Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

পঞ্চায়েত ভোটের স্মৃতি টাটকা, আতঙ্কে মানুষ

অতীতে এমন সন্ত্রাস কোনও ভোটে দেখেননি এলাকাবাসী। ফের ভোটের আবহে আতঙ্কে দিন গুনছেন তাঁরা।

টহল শুরু হয়েছে বাহিনীর। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

টহল শুরু হয়েছে বাহিনীর। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

সীমান্ত মৈত্র
বাগদা শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৯ ০৫:৪৬
Share: Save:

বুথ জ্যাম, ছাপ্পা, ব্যালট বাক্স লুট, ব্যালট ছিনতাই করে পুড়িয়ে দেওয়া, প্রিসাইডিং অফিসারের মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকানো, বোমাবাজি, গুলি— গত পঞ্চায়েত ভোটে এমন বহু সন্ত্রাসের সাক্ষী ছিল বাগদা। বেশ কয়েকটি বুথে ফের ভোট নিতে হয়েছিল। অতীতে এমন সন্ত্রাস কোনও ভোটে দেখেননি এলাকাবাসী। ফের ভোটের আবহে আতঙ্কে দিন গুনছেন তাঁরা।

৬ মে বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রের ভোট। বাগদা এলাকাটি বনগাঁ কেন্দ্রের অন্তর্গত। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ হেলেঞ্চা বাজার এলাকা থেকে বনগাঁ-বাগদা সড়ক ধরে কেন্দ্রীয় বাহিনীর রুটমার্চ শুরু হয়েছে। আষাঢ়ু, আমডোব, গাঙ্গুলিয়া এলাকাতেও রুটমার্চ হয়েছে। বাহিনীর সঙ্গে ছিলেন, এসডিপিও (বনগাঁ) অশেষবিক্রম দস্তিদার, থানার ওসি অসীম পাল, বাগদার বিডিও জ্যোতিপ্রকাশ হালদার। কেন্দ্রীয় বাহিনীর রুটমার্চ দেখে পথচলতি বহু মানুষ সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে পড়েন। দোকানিরা বেরিয়ে আসেন। অনেকেই বললেন, ‘‘ভোটের দিন পর্যন্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকুক এলাকায়। তা হলে নিজের ভোটটা অন্তত দিতে পারব।’’ বিডিও দোকানিদের আশ্বস্ত করে বলেন, ‘‘কোনও অভিযোগ থাকলে প্রশাসনকে জানান।’’

ভোটের দিন সব থেকে বেশি অশান্তি ছড়িয়েছিল আমডোব উচ্চ বিদ্যালয়ে। গুলি-বোমাবাজি, মারপিট— কিছুই বাদ যায়নি। অভিযোগ, প্রিসাইডিং অফিসারের মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে ব্যালট লুট করা হয়েছিল। এ দিন স্কুল চত্বরে জওয়ানদের দেখে ভরসা পান গ্রামবাসী।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

তৃণমূল নেতৃত্ব জানান, তাঁরা চান কেন্দ্রীয় বাহিনী আরও বেশি করে বাগদায় রুটমার্চ করুক। দলের বাগদা ব্লকের পর্যবেক্ষক তথা বনগাঁ পুরসভার পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্য বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপির সন্ত্রাসের ফলে আমাদের বহু কর্মী জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। আমরা চাই, কেন্দ্রীয় বাহিনী ভোটে নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করুক। যাতে মানুষ নিজেদের ভোট নিজেরা দিতে পারেন।’’

সিপিএম সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েত ভোটে বাগদা ব্লকে সন্ত্রাসের কথা ইতিমধ্যেই নির্বাচন কমিশনকে জানানো হয়েছে। সিপিএম জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পঙ্কজ ঘোষ বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটে শাসকদল বাগদা ব্লকে ভোট লুট করেছিল। উল্টে আমাদের কর্মীদের মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো হয়েছিল। কেন্দ্রীয় বাহিনী কী করবে সেটা তাঁদের বিষয়।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা সকল নাগরিকদের কাছে আবেদন করছি, আপনারা নিজেদের ভোট নিজেরা দিতে এগিয়ে আসুন। প্রয়োজনে এ নিয়ে এলাকায় নাগরিক কনভেনশন ডাকা হবে।’’

বাসিন্দারা জানিয়েছেন, পঞ্চায়েত ভোটে মূলত বিজেপি ও তৃণমূলের মধ্যেই মারপিট বেধেছিল। বিজেপির বারাসত সাংগঠনিক জেলার সভাপতি প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটে বাগদায় কারা বোমাবাজি, ভোট-লুট, সন্ত্রাস করেছে তা এলাকার মানুষ জানেন। তবে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে দেখে মানুষের আত্মবিশ্বাস বাড়বে।’’

জগদীশপুর, চক কাঁঠালিয়া, ধুলোনি, মালিপোতা, কুলধরপুরের মতো এলাকাতেও পঞ্চায়েত ভোটে সন্ত্রাস ছড়িয়েছিল। এ দিন অবশ্য ওই সব এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনী রুটমার্চ না করায় বাসিন্দারা অনেকেই হতাশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2019 Panchayat Election
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE