Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

থানায় এসে জুড়ল দম্পতির সম্পর্কের ফাটল

এগারো বছরের দাম্পত্য জীবন শেষ হতে বসেছিল ভুল বোঝাবুঝিতে। একে অন্যের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় নিয়ে পুলিশের কাছে হাজির হয়েছিলেন তাঁরা।

সপরিবার: ছেলের সঙ্গে প্রদীপ ও শম্পা। ছবি: সুমন সাহা

সপরিবার: ছেলের সঙ্গে প্রদীপ ও শম্পা। ছবি: সুমন সাহা

সমীরণ দাস
জয়নগর শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:০৫
Share: Save:

টোপর-মকুট পরে বর-কনে। পাশে দাঁড়িয়ে ছেলে। বাবা-মায়ের পুনর্মিলন দেখে হাসি ধরে না বছর আটেকের অভিরাজের।

এগারো বছরের দাম্পত্য জীবন শেষ হতে বসেছিল ভুল বোঝাবুঝিতে। একে অন্যের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় নিয়ে পুলিশের কাছে হাজির হয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু আইনের পথে না গিয়ে মানবিকতার নজির দেখিয়ে স্বামী-স্ত্রীকে মেলাল জয়নগর থানার পুলিশ।

বিবাদ ভুলে ফের এক সঙ্গে থাকার শপথ নিলেন দু’জনেই। জয়নগরের কাঁসারি পাড়ার প্রদীপ দাসের সঙ্গে বিয়ে হয় শাহাজাদাপুরের শম্পার। ভালবেসেই বিয়ে করেছিলেন দু’জন। বিয়ের বছর তিনেকের মধ্যে জন্ম হয় ছেলের। দিব্যি চলছিল সংসার।

এক সময়ে মাথাচাড়া দেয় কলহ। নানা ভুল বোঝাবুঝিতে ফাটল ধরে সম্পর্কে। বছরখানেক আগে শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে ছেলেকে নিয়ে বাপের বাড়িতে চলে যান শম্পা। তারপর থেকে আলাদাই থাকছিলেন দু’জন। পারস্পরিক ভুল বোঝাবুঝিও বাড়ছিল। এক সময়ে দু’পক্ষই শরণাপন্ন হন পুলিশের।

দিন কয়েক আগে প্রদীপের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে জয়নগর থানায় আসেন শম্পা। বিচ্ছেদ চান তিনি। একই ভাবে শম্পার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে চান প্রদীপ। স্বামী-স্ত্রীর কথা শুনে দু’জনকে নিয়ে এক সঙ্গে বসে সমস্যা মেটাতে উদ্যোগ করে পুলিশ।

জয়নগর থানার পুলিশ আধিকারিক দীপঙ্কর দাসের কথায়, ‘‘দু’জনের মধ্যে কিছু সমস্যা তৈরি হয়েছিল। স্বামী-স্ত্রীর স্বাভাবিক সম্পর্কটা নষ্ট হচ্ছিল। বাচ্চাটাও ভুগছিল। ওঁদের সঙ্গে কথা বলে মনে হয়েছিল, সম্পর্কটা এখনও জোড়া দেওয়া যায়। আমরা দু’জনকে নিয়ে বসে কাউন্সেলিং করি।’’ পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ না করে বাচ্চার ভবিষ্যতের কথাটা ভাবতে অনুরোধ করা হয় স্বামী-স্ত্রীকে। শেষমেশ নিজেদের ভুল বুঝে দু’জনে ফের সংসার করতে রাজি হন।

শুক্রবার সন্ধ্যায় স্বামী-স্ত্রীকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান জয়নগর থানার আইসি অতনু সাঁতরা। পুলিশ কর্মীদের উদ্যোগে থানা লাগোয়া মন্দিরে টোপর-মুকুট মাথায় পড়ে নতুন করে জীবন শুরুর শপথ নেন স্বামী-স্ত্রী। প্রদীপ বলেন, ‘‘একটা দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। সেটাকে মিটিয়ে আবার নতুন জীবন শুরু করব।’’ শম্পার কথায়, ‘‘এই ভাবে আবার জীবনটাকে শুরু করার সুযোগ পাব ভাবিনি। এই সুযোগটাকে কাজে লাগিয়ে পরবর্তী জীবনটা সুন্দর করতে চাই।’’ পুনর্মিলনের জন্য জয়নগর থানার আধিকারিকদের কাছে কৃতজ্ঞ দু’জনেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Police Family Dispute Marriage
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE