Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
amphan

বাইরে গেলে কাজ মিলবেই, বিশ্বাস পিন্টুদের

আমপানের পরে বাড়ি ফেরেন। আমপানে নদীর বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছিল পিন্টুদের মাটির বাড়ি। স্ত্রী-সন্তানকে কয়েক দিন খুব কষ্টে কাটান।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নবেন্দু ঘোষ
হিঙ্গলগঞ্জ শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৪:২২
Share: Save:

হিঙ্গলগঞ্জের কুমিরমারি গ্রামের বাসিন্দা পিন্টু দলুই বেঙ্গালুরুতে পোশাক তৈরির কারখানায় কাজ করতেন। লকডাউনে সমস্যায় পড়েছিলেন। আমপানের পরে বাড়ি ফেরেন। আমপানে নদীর বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছিল পিন্টুদের মাটির বাড়ি। স্ত্রী-সন্তানকে কয়েক দিন খুব কষ্টে কাটান। মাসখানেক আগে স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে বেঙ্গালুরুতে চলে গিয়েছেন তিনি। পিন্টু বলেন, ‘‘আমার জমি নেই। যে সামান্য বাড়িটুকু ছিল, তা-ও ভেঙে গেল। গ্রামে কাজও নেই। এ ছাড়া, সরকারি কোনও সুবিধা পেলাম না। তাই সকলকে নিয়ে বেঙ্গালুরু চলে আসতে বাধ্য হলাম।’’ পিন্টু আরও জানান, বেঙ্গালুরুতে স্বামী-স্ত্রী যা আয় করেন, তার বেশিরভাগটাই থাকা-খাওয়ায় চলে যায়। ছেলে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ত। কিন্তু এখানে টাকার অভাবে কোথাও ভর্তি করতে পারছেন না। তবু আজ বাদে কাল রোজগার হবে, এই ভরসাটুকু অন্তত ভিনরাজ্যে আছে, জানান পিন্টু। কালীতলা পঞ্চায়েতের বাসিন্দা সঞ্জয় মণ্ডল তামিলনাড়ুতে সুতোর কারখানায় কাজ করতেন। স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে থাকতেন। লকডাউনের পরে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। করোনার প্রকোপ থেকে বাঁচতে প্রায় ১২ হাজার টাকা খরচ করে গ্রামে ফেরেন। তবে গ্রামে কোনও কাজ না পেয়ে এ বার বাবা-মাকে সঙ্গে নিয়ে তামিলনাড়ুতে চলে গিয়েছেন। তামিলনাড়ু থেকে সঞ্জয় বলেন, ‘‘বাড়িতে কাজ পাইনি। বাড়ি থাকলে করোনা আক্রান্ত হই না হই, খাওয়ার কষ্ট ভোগ করতেই হত। তাই করোনার ভয়কে সঙ্গে নিয়েই চলে এলাম।” সঞ্জয় জানান, তামিলনাড়ুতে সরকারি রেশনে বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী পাচ্ছেন। সেই সঙ্গে সপ্তাহে ৫ দিন কাজ পাচ্ছেন। ২৮০ টাকা রোজ। তাই তামিলনাড়ুতে গিয়ে খুশি তাঁরা। একই অভিজ্ঞতার কথা বলেন কালীতলা পঞ্চায়েতের বাসিন্দা মনিরুল গাজিও।
আমপানের পরে এমন অনেকেই পরিবার নিয়ে তামিলনাড়ু গিয়েছেন। এ ছাড়া, হিঙ্গলগঞ্জের অনেক বাসিন্দা তামিলনাড়ু যাওয়ার জন্য প্রস্তুতিও নিচ্ছেন। এ বিষয়ে হিঙ্গলগঞ্জের বিডিও শাশ্বতপ্রকাশ লাহিড়ির সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা যায়নি। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অর্চনা মৃধা বলেন, ‘‘ব্লকে প্রায় ১১ হাজার পরিযায়ী শ্রমিকের একটা তালিকা তৈরি করে তাঁদের রেশন দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া, একশো দিনের প্রকল্পে কাজ দেওয়া হচ্ছে। যাঁরা গিয়েছেন তাঁরা বাইরের রাজ্যে বাড়তি আয়ের আশায় গিয়েছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

amphan lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE