বসিরহাট থানা চত্বরে। —নিজস্ব চিত্র।
সম্প্রীতির ভাইফোঁটার আয়োজন করল হাসনাবাদ বাসস্ট্যান্ড বাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি। শুক্রবার সকালে হাসনাবাদে কাটাখালি নদীর ধারে প্রায় দু’শো পথশিশুকে ফোঁটা দিল প্রিয়াঙ্কা সাহা, সনিয়া পারভিনরা। ভাইদের হাতে তারা তুলে দিল নতুন পোশাকও।
ফোঁটা দিয়ে সনিয়া পারভিন বলে, ‘‘আমরা দুই ভাইবোন। ভাইকে প্রতি বছরই ফোঁটা দিই। এ বারে এক সঙ্গে এত জন ভাইকে ফোঁটা দিতে পেরে দারুণ লাগছে।’’ পূজা গুপ্ত বলে, ‘‘আমরা দুই বোন। ভাই না থাকায় খুব খারাপ লাগে। এখানে এত জন ভাইকে ফোঁটা দিতে পেরে আনন্দ হচ্ছে।’’
বছর বারোর নজরুল গাজি, সুভাষ বসুরা ফোঁটার উপহার হিসেবে নতুন জামাকাপড় পেয়ে স্বভাবতই উৎফুল্ল। তাদের কথায়, আমাদের বোন নেই। অভাবের পরিবার। আমাদের কেউ ফোঁটা দেয় না। আজ এখানে বোনদের কাছ থেকে ফোঁটা পেয়ে খুব আনন্দ হল।
অবশ্য শুধু ভাইফোঁটাই নয়, কালীপুজো উপলক্ষে শিশুদের নিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, রক্তদান শিবির, দুঃস্থদের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ-সহ নানা কাজের আয়োজন করা হয় বাজার কল্যাণ সমিতির তরফে।
ধর্মের ভেদাভেদকে উপেক্ষা করে গত ১৬ বছর ধরে এমন কাজ করা হচ্ছে বলে দাবি করে সংগঠনের সম্পাদক তুলসী চক্রবর্তী বলেন, ‘‘২০০২ সালে হাসনাবাদের ব্যবসায়ীরা তোলাবাজ দুষ্কৃতীদের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে দীপাবলিকে সামনে রেখে ধর্মমত নির্বিশেষে একত্রিত হয়ে গড়ে তোলেন গণতান্ত্রিক প্রতিবাদি কমিটি। হিন্দু-মুসলমান সকলকে সংগঠিত হতে দেখে পিছু হটে দুষ্কৃতীরা। সেই থেকে আমরা শুধু পুজোই নয়, সামাজিক কাজ করারও চেষ্টা করছি।’’ সংগঠনের সভাপতি আরিজুল ইসলাম গাজি বলেন, ‘‘আগামী দিনেও যাতে সংগঠনটি এই ভাবে সম্প্রীতির লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে পারে, তা দেখা হবে।’’
অন্য দিকে, বাদুড়িয়ায় শিশু-কিশোরদের সংগঠন ‘কচিকাঞ্চন সবপেয়েছির আসরে’ও ভাইফোঁটার আয়োজন করা হয়েছিল। বসিরহাটের দিঘি রোড এলাকায় নিউ বিবেকানন্দ সঙ্ঘের পক্ষে ১৫ জন অনাথশিশুর হাতে মিষ্টি তুলে দেয় পাড়ার বোনেরা। সম্প্রীতির ভাইফোঁটার আয়োজন হয়েছিল বসিরহাট থানায়। সেখানে একটি অনাথ আশ্রম ও একটি মাদ্রাসার ভাই-বোনেরা হাজির হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy