ছুটি-ছুটি: টানা চার দিনের ছুটিতে ভিড় উপচে পড়ছে বকখালিতে। কিন্তু প্রশ্ন নিরাপত্তা নিয়ে। নিজস্ব চিত্র
হেনরি আইল্যান্ডে ঢোকার পথে মৎস্য দফতরের কর্মী ঢোকার রসিদের সঙ্গে একটি লিফলেট ধরিয়ে দিচ্ছিলেন। নিরাপত্তার নানা বাণী সেখানে। পর্যটকেরা বেশিরভাগই একনজর দেখলেন বটে, কিন্তু সৈকতে গিয়ে কতটা মনে রাখলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই গেল।
চার দিনের টানা ছুটিতে বকখালি, ফ্রেজারগঞ্জ, হেনরি আইল্যান্ড উপচে পড়ছে পর্যটকদের ভিড়ে। জুন মাসের শেষ দিকেই হেনরি আইল্যান্ডে জলে ডুবে মারা গিয়েছে দিয়েছেন বাবা-মেয়ে-সহ তিন জন। কিন্তু তারপরও সমুদ্র স্নানের নিয়ম-কানুনের তোয়াক্কা না করে অনেককে জলের গভীরে চলে যেতে দেখা গেল। নজরদারি করবে যাঁরা, তাদেরও বিশেষ দেখা মিলল না বকখালিতে।
হেনরি আইল্যান্ডে তিনজনের মৃত্যুর পরে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও নিজে বকখালি, হেনরি আইল্যান্ড-সহ এলাকাগুলি ঘুরে দেখেন। তখনই ঠিক হয়েছিল, পর্যটকদের জন্য জরুরি ভিত্তিতে তৈরি করে ফেলা হবে নিরাপত্তাবেষ্টনী। নজরদারি এড়িয়ে কেউই ঝুঁকি নিয়ে স্নান করতে পারবেন না। কিন্তু সেই পরিকল্পনা বাস্তবে কিছু প্রচারপত্র এবং পোস্টারেই সীমাবদ্ধ থেকে গিয়েছে। ঝুঁকি নিয়েই চলছে সমুদ্র স্নান।
শনিবার হেনরি আইল্যান্ডে গিয়ে দেখা গেল, সৈকতের অ্যাপ্রোচ রোডের শেষে এক মৎস্য দফতরের কর্মী লাঠি হাতে বসে রয়েছেন। এলাকায় আর কোনও সিভিক ভলান্টিয়ার নেই। হাওড়া থেকে আসা একটি পরিবারের সদস্য, উমেদ জায়সবাল বলেন, ‘‘আমরা বেশি দূরে যাইনি। তা ছাড়া এখানে স্নান করা বারণ, তা তো জানি না।’’ উমেদ এ কথা বললেও হেনরি আইল্যান্ডে দুর্ঘটনার পর থেকে স্নান করা নিয়ে নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত লিফলেট এবং পোস্টার প্রচুর চোখে পড়ছে এলাকায়। কিন্তু ওই পর্যন্তই।
জেলাশাসক এক মাস আগে বকখালি ঘুরে যে পরিকল্পনা তৈরি করেছিলেন, তার মধ্যে প্রথম সারিতে ছিল, থানার কর্মীরা ছাড়াও প্রচুর স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করে নজরদারি বাড়াতে হবে। সাইরেনের ব্যবস্থা করতে হবে। ওয়াচ টাওআর বসাতে হবে এবং একই সঙ্গে সমুদ্রে নামার বিপজ্জনক এলাকা ঘিরে দিতে হবে। কিন্তু কোথায় কী? এক মাস হয়ে গেল এখনও স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ হয়নি, থানার সিভিক ভলান্টিয়ার বাড়েনি। সমুদ্রে নামার বিপজ্জনক এলাকা ঘিরে ফেলের কোনও চিহ্নমাত্র নজরে এল না সৈকতে।
বকখালিতেও সমুদ্রের অনেক গভীরে গিয়েই স্নান করছেন পর্যটকেরা। প্রয়োজনের তুলনায় থানার স্বেচ্ছাসেবক একেবারেই কম। শনিবার থেকেই কলকাতা সংলগ্ন চারটি জেলার প্রচুর পর্যটক বকখালি এবং হেনরিতে হাজির হয়েছেন। হোটেলগুলিতে জায়গা নেই। এ রকম সময়েই দুর্ঘটনার আশঙ্কা তৈরি হয় বলে জানালেন স্থানীয় মানুজন।
কবে বাড়ানো হবে বকখালির নিরাপত্তা?
জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাওয়ের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা যায়নি। এসএমএস করেও জবাব আসেনি। তবে মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বাড়তি স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগের কাজ চলছে। ওয়াচ টাওয়ার বকখালিতে তৈরি করা হচ্ছে। সমুদ্রে নামার বিপজ্জনক জায়গা ঘিরে ফেলারও পরিবেশের কারণে আটকাতে পারে বলে ধীরে চলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy