Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

তরুণী খুন, পলাতক জামাইবাবু

বোনের শরীর ক্ষতবিক্ষত। ডান হাতটা কনুইয়ের নীচ থেকে আলাদা হয়ে পড়ে আছে।

রাকিবা গাজি

রাকিবা গাজি

নিজস্ব সংবাদদাতা 
ক্যানিং শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০১৮ ০১:৫১
Share: Save:

ঘরে একাই ঘুমিয়েছিলেন বছর আঠারোর তরুণী। তাঁর দিদি ভোরের দিকে ঘুম থেকে উঠে দেখেন, রক্তে ভেসে যাচ্ছে ঘর। বোনের শরীর ক্ষতবিক্ষত। ডান হাতটা কনুইয়ের নীচ থেকে আলাদা হয়ে পড়ে আছে।

শনিবার ভোরে জীবনতলার বাগমারি এলাকার ঘটনা। নিহতের নাম রাকিবা গাজি। খুনের অভিযোগে তাঁর জামাইবাবু জিয়ারুল মোল্লাকে খুঁজছে পুলিশ।

তদন্তে নেমে প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে, বিয়ের পর থেকেই রাকিবাকে নানা ভাবে উত্যক্ত করত জিয়ারুল। তাতে কখনও আগ্রহ দেখাননি রাকিবা। বরং প্রতিবাদই করতেন। সেই আক্রোশেই জিয়ারুল তাঁকে খুন করেছে বলে অনুমান।

রাকিবার বাড়ি বাসন্তীর বল্লারটোপে। তাঁর বাবা হারান গাজি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন জামাইয়ের বিরুদ্ধে। তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন, সাড়ে চার বছর আগে বড় মেয়ে হাবিবার সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল বাগমারির জিয়ারুলের। মঙ্গলবার রাকিবা তার ভাই মিন্টুকে নিয়ে দিদি-জামাইবাবুর বাড়িতে বেড়াতে আসেন। বৃহস্পতিবার ফেরার কথা ছিল। রাকিবাকে ব্যাগ গোছাতে দেখে জিয়ারুল নানা ওজর-আপত্তি জোড়ে। শ্যালিকাকে যেতে দেবে না বলে গোঁ ধরে বসে। এক সময়ে জামাকাপড় তুলে নিয়ে জলে ফেলে দেয়।

এ নিয়ে ঝামেলা হয় পরিবারে। শুক্রবার রাতের খাওয়া সেরে রাকিবা ভাইকে নিয়ে ঘুমোতে যান। বাইরের বারান্দায় ছিল জিয়ারুল ও হাবিবা। শনিবার ভোরে আলো ফোটার আগে মাছ ধরবে বলে জিয়ারুল মিন্টুকে ডেকে নিয়ে যায়। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বাড়ি থেকে বেশ কিছুটা দূরে নিয়ে গিয়ে মিন্টুকে সেখানে বসিয়ে রেখে বাড়ি ফেরে জিয়ারুল। অভিযোগ, ঘুমন্ত শ্যালিকাকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে গলায়, হাতে কোপ মারে। ঘটনাস্থলেই মারা যান রাকিবা।

কিছুক্ষণ পরে ঘুম ভাঙে হাবিবার। তিনি দেখেন, স্বামী উঠোনে টর্চ নিয়ে ঘোরাঘুরি করছে। সন্দেহ হয় স্ত্রীর। তিনি পাশের ঘরে ঢুকে দেখেন, রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে বোন। বাইরে বেরোতেই ছুটে পালায় জিয়ারুল। হাবিবার চিৎকারে লোক জড়ো হয়ে যায়। জামাইবাবুকে অনেকক্ষণ আসতে না দেখে এক সময়ে ফিরে আসে মিন্টুও। খবর পেয়ে আসে জীবনতলা থানার পুলিশ। দেহ উদ্ধার করে খুঁচিতলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে দেহ পাঠানো হয় ময়নাতদন্তে।

হাবিবা বলেন, ‘‘শুক্রবার সন্ধ্যায় স্বামী একটা দা নিয়ে হাজির। বলেছিল, গাছপালা কাটবে। সকালে উঠে দেখি এই অবস্থা। স্বামীর কঠিন শাস্তি চাই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Murder Jibantala জীবনতলা খুন
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE