Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

বন্দুকের ভুয়ো লাইসেন্স, ধৃত সরকারি কর্মী

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ বসিরহাট স্টেশন থেকে শুভেন্দু মণ্ডল নামে ওই কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। তার বাড়ি বসিরহাটের গণপতিপুরে।  

 ধৃত: শুভেন্দু মণ্ডল

ধৃত: শুভেন্দু মণ্ডল

নিজস্ব সংবাদদাতা 
বসিরহাট শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০১৯ ০৫:১৮
Share: Save:

লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে বন্দুকের ভুয়ো লাইসেন্স করার একটি বড় চক্রের হদিস পেল বসিরহাট জেলার পুলিশ। এই ঘটনায় জেলাশাসকের দফতরের এক কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ বসিরহাট স্টেশন থেকে শুভেন্দু মণ্ডল নামে ওই কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। তার বাড়ি বসিরহাটের গণপতিপুরে।

পুলিশ জানিয়েছে, স্বরূপনগর ও হিঙ্গলগঞ্জ থেকে আগেই দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ বার বসিরহাট স্টেশন থেকে ট্রেনে ওঠার সময়ে গ্রেফতার করা হল শুভেন্দুকে। বারাসতের অতিরিক্ত জেলাশাসকের (সাধারণ) করা অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে ধরা হয়।

অভিযোগ, শুভেন্দুর সহযোগিতায় বন্দুকের জাল লাইসেন্স করে দেওয়ার একটি চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। ধৃতের বিরুদ্ধে জালিয়াতি, প্রতরণা এবং বেআইনি অস্ত্রের ব্যবস্থা-সহ একাধিক ধারায় পুলিশ মামলা রুজু করেছে। এ দিন দুপুরে শুভেন্দুকে বসিরহাটের এসিজেএম আদালতে তোলা হয়।

জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক মাস ধরে জেলাশাসকের দফতরে বন্দুকের লাইসেন্স পরীক্ষা করা হচ্ছে। সে সময়ে জাল লাইসেন্সের বিষয়টি জানতে পারে পুলিশ।

তদন্তকারীরা জানান, বসিরহাট সীমান্ত-সহ জেলা জুড়ে টাকার বিনিময়ে বন্দুকের জাল লাইসেন্স করে দেওয়ার একটি চক্র বেশ সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তারই ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, এই কারবারের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে শুভেন্দু—তা জানাজানি হলে শুভেন্দুকে অস্ত্র বিভাগ থেকে পরিবহন বিভাগে সরিয়ে দেওয়া হয়। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে বসিরহাট মহকুমার হিঙ্গলগঞ্জ এবং স্বরূপনগর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। তার ভিত্তিতে তদন্তে নেমে স্বরূপনগর থানার পুলিশ সীমান্ত লাগোয়া বিথারি গ্রাম থেকে ইউসুফ মোল্লা নামে একজনকে গ্রেফতার করে। এখন তিনি জামিনে ছাড়া পেয়েছেন।

পুলিশ জানিয়েছে, একই অভিযোগে হিঙ্গলগঞ্জের বাঁকড়া গ্রামের বাসিন্দা চঞ্চল মণ্ডলকেও গ্রেফতার করা হয়।

পুলিশের দাবি, ধৃতদের জেরার সময়ে তিনটি নাম উঠে আসে। তার মধ্যে অন্যতম বসিরহাটের শুভেন্দু মণ্ডল। ইউসুফ ও চঞ্চলের দাবি, দেড় লক্ষ টাকার বিনিময়ে ভুয়ো লাইসেন্স দেওয়া হত।

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে যে, সীমান্ত লাগোয়া গ্রামের অবস্থাপন্ন পরিবারগুলি নিরাপত্তার কারণে অনেকেই বাড়িতে বন্দুক রাখেন।

তার জন্য লাইসেন্সের আবেদন করা হয়। কেউ কেউ সরকারি-বেসরকারি দফতরে পাহারার কাজের জন্য বন্দুকের লাইসেন্স বের করার চেষ্টা করেন। অনেক দুষ্কৃতীও বন্দুকের লাইসেন্সের চেষ্টা করে। এদের কাছ থেকে টাকা নিয়েই লাইসেন্স করে দিত ওই চক্র বলে অভিযোগ।

পুলিশ জানিয়েছে, ওই চক্রের পাঁচজনের নাম জানা গিয়েছে। তার মধ্যে তিন জন গ্রেফতার হয়েছে। বাকিদের খোঁজ চলছে।

তবে এই অভিযোগ শুভেন্দু অস্বীকার করে বলেন, ‘‘জেলাশাসকের দফতরে অস্ত্র বিভাগ থেকে আমাকে সরিয়ে দেওয়াটা একটা প্রশাসনিক বিষয়। কোনও ভাবেই আমি বন্দুকের জাল লাইসেন্স বের করে দেওয়ার সঙ্গে জড়িত নই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Gun License Fake Lisence Government employee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE