Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

উত্তেজনাপ্রবণ এলাকায় ঢুকল বাহিনী

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ভাঙড়ের ২৭৭টি বুথের মধ্যে ১১৫টি বুথকে অতি স্পর্শকাতর এবং স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তিনটি থানা এলাকায় ১০টি ‘কুইক রেসপন্স টিম’ থাকবে।

টহল: বাসন্তীর চড়াবিদ্যার কুমড়োখালি গ্রামে। ছবি: প্রসেনজিৎ সাহা

টহল: বাসন্তীর চড়াবিদ্যার কুমড়োখালি গ্রামে। ছবি: প্রসেনজিৎ সাহা

নিজস্ব প্রতিবেদন
ভাঙড় ও বসিরহাট  শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০১৯ ০২:০৭
Share: Save:

ভাঙড়ের ২৭৭টি বুথের দায়িত্ব সামলাবে ১৮ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। মঙ্গলবার কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স, ভাঙড় ও কাশীপুর থানায় আসে এই বাহিনী। এর মধ্যে ভাঙড় থানায় ৭, কাশীপুর থানায় ৫ ও কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানায় ৬ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন হয়েছে। ভাঙড় বিধানসভার ২৭৭টি বুথের মধ্যে কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানা এলাকায় ৪৬টি, কাশীপুর থানা এলাকায় ১৫০টি ও ভাঙড় থানা এলাকায় ৮১টি বুথ রয়েছে।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ভাঙড়ের ২৭৭টি বুথের মধ্যে ১১৫টি বুথকে অতি স্পর্শকাতর এবং স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তিনটি থানা এলাকায় ১০টি ‘কুইক রেসপন্স টিম’ থাকবে। প্রতিটি টিমে ১ সেকশন কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে। নির্বাচনের আগে অভিযান চালিয়ে কাশীপুর থানা এলাকা থেকে ইতিমধ্যেই ৪ জনকে আগ্নেয়াস্ত্র-সহ ধরা হয়েছে।

গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভাঙড় বিধানসভা এলাকার অধিকাংশ বুথে কোনও নির্বাচন হয়নি। এলাকাবাসীর দাবি, শাসকদলের অত্যাচারের ভয়ে অধিকাংশ পঞ্চায়েতে বিরোধীরা কোনও প্রার্থী দিতে পারেনি। ভাঙড় ২ ব্লকের পোলেরহাট ২ পঞ্চায়েতের ১৬টি আসনের মধ্যে ৮টি ভোট হয়েছিল। ওই ৮টি আসনে তৃণমূলের সঙ্গে সমানে টক্কর দিয়েছিল ভাঙড়ের জমি কমিটি সমর্থিত নির্দল। আটটির মধ্যে তৃণমূল পেয়েছিল ৩টি, নির্দল পেয়েছিল ৫টি। এ বার পোলেরহাট ২ পঞ্চায়েতের ২১টি বুথকে স্পর্শকাতর হিসেবে ধরা হয়েছে।বিরোধীদের অভিযোগ, ভাঙড়ে যে কোনও নির্বাচনেই শাসকদলের সন্ত্রাস হয়। আরাবুল ইসলাম-সহ একাধিক তৃণমূল নেতার অত্যাচারে সাধারণ মানুষ ভোট দিতে পারেন না। এ বার যাতে মানুষ তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন, তা সুনিশ্চিত করা কমিশনের দায়িত্ব। ভাঙড়ের জমি কমিটির সদস্য মির্জা হাসান বলেন, ‘‘তৃণমূল যাতে কোনও ভাবেই ভোট লুট করতে না পারে, নির্বাচন কমিশনের তা নিশ্চিত করা উচিত। সাধারণ মানুষকে বলব, কোথাও শাসকদলকে ভোট লুট করতে দেখলে সঙ্গে সঙ্গে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন এবং কমিশনকে জানান।’’

ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতির সহকারী সভাপতি আরাবুল ইসলাম অবশ্য বলেন, ‘‘৩৪ বছরে বামফ্রন্ট ভাঙড়ের মানুষের জন্য কিছুই করেনি। আমাদের আমলে ভাঙড়ে অনেক উন্নয়ন হয়েছে। ভাঙড়ের মানুষ আমাদের সঙ্গেই আছেন।’’ তিনি বলেন, ‘‘নির্বাচনের দিন জমি কমিটি এলাকায় গন্ডগোল করতে পারে। আমরা প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করব, সে দিকে তারা যেন লক্ষ্য রাখে।’’ বসিরহাটেও বিভিন্ন এলাকায় রাজনৈতিক পরিবেশ উত্তপ্ত হতে শুরু করেছে। বাড়ি ভাঙচুর, মারধর, লুঠপাট বাড়ছে। এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী বসিরহাটে পৌঁছনোয় খানিকটা স্বস্তি পেয়েছেন সন্দেশখালি, হাড়োয়া, হাসনাবাদ, হিঙ্গলগঞ্জ, মিনাখাঁর মতো উত্তেজনাপ্রবণ এলাকার মানুষজন। বসিরহাটের জন্য বরাদ্দ হয়েছে ৭০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সপ্তম দফা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই তৃণমূল-বিজেপির মধ্যে হিংসার ঘটনা ঘটা শুরু হয়েছে। সন্দেশখালির খুলনা, কোড়াকাটি, জেলিয়াখালি, সরবেড়িয়া, দুর্গামণ্ডপ, ধুচনিখালি, আতাপুর, মনিপুর-সহ বিভিন্ন এলাকায় গন্ডগোল শুরু হয়েছে। মানুষ রাজনৈতিক অশান্তির জেরে আতঙ্কিত হয়ে গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিতে শুরু করেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2019 CRPF Bhangar Basirhat
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE