Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

বাংলাদেশের দিকে নৌকো হাতেগোনা

ইছামতীতে দুই বাংলার ভাসান দেখতে এ বারও ভিড় উপচে পড়ল টাকিতে। তবে নৌকোর সংখ্যা বাংলাদেশের দিক থেকে ছিল নেহাতই কম। ফলে কিছুটা যেন জৌলুস কমেছে প্রতিমা নিরঞ্জন পর্বের। ভিড়ের মধ্যে থেকে ভেসে এল মন্তব্য, ‘‘ঠিক জমল না এ বার।’’

জলপথে: জৌলুষ হারাচ্ছে কি টাকির ভাসান, উঠছে প্রশ্ন। নিজস্ব চিত্র

জলপথে: জৌলুষ হারাচ্ছে কি টাকির ভাসান, উঠছে প্রশ্ন। নিজস্ব চিত্র

নির্মল বসু
বসিরহাট শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০১৮ ০৩:১০
Share: Save:

ইছামতীতে দুই বাংলার ভাসান দেখতে এ বারও ভিড় উপচে পড়ল টাকিতে। তবে নৌকোর সংখ্যা বাংলাদেশের দিক থেকে ছিল নেহাতই কম। ফলে কিছুটা যেন জৌলুস কমেছে প্রতিমা নিরঞ্জন পর্বের। ভিড়ের মধ্যে থেকে ভেসে এল মন্তব্য, ‘‘ঠিক জমল না এ বার।’’

২০১৩ সালে টাকিতে বিসর্জনের দিন জলে পড়ে মৃত্যু হয়েছিল এক ভারতীয় গবেষকের। সে বার দুর্গা ভাসানকে সামনে রেখে বাংলাদেশ থেকে কয়েক হাজার মানুষ অবৈধ ভাবে ঢুকে পড়েছিল এ পারে। তা নিয়ে সোচ্চার হন এ পাড় বাংলার অনেকেই। সেই থেকে ভাসানের দিন অবৈধ পারাপার বন্ধ করতে কড়া পদক্ষেপ শুরু করে পুলিশ-প্রশাসন, বিএসএফ।

এত দিন দুই বাংলার নৌকোয় প্রতিমা নিয়ে জলে পরিকক্রমা চলত। দু’দেশের জাতীয় পতাকা থাকত যার যার নৌকোয়। একে অন্যের দিকে ফুল-মিষ্টি ছুড়ে দেওয়ার প্রথা ছিল। আলাপ-পরিচয় হত পড়শি দেশের মানুষের মধ্যে। সেই দৃশ্য গত কয়েক বছর ধরেই তেমন জমছে না। বরং নিরাপত্তার কড়াকড়ি থাকে চোখে পড়ার মতো। সে জন্যই ও পার বাংলা থেকে ইছামতীতে প্রতিমা নিরঞ্জনের উৎসাহ কমেছে বলে মনে করেন এ দিককার অনেকে। এ বার টাকি থেকে বাংলাদেশের দিকে হাতে গোনা কয়েকটি প্রতিমা দেখা গিয়েছে। তা-ও তারা বাংলাদেশের জলসীমার মধ্যেই থেকেছে।

ইছামতীর মাঝ বরাবর বিএসএফের জাহাজ এবং বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের পাহারা চোখে পড়েছে। ছিল পুলিশি টহল। উপস্থিত ছিলেন বসিরহাটের সাংসদ ইদ্রিশ আলি, টাকির পুরপ্রধান সোমনাথ মুখোপাধ্যায়-সহ বিশিষ্টজনেরা। সোমনাথ অবশ্য বলেন, ‘‘এ বার নদীতে আগের থেকে বেশি প্রতিমা এবং যাত্রী-নৌকো নেমেছিল। সীমান্ত রেখা মেনে বাংলাদেশের মানুষও আনন্দ করেছেন।’’

যদিও টাকির ভাসান দেখে মন ভরেনি কলকাতার নিউ আলিপুর এবং ব্যারাকপুর থেকে আসা নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য়, রত্না চট্টোপাধ্যায়দের। তাঁরা বললেন, ‘‘ভারত-বাংলাদেশের সীমান্তে নদীতে জোড়া নৌকোর মাঝে প্রতিমার নিরঞ্জন এবং দুই বাংলার মানুষের মিলন দেখতে এখানে আসা। কিন্তু বাংলাদেশের দিক থেকে তেমন কিছু চোখে পড়ল না। এ দিকেও নৌকো কম নেমেছে বলেই মনে হচ্ছে।’’

সন্ধ্যা নামতেই টাকি জমিদার বাড়ির ঘাটের কাছে শুরু হয় আতসবাজির সমারোহ।

অন্য দিকে, বসিরহাটের ইছামতী নদীতে শতাধিক নৌকোয় নিরঞ্জন হয়েছে। এখানেও ইছামতীর দু’পাড়ে চোখে পড়ার মতো ভিড় ছিল। অন্ধকার নামতেই শুরু হয় বাজি ফাটানো। কয়েকটি নৌকোয় জেনারেটর তুলে আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল।

একটা সময়ে আকাশের বুকে সন্ধ্যাতারা ফুটে উঠতেই ‘‘আসছে বছর আবার হবে’’ বলে শুরু হয় নিরঞ্জন। জোড়া নৌকো খুলে যেতেই প্রতিমা নেমে যায় জলের গভীরে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ichamati River Bangladesh Taki Immersion
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE