পূজা শীল।
আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা কিশোরীকে কেরোসিন ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে খুনের চেষ্টার অভিযোগ উঠল স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ির বিরুদ্ধে। রবিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে অশোকনগর থানার গুমা সুকান্তপল্লি এলাকায়।
পুলিশ জানিয়েছে, অগ্নিদগ্ধ কিশোরী এখন বারাসত জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার শরীরের ৯৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে।
ঘটনার পরে পূজা শীল নামে বছর সতেরোর কিশোরীর বাবা রবীন্দ্রনাথ বাড়ৈ অশোকনগর থানায় মেয়ের স্বামী বিপুল শীল, শ্বশুর বিমল শীল, শাশুড়ি নমিতা শীল-সহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন। পুলিশ খুনের চেষ্টার মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে। মঙ্গলবার বিকেলে পুলিশ বিপুল, বিমল ও নমিতাকে গ্রেফতার করে। বাকি দু’জন পলাতক। তাদের খোঁজ চলছে।
পুলিশ ও কিশোরীর বাপের বাড়ি সূত্রে জানা গিয়েছে, অশোকনগর থানার গুমা নবপল্লি এলাকায় পূজার বাপের বাড়ি। বছর দু’য়েক আগে বাড়ির অমতে পূজা বিয়ে করে বিপুলকে। রবীন্দ্রনাথ বলেন, ‘‘আমরা প্রথমে বিয়ে মেনে নিইনি। ছ’মাস পর থেকে মেয়ে আমাদের বাড়ি যাতায়াত শুরু করে।’’ নাবালিকা অবস্থায় বিয়ে আইনত অপরাধ এবং এই বয়সে বিয়ে হলে মেয়ের শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে পারে। তা হলে কেন পুলিশে অভিযোগ করেননি তিনি? রবীন্দ্রনাথ বলেন, ‘‘আমরা গরিব মানুষ। ভ্যান চালিয়ে খাই। তাই পুলিশি ঝামেলা করতে চাইনি।’’ পূজার দাদা রথীন বলেন, ‘‘তখন যদি আইনের দ্বারস্থ হতাম, তা হলে বোনের এই ক্ষতি হত না।’’
পূজার বাপের বাড়ির লোকের অভিযোগ, বিয়ের কিছু দিন পর থেকে পণের দাবিতে মেয়ের শ্বশুরবাড়ির লোকজন অত্যাচার শুরু করে। সাধ্য মতো আর্থিক সাহায্য করেছিলেন রবীন্দ্রনাথরা। আসবাবপত্র কিনে দেন। চাল, ডালও কিনে দিয়েছেন কখনও সখনও। পূজার বাবা বলেন, ‘‘সম্প্রতি মেয়ের শ্বশুরবাড়ির লোকজন ৩ হাজার টাকা দাবি করেছিল। ওই টাকা দিতে না পারায় মেয়ের উপরে অত্যাচার বেড়ে গিয়েছিল।’’
পুলিশ জানায়, রবিবার সকাল ৭টা নাগাদ রবীন্দ্রনাথ মেয়ের শ্বশুরবাড়ির প্রতিবেশীদের কাছ থেকে জানতে পারেন, মেয়েকে চ্যালা কাঠ দিয়ে মারধর করা হয়। পরে হাত-পা বেঁধে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। পূজার বাপের বাড়ির লোকজন মেয়ের শ্বশুরবাড়ি এসে দেখেন, মেয়ে নেই। তাকে বারাসত জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাঁরা সেখানে গিয়ে দেখেন, মেয়ে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy