Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

মধ্যমগ্রামের বাড়ি থেকে উদ্ধার হল দম্পতির দেহ

পুলিশ জানিয়েছে, মৃতেরা হলেন শম্ভুনাথ দাস (৪৮) এবং তাঁর স্ত্রী স্বপ্না দাস (৪৫)। শ্রীপুরের একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন তাঁরা। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, স্বপ্নাকে শ্বাসরোধ করে খুন করে নিজে দড়ির ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন শম্ভু।

শম্ভুনাথ দাস ও স্বপ্না দাস।

শম্ভুনাথ দাস ও স্বপ্না দাস।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:২৭
Share: Save:

সাতসকালেই ঘরের দরজা খুলে দিতেন তাঁরা। সোমবার তেমন না হওয়ায় অবাকই হয়েছিলেন পড়শিরা। দরজায় ধাক্কা দিয়ে সকাল ন’টাতেও সাড়া মেলেনি। শেষ পর্যন্ত দরজা ভেঙে উদ্ধার হয় মাঝবয়সি দম্পতির দেহ। মধ্যমগ্রামের শ্রীপুরের ঘটনা।

পুলিশ জানিয়েছে, মৃতেরা হলেন শম্ভুনাথ দাস (৪৮) এবং তাঁর স্ত্রী স্বপ্না দাস (৪৫)। শ্রীপুরের একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন তাঁরা। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, স্বপ্নাকে শ্বাসরোধ করে খুন করে নিজে দড়ির ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন শম্ভু।

পুলিশ জেনেছে, ওই দম্পতি নিঃসন্তান ছিলেন। তা নিয়ে তাঁদের মধ্যে প্রায়ই অশান্তি হত। পাশাপাশি স্ত্রীকে সন্দেহ করতেন শম্ভু। তার জেরেই এই ঘটনা কি না, তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। শম্ভু স্ত্রীকে খুন করেছেন, না কি তাঁর মৃত্যুর কারণ অন্য, তা জানতে দু’টি দেহই ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রের খবর, রবিবার রাতে ওই এলাকায় কীর্তনের আসর বসেছিল। সে জন্য পড়শিরা কেউই বাড়ি ছিলেন না। সোমবার সকালে পুলিশ গিয়ে দেখে, স্বপ্নার দেহ বিছানায় শোওয়ানো। আর সিলিং থেকে ঝুলছে শম্ভুর দেহ। আপাতদৃষ্টিতে স্বপ্নার দেহে কোনও দাগ বা আঘাতের চিহ্ন মেলেনি। পুলিশের ধারণা, তাঁকে বালিশ চাপা দিয়ে খুন করা হয়ে থাকতে পারে।

তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, মাসখানেক আগে শ্রীপুরের বাড়িতে আসেন শম্ভুরা। ওই বাড়িতে আরও ভাড়াটে রয়েছেন। শম্ভু আগে একটি বেসরকারি সংস্থায় চতুর্থ শ্রেণির কর্মী ছিলেন। মাঝে কিছুই করতেন না। সম্প্রতি ওই এলাকায় একটি ফাস্টফুডের দোকান দিয়েছিলেন। তবে সেই দোকানও নিয়মিত খুলতেন না তিনি।

স্বপ্নাদের পড়শিরা জানান, এই বাড়িতে আসা ইস্তক তাঁদের মধ্যে অশান্তি লেগেই ছিল। সেই ঝামেলা মাঝেমধ্যে এমন পর্যায়ে পৌঁছত যে থামাতে ছুটে আসতেন প্রতিবেশীরাই। তাঁদের জিজ্ঞাসা করে পুলিশ জেনেছে, পড়শিরা এলে চরম বিরক্ত হতেন শম্ভু। বলতেন, ‘‘আপনারা কী দেখতে এসেছেন? এটা আমাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। আপনারা নাক গলাবেন না।’’ পুলিশ জানিয়েছে, তার পরেও এমন ঝামেলা হয়েছে যে, পড়শিরা যেতে বাধ্য হয়েছেন। এর আগেও পারিবারিক অশান্তির জন্য দাস দম্পতি একাধিক বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন বলে জেনেছে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে খবর, শম্ভু স্নায়ুরোগের ওষুধ খেতেন। সম্প্রতি তাঁর সন্দেহ এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে তিনি দিন কয়েক আগে স্ত্রীকে তালা বন্ধ করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। তার পরেই বাড়িওয়ালা শম্ভুকে জানান, এমন করলে বাড়ি ছাড়তে হবে। পুলিশ জানিয়েছে, শম্ভু মধ্যমগ্রামের বাসিন্দা। স্বপ্নারা থাকতেন কলকাতায়। তাঁর পরিজনেরা জানিয়েছেন, বহু বার তাঁদের ঝগড়া মেটানোর চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে কোনও সম্পর্ক রাখতেন না শম্ভু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death Dead Body Couple Madhyamgram
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE