বান্টি সাধু ও অজয় দাস
১০ লক্ষ টাকায় শ্বশুর-শাশুড়িকে খুনের সুপারি দিয়েছিল বান্টি। এ কাজের জন্য যোগাযোগ করে দক্ষিণ হাবড়ার বাসিন্দা অজয় দাসের সঙ্গে। তবে হাতে টাকা পায়নি অজয়। শ্বশুরকে মেরে তাঁর জমিজমা বিক্রি করে টাকা দেবে বলে কথা দিয়েছিল বান্টি। তদন্তে নেমে এ কথাই জানতে পেরেছে পুলিশ। অজয় পেশায় গাড়ি চালক। বান্টির সঙ্গে এক সঙ্গে মিউজিক ভিডিয়ো বানিয়ে ইউটিউব দিত বান্টি। একটা প্রোডাকশন হাউজ খুলেছিল তারা।পুলিশ জানতে পেরেছে, নদিয়ার বেথুয়াডহরি থেকে ৭০ হাজার টাকা দিয়ে একটি নাইন এমএম পিস্তল কেনে দু’জনে। শ্বশুর-শাশুড়িকে খুন করার আগে বান্টি-অজয় একাধিকবার লন্ডনপাড়া এলাকায় গিয়ে রেইকি করে আসে। রাতে কোথায় পুলিশ মোতায়েন থাকে, কোথায় সিসি ক্যামেরা আছে— সে সব খোঁজ নেয়। খুনের সময়ে দু’জনেই ছিল বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। তবে গুলি চালিয়েছিল অজয়। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, তন্ময়কে গ্রেফতার করার পরে তাঁদের নজর যখন বান্টির উপরে পড়ে, তখন পুলিশ বান্টির এক পরিচিত বন্ধুকে তুলে এনে জেরা করে। এলাকায় দুষ্কৃতী হিসাবে পরিচিত সে। তাকে জেরা করে পুলিশ জানতে পারে, বান্টি তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। আগ্নেয়াস্ত্র কিনবে বলে খোঁজখবর নিয়েছিল। পুলিশের সন্দেহ এরপরে আরও গাঢ় হয়।
বান্টি নিহতদের ছোট জামাই। খুনের ঘটনার পরে সে স্ত্রীকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে গিয়েছিল। জেলা পুলিশ সুপার যখন ঘটনার তদন্তে নিহতদের বাড়ি গিয়েছিলেন, তখন বান্টি সেখানে উপস্থিত। বান্টির স্ত্রী নিবেদিতা অন্তঃসত্ত্বা। বাবা-মায়ের খুনের ঘটনার পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘‘কাকুর মেয়ের সঙ্গে তন্ময়ের সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পিছনে আমার বাবা-মায়ের ভূমিকা ছিল। সেই আক্রোশ থেকে তন্ময় খুন করেছে। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। তন্ময় যেন জেল থেকে বেরোতে না পারে।’’
বৃহস্পতিবার তাঁর স্বামী গ্রেফতার হওয়ার পরে নিবেদিতার বক্তব্য, ‘‘আমি কিছুই আঁচ করতে পারিনি। কিছুই জানি না।’’ রামকৃষ্ণের ভাই বলেন, ‘‘দাদা-বৌদির নামে ১৩ কাঠা জমি আছে। যার বাজার দর প্রায় ৬০ লক্ষ টাকা। বান্টি প্রায়ই টাকা চেয়ে চাপ দিত। একবার কিছু টাকা দিয়েছিল দাদা। এ কারণে বান্টি খুন করবে ভাবতেই পারছি না।’’ দম্পতির মৃত্যুর পরে বান্টি শ্বশুরবাড়িতে জমির দলিল বাক্সে তালা দিয়ে একটি ঘরে তালা দিয়ে রাখে বলে পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে। পুলিশ অজয়ের বাড়ির খাটের তলায় ব্যাগ থেকে নাইন এমএম উদ্ধার করেছে। এ বার তন্ময়ের কী হবে? এক পুলিশ কর্তা বলেন, ‘‘কোনও নির্দোষ শাস্তি পাবে না। নিহতদের পরিবারের লোকজনই গোটা বিষয়টি ঘেঁটে দিয়েছিলেন। তদন্ত অন্য পথে পরিচালিত করার চেষ্টা করেছিলেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy