ভাঙচুর হওয়া পুলিশের গাড়ি। বৃহস্পতিবার। —নিজস্ব চিত্র।
ভোরে চটকলের প্রথম শিফ্ট শুরুর সময়ে দুর্ঘটনায় এক শ্রমিকের প্রাণ হারানো ও পাঁচ শ্রমিকের জখম হওয়ার ঘটনা ঘিরে উত্তেজনা ছড়াল। পুলিশের গাড়িতে শ্রমিকদের হামলা, পুলিশের লাঠিচার্জ সব মিলিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে কার্যত কাজ বন্ধ থাকল খড়দহ-টিটাগড় সীমানায় লুমটেক্স চটকলে।
মৃতের নাম রাজেশ রাম (৩৬)। পুলিশ জানায়, টিটাগড় ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা রাজেশ এ দিন কাজে যাচ্ছিলেন। চটকলটির দু’টি গেট— একটি টিটাগড়ের দিকে, অন্যটি খড়দহের দিকে। বি টি রোডের উপরে খড়দহের দিকের গেট খোলা থাকে। শিফ্ট বদলের সময়ে বহু শ্রমিক সেখান দিয়ে বেরোনো ও ঢোকার ফলে ভিড় উপচে আসে রাস্তাতেও। এ দিন ভোরে ব্যারাকপুরগামী একটি গাড়ি দ্রুত গতিতে যাওয়ার সময়ে রাস্তায় রাজেশ-সহ ছয় শ্রমিককে ধাক্কা দেয়। হাসপাতালের পথে মৃত্যু হয় রাজেশের। বাকিদের প্রথমে ব্যারাকপুর বি এন বসু মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গেলেও পরে তিন জনকে কলকাতায় আনা হয়। এর পরেই ক্ষিপ্ত জনতা গাড়িটি ভাঙচুর করে আগুন ধরানোর চেষ্টা করে। পরে জানা যায়, খড়দহের টাটাগেটের কাছেও দুই পথচারীকে ধাক্কা দিয়েছিল গাড়িটি।
খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। অভিযোগ, শ্রমিকদের একাংশ পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে ইট ছোড়ায় পাঁচ পুলিশকর্মী জখম হন। ব্যারাকপুর কমিশনারেট থেকে আরও পুলিশ পৌঁছে পরিস্থিতি সামলায়। কিছু বিক্ষোভকারী চটকল অফিসে হামলা করলে পুলিশ তাদের বার করে। শ্রমিকদের অভিযোগ, টিটাগড়ের দিকের গেট খোলা থাকলে তাঁরা দুর্ঘটনা এড়িয়ে পৌঁছতে পারেন। কর্তৃপক্ষকে বারবার বলেও কাজ হয়নি।
চটকলের শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। টিটাগড় পুরসভার চেয়ারম্যান তথা লুমটেক্স চটকলের তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের নেতা প্রশান্ত চৌধুরী বলেন, ‘‘মৃতের পরিবারকে এক লক্ষ টাকা দেওয়া ও দেহটি সৎকারের ব্যবস্থা হয়েছে। অন্য গেট খোলা নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হচ্ছে।’’ আহতদের চিকিৎসায় কর্তৃপক্ষ টাকা দেবে বলে আশ্বাস দেয়। ৩৬ জন গ্রেফতার হলেও ঘাতক গাড়ির চালক-আরোহী পলাতক। পুলিশ জানায়, গাড়িটি সোদপুরের এক ব্যবসায়ীর। তাঁর খোঁজ চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy