Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Murder

স্ত্রী-সন্তানকে খুন করে পালাল স্বামী

পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার পর থেকে খোঁজ মিলছে না সফিউদ্দিনের। খোঁজ নেই তার প্রথম স্ত্রী ও সন্তানদের। 

 সফিউদ্দিন সর্দার

সফিউদ্দিন সর্দার

নিজস্ব সংবাদদাতা
ক্যানিং শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০২০ ০৬:৩৩
Share: Save:

বিছানায় পড়ে ছিল তরুণীর দেহ। রক্তে ভেসে যাচ্ছিল ঘর। মাথায় ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল। পাশেই পড়ে ছ’মাসের শিশুর দেহ। তাকে সম্ভবত গলা টিপে খুন করা হয়েছে বলে অনুমান পুলিশের। রবিবার সকালে ক্যানিংয়ের হাটপুকুরিয়া গ্রামের ওই ঘটনা চোখে পড়ার স্তম্ভিত স্থানীয় মানুষজন। অভিযোগের তির মহিলার স্বামীর দিকে। সফিউদ্দিন সর্দার নামে ওই যুবককে খুঁজছে পুলিশ। মোমেনা সর্দার (২২) ও তাঁর সন্তান সাহাদ সর্দারের দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বিবাহিত যুবক সফিউদ্দিনের সঙ্গে বছর দু’য়েক আগে জয়নগর থানার গোবিন্দপুরে দিনমজুরের কাজ করতে গিয়ে মোমেনার আলাপ হয়। দু’জনেই সেখানে দিনমজুরির কাজে গিয়েছিল। দু’জনের ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে।

মোমেনার পরিবারের আপত্তি সত্ত্বেও তাঁকে অন্যত্র নিয়ে গিয়ে বিয়ে করে সফিউদ্দিন। প্রথম পক্ষের স্ত্রী ও সন্তান আছে তার। দ্বিতীয় বিয়ে মেনে নেননি প্রথম স্ত্রী। এই নিয়ে শুরু হয় অশান্তি।

মোমেনাকে উত্তর হাটপুকুরিয়ার বাড়িতে নিয়ে গিয়ে রাখতে না পেরে সূর্যপুরের কাছে বাড়ি ভাড়া নেয় সফিউদ্দিন। মোমেনার পরিবারের দাবি, প্রথম বিয়ের কথা গোপন করে গিয়েছিল ওই যুবক। জানতে পারলে মোমেনার সঙ্গেও ঝামেলা বাধে। এরই মধ্যেই পুত্রসন্তানের জন্ম দেন মোমেনা। কিন্তু সংসারে অশান্তির ফলে মোমেনার পাশাপাশি ওই দুধের শিশুর উপরেও নানা ভাবে অত্যাচার চালাতে শুরু করে যুবক। স্বামীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে সন্তানকে নিয়ে বাপের বাড়িতে চলে যান মোমেনা। কিছু দিন পরে তাঁকে উত্তর হাটপুকুরিয়া গ্রামে নিজের বাড়িতে নিয়ে যাবে বলে সেখান থেকে সূর্যপুরের বাড়িতে এনে তোলে সফিউদ্দিন। মাস দু’য়েক আগে উত্তর হাটপুকুরিয়ায় নিয়েও যা। সংসারে অশান্তি আরও বাড়ে। দুই স্ত্রী কেউ কাউকে মেনে নিতে রাজি ছিল না। পাড়া-পড়শিরাও গোলমাল টের পেতেন বাইরে থেকে। রবিবার সকালে ওই বাড়ির ঘর থেকে মোমেনা ও তার শিশুর দেহ মেলে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার পর থেকে খোঁজ মিলছে না সফিউদ্দিনের। খোঁজ নেই তার প্রথম স্ত্রী ও সন্তানদের।

মোমেনার বাবা ইসরাফিল মণ্ডল ক্যানিং থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘প্রথম বিয়ে গোপন করেই আমার মেয়েকে প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে বিয়ে করেছিল সফিউদ্দিন। তবুও আমরা সব মেনে নিয়েছিলাম। কিন্তু দিনের পর দিন মেয়ে আর একরত্তি নাতিটার উপরে অত্যাচার চালাচ্ছিল ও। শেষমেশ খুন করল।’’ এই ঘটনায় সফিউদ্দিনের প্রথম স্ত্রী-ও জড়িত বলে তাঁর অভিযোগ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Murder Canning
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE