Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
Hasnabad

প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব দলেরই একাংশের

হাসনাবাদ পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল নেতা আনন্দ সরকার বলেন, ‘‘দুই গোষ্ঠীর মধ্যে দ্বন্দ্ব মেটানোর চেষ্টা করছি আমরা। যাতে শান্তিপূর্ণ ভাবে পঞ্চায়েত চলে, তা দেখা হচ্ছে।’’

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
হাসনাবাদ শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০২০ ০১:০৭
Share: Save:

তৃণমূলের প্রধানের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ছিল দলেরই বেশিরভাগ পঞ্চায়েত সদস্যের। প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবও আনলেন তাঁরা। সব মিলিয়ে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে হাসনাবাদ ব্লকের পাটলি খাঁপুর পঞ্চায়েতে। বিভিন্ন কাজ থমকে আছে বলে অভিযোগ পঞ্চায়েত সদস্যদের একাংশের। কোনও শংসাপত্র নিতে এলেও পাচ্ছেন না মানুষ। প্রধান বেশ কিছু দিন ধরে পঞ্চায়েতে আসছেন না বলেও অভিযোগ। বিডিও অরিন্দম মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অফিস এখন বন্ধ। তাই কিছু বলতে পারব না। পুজোর পরে অফিস খুললে সিদ্ধান্ত হবে।’’

গত পঞ্চায়েত ভোটে ১৬টি আসনের সব ক’টিতেই জয়ী হয় তৃণমূল। প্রধান হন পারুল গাজি। তবে বকলমে তাঁর স্বামী রহিম গাজিই পঞ্চায়েত চালাতেন বলে জানাচ্ছেন স্থানীয় মানুষ। রহিমের বিরুদ্ধে পঞ্চায়েত সদস্যদের একাংশের ক্ষোভ অনেক দিনের। আমপানে এই পঞ্চায়েত এলাকার বিভিন্ন গ্রাম প্লাবিত হয়। সে সময়ে প্রধানের ভূমিকায় সন্তুষ্ট ছিলেন না গ্রামবাসীদের বড় অংশ। পঞ্চায়েত সদস্যদের অনেকেরই ক্ষোভ বাড়ে তাতে। ত্রাণ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। মানুষজন পঞ্চায়েতে এসে বিক্ষোভ দেখান।

তারপর থেকেই পঞ্চায়েতে খুব কম আসতেন প্রধান ও তাঁর স্বামী। ১৫ অক্টোবর পঞ্চায়েতের ১০ জন সদস্য প্রধানের বিরুদ্ধে অযোগ্যতা, দুর্নীতি, স্বজনপোষণের অভিযোগ তুলে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দেন ব্লক প্রশাসনের কাছে। পঞ্চায়েতের সব সদস্যকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না বলেও তাঁদের অভিযোগ।

প্রধানের বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর নেতা সুনীল সিংহ বলেন, ‘‘প্রধান ও তাঁর স্বামী একেবারেই যোগ্য নন। সেই সঙ্গে দুর্নীতি ও স্বজনপোষণ করেই চলেছেন। এ ছাড়া, প্রধান পঞ্চায়েত চালানোর কোনও নিয়ম নীতি মানেন না। পঞ্চায়েত সদস্যদের প্রাধান্য দেন না। প্রধানের স্বামী ইচ্ছামতো পঞ্চায়েত চালান। তাই ব্লক প্রশাসনকে আমাদের অনাস্থা জানিয়ে এসেছি। আমরা চাই, পঞ্চায়েত দ্রুত সচল হোক।’’ পঞ্চায়েতের উপপ্রধান অর্চনা মণ্ডল বলেন, ‘‘প্রধান আমার কাছেও শংসাপত্র দেওয়ার প্যাড দেন না। ফলে মানুষ খুবই সমস্যায় পড়েছেন। যেহেতু পঞ্চায়েতে প্রধান বা তাঁর স্বামী কেউ দফতরে আসেন না, তাই বেশ কিছু দিন ধরেই এই পরিস্থিতি চলছে।’’ কোনও দরকারে পঞ্চায়েত অফিস থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে প্রধানের বাড়িতে যেতে হচ্ছে বলে জানালেন তিনি। তা-ও অনেক সময়ে বাড়িতে গেলেও কাজ মিটছে না বলে অভিযোগ। রাস্তা, নালা তৈরি-সহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ থমকে আছে বলে অভিযোগ উপপ্রধানের।

রহিমের অবশ্য দাবি, কোনও কাজই খেমে নেই। স্ত্রী কয়েক দিন অসুস্থ। তাই পঞ্চায়েতে যেতে পারছেন না। তবে বাড়িতে এলে শংসাপত্র দেওয়া হচ্ছে।

প্রধানের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগও ভিত্তিহীন বলে তাঁর দাবি। এমনকী, অনাস্থা আনা হয়েছে বলেও তিনি কিছু জানেন না বলে মন্তব্য করেছেন রহিম।

হাসনাবাদ পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল নেতা আনন্দ সরকার বলেন, ‘‘দুই গোষ্ঠীর মধ্যে দ্বন্দ্ব মেটানোর চেষ্টা করছি আমরা। যাতে শান্তিপূর্ণ ভাবে পঞ্চায়েত চলে, তা দেখা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Hasnabad TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE