মানুষ-ঘুড়ি: সাগরে। নিজস্ব চিত্র
প্রাণভোমরা, চিল, বাক্স, এরোপ্লেন!
না, কোনও হযবরল নয়। এসব হল ঘুড়ির নাম।
এইরকম নানা অচেনা জাতের ঘুড়ি নিয়েই কমলপুরের ধানখেতে হাজির হলেন জেলার বিভিন্ন জায়গার ঘুড়িবিদরা। নামখানা এবং কাকদ্বীপ ছাড়াও পাথরপ্রতিমা, দেবনগর-সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে এসেছিলেন ঘুড়ির কারিগররা।
মাঠের ফসল তোলা হয়ে গিয়েছে। কমলপুর ঘুড়ি-মেলার মাঠে রবিবার তিল ধারণের জায়গা ছিল না। প্রতি বারই বিকেলের সামুদ্রিক ঝোড়ো হাওয়ায় হরেক ঘুড়ির সমাহার হয় এই মাঠে। ঘুড়ি-সংস্কৃতি ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে। তারই মধ্যে এখানকার মানুষ বিষয়টিকে এখনও ধরে রেখেছেন। যেমন গঙ্গাসাগরের অরূপ মাইতি। দেখা হল ঘুড়ির মাঠে। প্রায় ১০ বছর হল ঘুড়ি তৈরি করছেন এবং ওড়াচ্ছেন। এ দিন সঙ্গে এনেছিলেন চিল ঘুড়ি এবং এরোপ্লেন ঘুড়ি। অরূপ বলেন, ‘‘প্রায় দু’দিন ধরে তৈরি করেছি চারটি ঘুড়ি। মেলা শেষে দেড়শো, দুশো, চারশো টাকায় সেগুলি বিক্রিও হয়।’’
এখানে ঘুড়ির লড়াই হয় না। হয় প্রদর্শনী। তবে সেখানেও একটা প্রতিযোগিতা থাকে। যে যার মতো করে ঘুড়ি ওড়ান। দেখা হয়, কার ঘুড়ি কতটা ওপরে উড়ল, কতক্ষণ সেটি আকাশে থাকল ইত্যাদি। প্রদর্শনীতে অংশ নিতে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ঘুড়ি কারিগরেরা আসেন। ঢাউস ঘুড়ি ওড়াতে কম করে দু’জন লোক লাগে। আয়োজকদের মাপকাঠিতে ঘুড়ির ওড়ানো ভাল হলে মেলে আকর্ষণীয় পুরস্কারও।
শহিদ ক্ষুদিরাম স্মৃতি সংঘ পাঠাগার ও কমলপুরের একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলের যৌথ উদ্যোগে প্রায় ১৪ বছর ধরে এই মেলার আয়োজন হচ্ছে। পাঠাগারের কার্যকরী সভাপতি নারায়ণ জানা বলেন, ‘‘জেলার মধ্যে আমরাই এই সংস্কৃতি বজায় রেখেছি। কমলপুরে ঘুড়ি ওড়ানোর চল অনেক আগে থেকেই ছিল। তবে সেটিকে উৎসবের চেহারা দেওয়ার উদ্যোগ শহিদ ক্ষুদিরাম স্মৃতি সংঘ পাঠাগার ও একটি স্কুলের তরফেই নেওয়া হয়েছে।’’
এ দিন উৎসবের উদ্বোধন করেন সাগরের বিধায়ক বঙ্কিম হাজরা। ১২ রকমের প্রায় ৪৩০টি ঘুড়ি প্রদর্শনীতে অংশ নেয়। ঢোল এবং মানুষের অবয়বেও তৈরি করে আনা হয়েছিল ঘুড়ি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy