স্ট্রং রুমে সিসি ক্যামেরা। বনগাঁয়
বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রে ভোট শেষ হয়েছে ৬ মে। স্ট্রং রুমে রাখা ইভিএমের উপরে নজরদারি নিয়ে চতুর্দিকে শোরগোল উঠল ভোটের শেষ পর্যায়ে। সোস্যাল মিডিয়ায় ভিডিও ক্লিপিং ছড়িয়ে ইভিএম বদলের অভিযোগও উঠল পরের দিকেই। দেশের একাধিক দলের পাশাপাশি তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় নির্দেশ দিলেন দলের কর্মীরা যেন স্ট্রং রুমে নজর রাখেন চব্বিশ ঘণ্টা। তাঁর আশঙ্কা, ইভিএমে কারচুপি হতে পারে।
কিন্তু ৬ তারিখের পর থেকে বনগাঁয় কী ছিল সেই নজরদারি? তৃণমূল-সহ অন্য দলের অন্দরেও ঘুরছে প্রশ্নটা।
তৃণমূলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘ইভিএম সরিয়ে ফেলা হতে পারে এই আশঙ্কা রয়েছে আমাদের। তাই ভোটপর্ব মেটার পর থেকেই আমরা কলেজের বাইরে নজর রেখেছি। আমাদের দলের কর্মীরা পালা করে পাহারা দিচ্ছেন। রাতেও চলছে পাহারা।’’ দিন কয়েক আগে বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূলের যুগ্ম আহ্বায়ক গোপাল শেঠ নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়ে, ইভিএম সরিয়ে ফেলা হতে পারে এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছিলেন। তবে শেষ দফা ভোট মেটার পর নজরদারি যে বেড়েছে, সে কথা মানছেন দলের নেতারা।
বিজেপির বারাসত সাংগঠনিক জেলার সভাপতি প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, ‘‘যাদের হারের ভয় থাকে, তাদেরই ইভিএম সরানোর আশঙ্কা থাকে।’’
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, দীনবন্ধু কলেজে সাতটি স্ট্রং রুম করা হয়েছে। বনগাঁ লোকসভার অন্তর্গত সাতটি বিধানসভার ইভিএম আলাদা আলাদা সাতটি স্ট্রং রুমে রাখা আছে। স্ট্রং রুমের পাশেই সাতটি ঘরে গণনা কেন্দ্র করা হয়েছে। আজ, বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার সময়ে ভোট গণনার আগে স্ট্রং রুম থেকে কড়া পাহারায় গণনা কেন্দ্রের ঘরে নিয়ে আসা হবে।বুধবার দুপুরে দীনবন্ধু কলেজে গিয়ে দেখা গেল, স্ট্রং রুম পাহারায় ত্রিস্তর নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে। কলেজে ঢোকার মূল গেটের বাইরে রাজ্য পুলিশ টহল দিচ্ছে। মূল গেটের ভিতরে রয়েছে রাজ্য সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী। আর স্ট্রং রুম পাহারায় রয়েছেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা। মূল স্ট্রং রুমের ধারেকাছে কাউকে ঘেঁষতে দেওয়া হচ্ছে না। সাংবাদিকদেরও সেখানে যাওয়া নিষেধ। কলেজের মধ্যে সাধারণের প্রবেশ নিষেধ। পুরো চত্বরে নজরদারি করছে বাহিনী। স্ট্রং রুম-সহ গোটা কলেজ চত্বর সিসি ক্যামেরায় মুড়ে ফেলা হয়েছে। কলেজের মধ্যে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় সিসি ক্যামেরার মনিটর বসানো হয়েছে। সমস্ত রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের প্রতিনিধিরা দফায় দফায় গিয়ে মনিটরে স্ট্রং রুমের ছবি দেখে আসছেন।
বনগাঁর মহকুমাশাসক কাকলি মুখোপাধ্যায় সহ প্রশাসনিক কর্তারাও কলেজে শিবির গেড়েছেন। তাঁরাও সর্বদা স্ট্রং রুমের নিরাপত্তার উপর নজর রাখছেন। এ দিন দুপুরে কলেজে গিয়ে দেখা গেল, তৃণমূল প্রার্থী মমতা ঠাকুরের দুই প্রতিনিধি পরেশ চৌধুরী ও প্রবীর সাহা মনিটরে স্ট্রং রুমের নিরাপত্তার ছবি দেখছেন। সে সময়ে অবশ্য অন্য প্রার্থীদের প্রতিনিধিদের দেখা মেলেনি। যদিও সব প্রার্থীর প্রতিনিধিরাই সিসি ক্যামেরার মনিটরে নজরদারির মাধ্যমে পাহারা দিতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন। তৃণমূলের তৎপরতা তুলনায় বেশি। মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘স্ট্রং রুমের নিরাপত্তা সুরক্ষিত করা হয়েছে। অভিযোগ শুনে পদক্ষেপ করা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy