স্কুলের সামনে এখানেই ঘটেছিল বিস্ফোরণ। বুধবার। নিজস্ব চিত্র
অস্ত্র কারখানা আবিষ্কারের রেশ মিটতে না-মিটতেই বোমা বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চল।
দু’দিন আগেই আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির কারখানার হদিস মিলেছিল কাঁকিনাড়ায়। বুধবার সকালে বোমা ফেটে জখম হলেন গারুলিয়া পুরসভার দুই কর্মী। যেখানে বিস্ফোরণ হয়, তার কয়েক কদম দূরেই রয়েছে একটি প্রাথমিক স্কুল। স্কুলটি তখন বন্ধ থাকায় বড় দুর্ঘটনা এড়ানো গিয়েছে বলে মনে করছেন এলাকার বাসিন্দারা।
এই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়। আতঙ্কের আরও বড়ও কারণ, ছ’মাসের মধ্যে একই এলাকায় তিনটি এই ধরনের ঘটনা ঘটল।
বারবার একই ঘটনা ঘটলেও অবশ্য এখনও পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি। তাতে এলাকায় ক্ষোভ বাড়ছে। ক্ষুব্ধ এলাকার তৃণমূল বিধায়ক তথা পুরপ্রধান। কাঁকিনাড়ায় লোকালয়ের মধ্যে ছ’মাস ধরে অস্ত্র কারখানা চললেও সে খবর স্থানীয় পুলিশের কাছে ছিল না। কেন ছিল না, সে ব্যাখ্যা পুলিশের কাছ থেকে মেলেনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকালে গারুলিয়ার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে ভ্যাটের জঞ্জাল সাফ করছিলেন পুরসভার কর্মীরা। ভ্যাটের পিছনেই ‘বিপিনবিহারী গাঙ্গুলি প্রাথমিক বিদ্যালয়’। পুরসভার দুই কর্মী মিঠুন হেলা এবং রাজেশ হেলা ভ্যাট থেকে জঞ্জাল তোলার জন্য বেলচা চালাতেই বিস্ফোরণ ঘটে। বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে এলাকা। ধোঁয়ায় ঢেকে যায় চারপাশ। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এলাকার বাসিন্দারা। প্রথমে কেউ কিছু বুঝে উঠতে পারেননি। ধোঁয়া সরতেই দেখা যায়, রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন দুই পুরকর্মী। সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের ভাটপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে মিঠুনকে সেখান থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তাঁর হাতে গভীর ক্ষত হয়েছে। বোমায় সুনীলের একটি চোখ জখম হয়েছে। একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা চলছে। গারুলিয়ার পুরপ্রধান সুনীল সিংহ জানিয়েছেন, পুরসভা জখম কর্মীদের চিকিৎসার দায়িত্ব নিচ্ছে।
বিস্ফোরণের কিছু ক্ষণের মধ্যেই ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। তাঁদের দেখে ক্ষোভ উগরে দেন এলাকার বাসিন্দারা। তাঁদের ক্ষোভের কারণ, বারবার একই ঘটনা ঘটলেও পুলিশ কাউতে গ্রেফতার করতে পারছে না। বিস্ফোরণের সময়ে স্কুল চালু থাকলে আরও বড় ঘটনা ঘটতে পারত।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ছ’মাসে এই নিয়ে তৃতীয় বার এমন ঘটনা ঘটল। মাস ছয়েক আগে ওই ওয়ার্ডেরই একটি এলাকায় বোমা বিস্ফোরণ ঘটে। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এলাকার কাউন্সিলরের বাড়ির সামনে দু’টো তাজা বোমা পাওয়া যায়। সেই ঘটনাতেও পুলিশ কাউকে ধরতে পারেনি।
পুলিশ জানায়, এ দিন যে বোমাটি ফেটেছে, টানা বৃষ্টিতেও সেটি নিষ্ক্রিয় হয়নি। ফলে সেটি যে শক্তিশালী ছিল, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই পুরপ্রধানের। পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ গোপন করেননি তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘বারবার একই ঘটনা ঘটছে। পুলিশ দোষীদের গ্রেফতার করতে পারছে না। তাদের কাছে কোনও খবরও থাকছে না। সাত দিনের মধ্যে পুলিশ দোষীদের ধরতে না পারলে আমি উপরমহলে জানাব।’’
ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ডিসি (জোন ১) কে কান্নন বলেন, ‘‘পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। দোষীরা শিগগিরিই ধরা পড়বে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy