Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

গোবরডাঙা লোক উৎসবে কালিকাপ্রসাদ স্মরণে মঞ্চ

গ্রামবাংলার ‘লুপ্তপ্রায়’ লোকসংস্কৃতিকে তুলে এনে নতুন প্রজন্মের কাছে হাজির করে তার প্রসার ঘটাতে এই উৎসব শুরু হয়েছিল  স্থানীয় মিলন সঙ্ঘের মাধ্যমে।

হরেক-রকম: গানে মেতেছেন বাউল শিল্পী। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

হরেক-রকম: গানে মেতেছেন বাউল শিল্পী। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

সীমান্ত মৈত্র
গোবরডাঙা  শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:৩২
Share: Save:

পল্লিগীতি, পাতার বাঁশি, নাটুয়া, বাউল, লোকনৃত্য, ঢাকের ফিউশনের মতো লোকসংস্কৃতির হরেক সম্ভার নিয়ে বুধবার শুরু হল গোবরডাঙা লোক উৎসব। এ বার বারো বছরে পড়ল উৎসব। জনপ্রিয় এই উৎসবে লোক সংস্কৃতির টানে আশপাশের জেলা থেকেও মানুষ ভিড় করছেন মেলায়।

গ্রামবাংলার ‘লুপ্তপ্রায়’ লোকসংস্কৃতিকে তুলে এনে নতুন প্রজন্মের কাছে হাজির করে তার প্রসার ঘটাতে এই উৎসব শুরু হয়েছিল স্থানীয় মিলন সঙ্ঘের মাধ্যমে। এখনও উৎসব পরিচালনা করে তারাই। তবে লোকসংস্কৃতিপ্রেমী সকল মানুষকে উৎসবে সামিল করার লক্ষ্যে উদ্যোক্তারা এলাকার বিশিষ্ট মানুষজনকে নিয়ে উৎসব কমিটি তৈরি করেছেন। উৎসবে এ বার স্মরণ করা হচ্ছে প্রয়াত লোকশিল্পী কালিকা প্রসাদ ভট্টাচার্যকে। মূল মঞ্চের নামকরণও করা হয়েছে শিল্পীর নামে। উৎসবের বিভিন্ন দিনে থাকছে, পরীক্ষিত বালার পল্লিগীতি, মুর্শিদাবাদের পাতার বাঁশি, বিখ্যাত ঢাকি গোকুল দাসের ঢাকের মিউজিক ফিউশন ও পুরুলিয়ার নাটুয়া।

শুধু বাংলা নয়, উৎসবে এসেছেন দেশের অন্য রাজ্যের লোকশিল্পীরাও। ফলে গোবরডাঙার এই মেলা যেন এখন এক টুকরো ভারতবর্ষ। এ বার গোটা দেশের লোকসংস্কৃতিকে এক ছাতার তলায় আনতে উদ্যোগী হয়েছেন উদ্যোক্তারা। মূল মঞ্চে মণিপুর, কাশ্মীর, পঞ্জাব, হরিয়ানা, রাজস্থান, অসম থেকে আসা লোকশিল্পীরা তুলে ধরবেন সেখানকার লোকসংস্কৃতি। এ দিন কাশ্মীরের লোকনৃত্য দেখে এক প্রবীণ শিক্ষক বলেন, ‘‘লোকসংস্কৃতি জীবনের কথা বলে। সম্প্রীতির কথা বলে। কাশ্মীরের লোকশিল্পীরা তাঁদের নৃত্যের মাধ্যমে তা প্রমাণ করে দিলেন।’’

উত্তরপ্রদেশের ময়ূর নৃত্য পরিবেশন করছেন শিল্পী।

উৎসবে প্রতি বছরের মতো এ বারও তৈরি হয়েছে বাউল আখড়া। প্রয়াত শিল্পী কালাচাঁদ দরবেশ ও তারক দাস বাউলের স্মরণে এ বার আখড়ার নামকরণ হয়েছে। সেখানে বাউল পরিবেশন করছেন, ভক্তদাস বাউল, লক্ষণ দাস বাউল, মাকি কাজুমি, কৃষ্ণদাস বাউল, জয়দেব দাসের মতো বাউলশিল্পী। তাঁদের দেখতে ও তাঁদের গান শুনতে ভিড়ও হচ্ছে। উৎসব উপলক্ষে, ‘মাটির টানে’ নামে একটি স্মরণিকাও প্রকাশিত হয়েছে।

উৎসব কমিটির সম্পাদক শঙ্কর দত্ত বলেন, ‘‘লোক উৎসব গ্রামবাংলা ও সমাজের প্রকৃত পরিচয়পত্র। সেই কারণেই আমাদের লোক উৎসবের আয়োজন।’’ উৎসব কমিটির সভাপতি গোবরডাঙার পুরপ্রধান সুভাষ দত্ত বলেন, ‘‘এখন সকলেই প্রচণ্ড ব্যস্ত। ব্যস্ত এই সময়ে সহজ সরল মানুষ হওয়ার প্রেরণা দেয় এই লোক উৎসব।’’

কমিটি সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিদিন উৎসব শুরু হচ্ছে দুপুর ৩টে থেকে। তবে তার আগে থেকেই শুরু হচ্ছে ভিড়। উৎসবে আসা নম্রতা বসু নামে এক মহিলার কথায়, ‘‘আগে না এলে মঞ্চে সামনের দিকে বসার জায়গা পাওয়া যাচ্ছে না। তাই তাড়াতাড়ি আসা।’’

উৎসব শেষ হবে ৭ জানুয়ারি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kalika Prasad Mancha Folk Festival
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE