Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

জ্বর নিয়ে উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী, হাবরায় এলেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা

এ দিন দুপুরে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে হাসপাতালে আসেন রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
হাবরা শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০১৭ ০২:১২
Share: Save:

হাবরা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে জ্বর নিয়ে ভর্তি রোগীদের সরকারি ভাবে রক্তে ডেঙ্গির পরীক্ষা কাজ শুরু হল শুক্রবার থেকে।

এ দিন দুপুরে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে হাসপাতালে আসেন রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথী। এত দিন পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের বাইরে থেকে টাকা খরচ করে ডেঙ্গির রক্ত পরীক্ষা করাতে হচ্ছিল। যা নিয়ে ক্ষোভ ছড়ায়। রোগীর আত্মীয়া জানিয়েছেন, ৫০০-১০০০ টাকা পর্যন্ত খরচ করতে হচ্ছিল বাইরে থেকে পরীক্ষা করাতে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, কর্মীর অভাবে এখান থেকে রক্ত বারাসত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল না। গত বছর যা করা হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিকর্তা বলেন, ‘‘এখন থেকে প্রতিদিন হাসপাতালে ভর্তি জ্বরে আক্রান্ত রোগীর রক্তে ডেঙ্গি আছে কিনা, তার পরীক্ষা করা হবে বারাসত জেলা হাসপাতালে।’’ এ দিনই ৭০ জন রোগীর রক্তের নমুনা সেখানে পাঠানো হয়েছে। পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা ওই রক্ত নিয়ে যাওয়া ও রক্তের রিপোর্ট নিয়ে আসার কাজ করবেন। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মিলবে রিপোর্ট।

এ দিন বনগাঁ পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের একটি দলও হাবরা হাসপাতালে গিয়ে বর্হিবিভাগে চিকিৎসা করাতে আসা রোগীদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করেছে। অনেকের ইসিজিও করা হয়েছে। বনগাঁর পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্য বলেন, ‘‘শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত ৩৬৪ জনের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। ওই রক্তের রিপোর্ট শনিবারের মধ্যে তৈরি করে তা পাঠিয়ে দেওয়া হবে। কয়েক দিন ধরে ওই কাজ চলবে।’’

হাসপাতালের সামগ্রিক পরিস্থিতি ও জ্বরের হাল নিয়ে বিশ্বরঞ্জনবাবু জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকারিক রাঘবেশ মজুদার, হাসপাতাল সুপার শঙ্করলাল ঘোষ, পুরপ্রধান নীলিমেশ দাসের সঙ্গে বৈঠক করেন। ওয়ার্ডে গিয়ে রোগীদের সঙ্গে কথাও বলেন। হাসপাতালের একই বেডে পাঁচজন করেও রোগী রয়েছেন। স্বাস্থ্য অধিকর্তা বলেন, ‘‘হাবরার পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী উদ্বিগ্ন। তাঁর নির্দেশে আমি এখানে এসেছি।’’

তিনি জানান, গোটা দেশেই এখন চিকিৎসকের অভাব। বিশ্বকাপের জন্য কিছু চিকিৎসককে সেখানে পাঠানো হয়েছে। তা সত্ত্বেও সোমবার হাবরা হাসপাতালে অতিরিক্ত চিকিৎসক, নার্স পাঠানো হচ্ছে।

শঙ্করবাবু বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য অধিকর্তার কথা মতো হাসপাতালের সমস্ত চিকিৎসককে আমরা জ্বরের রোগী দেখার জন্য নিয়োগ করছি। মোট তেরোজন চিকিৎসককে আজ থেকে কাজে নেমে পড়তে বলা হয়েছে।’’ বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত হাসপাতালে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এক সপ্তাহে মৃত্যু হয়েছে ৮ জনের। বিশ্বরঞ্জনবাবুর ওই রোগীদের কেউ ডেঙ্গিতে মারা গিয়েছেন কিনা, তা পরীক্ষা না করে বলা যাবে না।

শনিবার থেকে হাবরা পুরসভার পক্ষ থেকে স্থানীয় নেহরুবাগ কলোনি, আয়রা ও শিমূলতলা এলাকায় তিনটি স্বাস্থ্য শিবির চালু হচ্ছে। পাশাপাশি এলাকার তিনটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসা রোগীদের থেকেও রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হবে বলে জানিয়েছেন নীলিমেশবাবু। পুরসভা বিনা খরচে তার রিপোর্ট তৈরি করবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।

এ দিন হাসপাতালে আসেন বিজেপি নেতা জয় বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘কর্মীদের বলেছি, জ্বরে আক্রান্তদের পাশে থাকতে। এলাকার ঝোপ জঙ্গল সাফ করতে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE