে গিয়ে খুন করেছে দুষ্কৃতীরা। বিষয়টি ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না এলে বোঝা যাবে না বলে জানায় পুলিশ। একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাবু ভ্যান চালাতেন। স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা। তিনি হুগলিতে বাপের বাড়িতে আছেন। রবিবার সকালে সেখানে যাবেন বলে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন বাবু। তারপর থেকেই নিখোঁজ।

পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক ভাবে ওই যুবকের দেহে কোনও চিহ্ন পাওয়া যায়নি। হাত দু’টি কালো হয়ে গিয়েছে। যদিও তাঁর বাবা মোক্তার আলি গাজির দাবি, ‘‘ছেলের গলা এবং কপাল ফুলে ছিল। কালসিটের দাগ আছে।’’

বাসিন্দাদের অভিযোগ, জুয়ার টাকা নিয়ে মাঝে মধ্যেই এলাকায় দুষ্কৃতীরা মারামারি করে। পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করে না। পুলিশ ও প্রভাবশালী কিছু মানুষের জন্যই দুষ্কৃতীরা এত বাড় বেড়েছে।

বাসিন্দারা জানান, বাদুড়িয়ার আটঘরা বাজারের পিছনে মেছোভেড়ি পার হয়ে বড় আমবাগান আছে। কলা, কুল, পেঁপে, বেগুন গাছের সারি রয়েছে ওই বাগানে। ওই এলাকায় দুষ্কৃতীদের আড্ডা বসে রোজ। স্থানীয় বাসিন্দারা আতঙ্কে থাকেন। কেউ ওই বাগানের দিকে যেতেও চান না। সেখানে দীর্ঘ দিন ধরে দুষ্কৃতীদের যাতায়াত। জুয়া, মদ-গাঁজার আসর বসে। এ জন্য দুষ্কৃতীরা মাথা-পিছু এলাকারই কিছু লোককে মাসে ৩০ টাকা করে ভাড়া দেয়। বিনিময়ে তারা বসার জায়গা পায়। মেলে এক কাপ করে চা। এমনকী, ধরা পড়লে থানা থেকে ওই সমস্ত লোকেরাই তাদের ছাড়িয়ে নিয়ে আসে বলে এলাকার কিছু মানুষ জানালেন। এক পুলিশকর্মীর কথায়, ‘‘এলাকায় প্রায় ধরপাকড় চলে। গ্রেফতারও করা হয়। কিন্তু প্রভাবশালী ব্যক্তিরা ফোন করলে তাদের ছেড়েও দেওয়া হয়।’’

এ দিন ঘটনাস্থলে দেখা গিয়েছে কাঠ-পাতা দিয়ে আগুন ধরানোর চিহ্ন। যত্রতত্র পড়ে আছে গাঁজার কলকে, সুতুলি, নেশার কাশির ওষুধের বোতল, ছেঁড়া তাস। তারই মাঝে পড়ে বাবুর পায়ের স্যান্ডেল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Baduria Youth Death Gambling
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE