শেখ নঈম, ওরফে সামির —ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক
কয়েক বছর আগে পেট্রাপোল সীমান্ত থেকে বিএসএফের হাতে লস্কর-ই-তইবা জঙ্গি সংঠনের সদস্য সন্দেহে ধরা পড়া শেখ নঈম ওরফে সামির। ওই মামলায় ফের শুনানি শুরু হল বনগাঁ মহকুমা আদালতে।
বুধবার দমদম সেন্ট্রাল জেল থেকে কড়া নিরাপত্তায় সামিরকে বনগাঁ আদালতে আনা হয়। ফাস্ট ট্র্যাক ১ বিচারক বিনয়কুমার পাঠকের এজলাসে তাকে হাজির করায় সিআইডি। আদালত চত্বর কম্যান্ডো বাহিনী ও পুলিশ ঘিরে রাখে। এ দিন বনগাঁ আদালতে হাজির করানো হয়েছিল সামিরকে। বিচারক শুক্রবার ফের তাকে আদালতে হাজির করানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
সিআইডি সূত্রের খবর, ২০০৭ সালের এপ্রিল মাসে পেট্রাপোল সীমান্ত থেকে বিএসএফ জঙ্গি সন্দেহে চারজনকে গ্রেফতার করে। ধৃতদের বনগাঁ থানার পুলিশের হাতে তুলে দিলে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে। পরে মামলার তদন্তভার নেয় সিআইডি। সামির ছাড়াও গ্রেফতার হয়েছিল মহম্মদ ইউনুস, শেখ আবদুল্লাহ ও মুজাফ্ফর আহমেদ রাঠৌড়। আবদুল্লাহ ও ইউনুসের বাড়ি পাকিস্তানে। রাঠৌড় থাকত কাশ্মীরে। সামিরের বাড়ি মহারাষ্ট্রের ঔরঙ্গাবাদে।
ধৃতদের বিরুদ্ধে সিআইডি, দেশদ্রোহিতা, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধঘোষণা, অস্ত্র মজুত, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র-সহ ১২টি ধারায় মামলা রুজু করেছে সিআইডি। প্রচুর নথিপত্র উদ্ধার হয়েছে ওই চারজনের কাছ থেকে।
২০১২ সালের জুলাই মাসে বনগাঁ আদালতে মামলার শুনানি শুরু হয়।
মামলার সরকারি আইনজীবী সমীর দাস বলেন, ‘‘তদন্তে নেমে সিআইডি জানতে পারে, ধৃতেরা সকলে লস্করের আত্মঘাতী বাহিনীর সদস্য। কাশ্মীরে সেনা ছাউনিতে হামলা চালানোর পরিকল্পনা ছিল তাদের।’’
সিআইডি জানিয়েছে, আবদুল্লাহ ও ইউনুস পাকিস্তানে কম্যান্ডে প্রশিক্ষণ নিয়েছিল। তারা রাওয়ালপিন্ডি থেকে বিমানে ঢাকা এসেছিল। সেখানে মতিঝিল এলাকায় একটি হোটেলে তারা নঈম ও রাঠৌড়ের সঙ্গে দেখা করে। তারপরে সকলে চোরাপথে বেনাপোল সীমান্ত পেরিয়ে পেট্রাপোলে ঢুকেছিল।
২০১৭ সালে বনগাঁ আদালতের ফাস্ট ট্র্যাক ১ আদালতের বিচারক নঈম ছাড়া বাকি তিনজনকে ফাঁসির নির্দেশ দেন। সমীর বলেন, ‘‘বনগাঁ আদালতে মামলা চলাকালীন মুম্বই লোকাল ট্রেনে ধারাবাহিক বোমা বিস্ফোরণে যুক্ত থাকার একটি মামলায় নঈমকে মুম্বই পুলিশ সে রাজ্যে নিয়ে যাচ্ছিল। সেটা ১০১৪ সালের অগস্ট মাস। ছত্রিশগড়ের কাছে নঈম চলন্ত ট্রেন থেকে ঝাঁপ দিয়ে পালায়। সে সময়ে তার মা মুম্বই আদালতে অভিযোগ করেছিলেন, তাঁর ছেলেকে মেরে ফেলা হয়েছে।
সমীর জানান, পরবর্তী সময়ে এনআইএ গ্রেফতার করে সামিরকে। এই সময়ের মধ্যে সে এক রাষ্ট্রপ্রধানকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিল বলে অভিযোগ। দিল্লির পাতিয়ালা হাউজে বিশেষ আদালতে নঈমের এখনও বিচার চলছে। অন্ধ্রপ্রদেশের বোমা বিস্ফোরণের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy