Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

পুড়ে খাক দোকান, সর্বস্বান্ত পরিবার

কাকদ্বীপ ও ডায়মন্ড হারবার থেকে দমকলের দু’টি ইঞ্জিন এসে ঘণ্টা দু’য়েকের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে।

আগুন: কাকদ্বীপে। ছবি: দিলীপ নস্কর।

আগুন: কাকদ্বীপে। ছবি: দিলীপ নস্কর।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
কাকদ্বীপ শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০১৮ ০২:১০
Share: Save:

আগুনে পুড়ে ভস্মীভূত হল ৯টি দোকান। সর্বস্বান্ত হয়েছে বেশ কিছু পরিবার।

বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে কাকদ্বীপের ১১৭ নম্বর জাতীয় সড়কের বিশালাক্ষীপুর আশ্রম মোড়ে। পরে কাকদ্বীপ ও ডায়মন্ড হারবার থেকে দমকলের দু’টি ইঞ্জিন এসে ঘণ্টা দু’য়েকের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই মোড়ের পাশে রয়েছে নানা রকমারির দোকান। ওই দিন রাত ৮টা নাগাদ কবিতা মাইতির টিভি মেরামতির টালির চালের দোকান থেকে প্রথম ধোঁয়া বেরোতে দেখেন পাশের দোকানিরা। তাঁরা নিজেরাই কলসি-বালতি নিয়ে জল দিতে থাকেন। কিন্তু ওই দোকানটির শাটার বন্ধ থাকায় ভিতরে আগুন জ্বললেও তা কোনও ভাবে নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। ওই মোড়ের টহলদারি পুলিশ খবর দেয় কাকদ্বীপ দমকলকেন্দ্রে। সেখান থেকে একটি ইঞ্জিন আসে। কিন্তু আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। এরপরেই ডায়মন্ড হারবার দমকলকেন্দ্র থেকে আরও একটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে এসে প্রায় ঘণ্টা দু’য়েকের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণ করে।

দমকল সূত্রের খবর, ততক্ষণে ওই দোকানের পাশে মুদিখানা, কম্পিউটার, খাবারের দোকান মিলিয়ে ৯টি দোকান পুড়ে খাক হয়ে গিয়েছে। খাবারের দোকান চালাতেন সুভাষ দন্ডপাট নামে এক যুবক। ওই দোকানেই তাঁর স্ত্রী ও মেয়ে নিয়ে থাকতেন তিনি। সুভাষ ও তাঁর স্ত্রী দু’জনেই প্রতিবন্ধী। ওই দিন রাতে আগুনে দোকানটি পুড়ে যায়। তাঁদের এখন মাথা গোঁজারও জায়গা নেই। সুভাষ বলেন, ‘‘খাবার তো নেই। জামাকাপড়ও নেই। কী করব বুঝতে পারছি না।’’

সুভাষ জানান, বছর তিরিশ আগে নদীর চরে কুঁড়ে ঘরে থাকতাম। পরে ওই মোড়ের পাশে কোনও ভাবে খাবারের দোকান ও মাথা গোঁজার ঠাঁই করে নিয়েছিলেন তিনি। আগুনে পুড়ে তাও শেষ। বুধাখালি পঞ্চায়েত থেকে তাঁদের পোশাক কিনে দেওয়া হয়েছে।

শুধু তিনি নয় সর্বস্বান্ত হয়েছেন টিভির দোকান মালিকও। ওই দোকানের পরিবারের সান্তনা মাইতি চোখের জল মুছতে মুছতে বলেন, ‘‘কয়েক লক্ষ টাকার নতুন টিভি-ফ্রিজ পুড়েছে। সেই সঙ্গে খরিদ্দারদের সারাতে দেওয়া অনেক টিভি পুড়ে খাক হয়ে গিয়েছে। তাঁদের কাছে কী জবাব দেব জানি না।’’ ওই দিন রাতে ঘটনাস্থলে আসেন স্থানীয় বিধায়ক তথা সুন্দরবন উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী মন্টুরাম পাখিরা, এসডিও সৌভিক চট্টোপাধ্যায়-সহ প্রশাসনিক আধিকারিকরা।

প্রতিবেশী দোকানি দেবদুলাল সাউ বলেন, ‘‘ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ২৫ থেকে ৩০ লক্ষ টাকা। এত বড় ধাক্কা সামলানো সহজ হবে না। এই মোড়ের ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের ক্ষতিপূরণের জন্য আজ ব্যবসায়ী কমিটির পক্ষ থেকে মন্ত্রীর কাছে আবেদন জানাব।’’

পুলিশ ও দমকলের প্রাথমিক ভাবে অনুমান, শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগেছে। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kakdwip Fire কাকদ্বীপ
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE