Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

পেটের জ্বালায় এ কাজ করছি, বলল ডাকাত

তারপর চাবি নিয়ে যথেচ্ছ লুঠপাট করে পালাল দুষ্কৃতীরা। ঘটনাটি ঘটেছে  বৃহস্পতিবার মাঝরাতে বাগদা থানার চরমণ্ডল পশ্চিমপাড়ায় বিপুল হিরার বাড়িতে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
বাগদা শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:৩২
Share: Save:

ডাকাতেরা চাবি চাইল মহিলার কাছে। মহিলা দিতে রাজি হচ্ছেন না। ডাকাতরা বলল, ‘‘পেটের জ্বালায় এ কাজ করছি। চাবি না দিলে তোর ছেলে ও নাতিকে মেরে ফেলব।’’ অন্য এক দুষ্কৃতী বলে, ‘‘বুড়িটা বেশি কথা বলছে। ওকে এখনই মেরে দে।’’ এরপর সাহস করেননি মহিলা। তারপর চাবি নিয়ে যথেচ্ছ লুঠপাট করে পালাল দুষ্কৃতীরা। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার মাঝরাতে বাগদা থানার চরমণ্ডল পশ্চিমপাড়ায় বিপুল হিরার বাড়িতে।

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন রাত দেড়টা নাগাদ ঘুম ভেঙে বারান্দায় বেরিয়ে বিপুলবাবু দেখেন, বাইরের গ্রিলের দরজার তালাটা নেই। স্ত্রী নমিতাকে ডেকে জিগ্যেস করেন, তিনি তালা লাগাতে ভুলে গিয়েছেন কি না। সে সময়ে হঠাৎই গ্রিলের দরজা ঠেলে বারমুডা-গেঞ্জি পরা এবং গামছায় মুখ ঢাকা চার যুবক বারান্দায় উঠে আসে। উঠানে পাহারায় থাকে আরও দু’জন।

দু’জন দু’দিক থেকে বিপুলের মাথার দু’পাশে দু’টি পিস্তল চেপে ধরে তাঁকে ঘরে এনে গামছা দিয়ে পিছমোড়া করে বেঁধে ফেলে। বিপুলের স্ত্রী ও মা-কেও ওই ঘরে বসিয়ে রাখা হয়। বিপদ বুঝে বিপুলের স্ত্রী বছর সাতেকের ছেলে বিপ্রজিৎকে খাটের তলায় লুকিয়ে রাখেন। তাকেও পরে খুঁজে বার করে দুষ্কৃতীরা।

বিপুলের মা চঞ্চলার কাছে শো-কেস ও লকারের চাবি চায় তারা। তখনই বৃদ্ধার সঙ্গে ডাকাতদের ওই কথাবার্তা হয়।

শো-কেস ও লকার খুলে প্রায় আধঘণ্টা ধরে লুঠপাট চালায় দুষ্কৃতীরা। খুলে নেয় বিপুলের মা ও স্ত্রীর গায়ের গয়নাও। ডাকাতরা ৪টি সোনার চেন, ৮টি সোনার কানের দুল, ৪টি সোনার আংটি, ২টি শাঁখাবাঁধানো, ৩টি পলাবাঁধানো এবং ১টি রূপোর হার-সহ নগদ ১২ হাজার টাকা নিয়ে গিয়েছে বলে বিপুলের পরিবারের দাবি।

লুঠ সেরে তারা বাড়ির পিছনের বাঁশবন পেরিয়ে চম্পট দেয়। যাওয়ার সময় শাসিয়ে যায়, লোকজন ডাকার চেষ্টা করলে ফিরে এসে গুলি করে মেরে ফেলবে। কিছু পরে নমিতা স্বামীর বাঁধন খুলে দেন। চঞ্চলা বাইরে বেরিয়ে পাশের বাড়ি থেকে ভাসুরপো চিরঞ্জিৎকে ডেকে আনেন।

খবর ছড়িয়ে পড়তেই বাড়িতে ভিড় করেন প্রতিবেশীরা। বাগদা থানা থেকে পুলিশও আসে। সকালে চঞ্চলা বলেন, ‘‘ডাকাতরা আমাদের সর্বস্ব নিয়ে গিয়েছে। আমার ছেলে অসুস্থ। কালকের ঘটনার পর আরও অসুস্থ হয়ে পড়েছে।’’

বনগাঁর এসডিপিও অনিলকুমার রায় বলেন, ‘‘ঘটনাটি খতিয়ে দেখছে পুলিশ। কে বা কারা জড়িত, সেটা জানতে তদন্ত শুরু হয়েছে। শীঘ্রই দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Robber Bagda ডাকাত
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE