Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

মুখ খোলা কল থেকে অবিরাম জলের ধারা

কাকদ্বীপ ব্লকের ১১টি পঞ্চায়েত রয়েছে। তারমধ্যে নেতাজি, রামগোপালপুর ও রবীন্দ্র পঞ্চায়েত ছাড়া বাকি ৮ পঞ্চায়েতে পাইপ লাইনের জল সরবরাহ হয়।

অপচয়: কাকদ্বীপে। —নিজস্ব চিত্র

অপচয়: কাকদ্বীপে। —নিজস্ব চিত্র

দিলীপ নস্কর
কাকদ্বীপ শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০১৯ ০৮:৩৩
Share: Save:

পানীয় জলের সঙ্কট যে ক্রমশ ঘণীভূত হচ্ছে বিশ্বজুড়ে, তা নিয়ে সংশয় নেই কারও। কিন্তু মানুষ কতটা সচেতন, তা নিয়ে প্রশ্ন সব মহলেই।

এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও পানীয় জলের সঙ্কট নিয়ে নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ইদানীং জল সংরক্ষণের বিষয়ে জোর দিয়েছে রাজ্য সরকার। জলের অপচয় বন্ধ করার আবেদন জানানো হচ্ছে। কিন্তু সে কথা কারও কানে উঠলে তো! এমনকী, জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের পাইপ লাইনের জল আটকানো ট্যাপের ব্যবস্থা না থাকায় সারা সময় জল পড়ে নষ্ট হচ্ছে।

কাকদ্বীপ ব্লকের ১১টি পঞ্চায়েত রয়েছে। তারমধ্যে নেতাজি, রামগোপালপুর ও রবীন্দ্র পঞ্চায়েত ছাড়া বাকি ৮ পঞ্চায়েতে পাইপ লাইনের জল সরবরাহ হয়। আগে সমস্ত রকম রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে ছিল জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর। কয়েক বছর আগে পাইপ লাইনের জল সরবারহের বিষয়ে দেখভালের দায়িত্ব পঞ্চায়েতের হাতে হস্তান্তর হয়েছে। ওই ৮টি পঞ্চায়েতে জনসংখ্যা অনুযায়ী রাস্তার পাশে ট্যাপ লাইনে জল সরবরাহ হয়। এলাকায় সারা দিনে তিনবার জল আসে। প্রতাপাদিত্য পঞ্চায়েতে ৬টি পাম্প স্টেশনের মাধ্যেমে ভূগর্ভস্থ জল ৩৩ হাজার মানুষের কাছে সরবরাহ করা হয়। ট্যাপের সংখ্যা প্রায় ৩০০টি। ২০০০ সাল থেকেই জল সরবরাহ চলছে। কিন্তু পাইপ লাইনের মুখে অধিকাংশ জায়গায় কল লাগানো না থাকায় সারাক্ষণই জল পড়ে যায়। তাতে হেলদোল নেই পঞ্চায়েত বা বাসিন্দাদের।

ওই পঞ্চায়েতের পূর্ববাজার, নয়াপাড়া, বিদ্যানগর, গোবিন্দপুর-সহ বেশ কয়েকটি গ্রামে গিয়ে দেখা গেল, পাইপ লাইনের মুখে ট্যাপের ব্যবস্থা নেই। কোথাও ট্যাপ থাকলেও তা বিকল হয়ে যাওয়া জল পড়েই যাচ্ছে। বাসিন্দারা জানালেন, পাইপের মুখে ট্যাপ না থাকায় প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে ভূগর্ভস্থ জল নষ্ট হচ্ছে। মেরামতির জন্য পঞ্চায়েতের কর্মীদের দেখা মেলে না। গ্রামের অনেকে জানালেন, পাইপ লাইনের মুখে কাপড় বা দড়ি বেঁধে জল বন্ধ করার চেষ্টা করেন তাঁরা। জল নষ্ট হওয়া যে উচিত নয়, তা বুঝতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ।

কাকদ্বীপ এলাকায় ভূগর্ভস্থ জলে স্যালো পাম্পের সাহায্যে চাষের জমিতে ব্যবহার করা হয়। ফলে দিনে দিনে জল স্তর নেমে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা।

পঞ্চায়েত এলাকার ট্যাপ লাইনের জল অপচয় প্রসঙ্গে প্রতাপাদিত্য পঞ্চায়েতের উপপ্রধান বাদল মাইতি বলেন, ‘‘দু’বছর আগে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর থেকে আমরা দায়িত্ব পেয়েছি। নিয়মিত কর্মী পাঠিয়ে ট্যাপ লাইনগুলি নজর দারি করা হয়। ট্যাপ লাগিয়ে দিলেও অনেকে খুলে দেয়। এলাকার বাসিন্দারা জল সম্পর্কে সচেতন না হওয়ায় অপচয় হচ্ছে।’’

জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘জল অপচয়ের বিষয়ে আমাদের কেউ কোনও অভিযোগ জানায়নি। অভিযোগ পেলে পঞ্চায়েতের মাধ্যমে নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kakdwip Water
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE