Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

গঙ্গার গ্রাসে লোকালয়, হেলদোল নেই পুরসভার

বরাহনগর চিনি কোঠি লাইনের বাসিন্দাদের এই আফসোস যুক্তিসঙ্গত। তাঁরা জানান, গঙ্গার পাড় বাঁচাতে একটি দেওয়াল ছিল। বছর দুই আগে তার গঙ্গাপ্রাপ্তি হয়েছে।

বিপদ: এ ভাবেই ধীরে ধীরে তলিয়ে যাচ্ছে লোকালয়। নিজস্ব চিত্র

বিপদ: এ ভাবেই ধীরে ধীরে তলিয়ে যাচ্ছে লোকালয়। নিজস্ব চিত্র

সৌরভ দত্ত
শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০১৮ ০৫:৪৪
Share: Save:

গঙ্গার ভাঙন ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছে জনবসতির দিকে। তা সরেজমিন দেখতে পাড়ের ঢালে দাঁড়ানোর সময়ে ভারসাম্য রাখতে সমস্যা হচ্ছিল। উপর থেকে তা দেখে সাত বছরের সাজিদ হুসেন বলে উঠল, ‘‘দাদা, সাঁতার জানো? জায়গাটা কিন্তু ভাল নয়।’’ শুনে স্থানীয় বাসিন্দা শেখর রাওয়ের মন্তব্য, ‘‘বাচ্চাটা যা বুঝেছে, হাজার চেষ্টা করেও পুরসভাকে কিন্তু তা বোঝানো যাচ্ছে না।’’

বরাহনগর চিনি কোঠি লাইনের বাসিন্দাদের এই আফসোস যুক্তিসঙ্গত। তাঁরা জানান, গঙ্গার পাড় বাঁচাতে একটি দেওয়াল ছিল। বছর দুই আগে তার গঙ্গাপ্রাপ্তি হয়েছে। এর পরে ধীরে ধীরে গঙ্গার ধারের মন্দির, বটগাছের পাশাপাশি তলিয়ে গিয়েছে চিনি কোঠি লাইন সংলগ্ন মাঠ। এখনও ওই এলাকায় রয়েছে ৬৩২টি কোয়ার্টার্স, একটি আশ্রম। উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে বৈদ্যুতিক চুল্লি। ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে সে সবই তলিয়ে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন আশ্রমের সম্পাদক ম্যানেজার রাম। তাঁর আশঙ্কা, ‘‘এই বর্ষাতেই আশ্রমের কার্যালয় না তলিয়ে যায়। কারণ মাটি আলগা হতে শুরু করেছে।’’

স্থানীয় সূত্রের খবর, গত বছরই বরাহনগর পুরসভার চেয়ারপার্সন অপর্ণা মৌলিকের কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়ে সমস্যার কথা জানান বাসিন্দারা। তাতে চিনি কোঠি লাইনের দক্ষিণ মিল ঘাট যে ক্রমেই বিপজ্জনক হয়ে উঠছে তা জানানো হয়। স্মারকলিপিতে বাসিন্দারা লিখেছেন, ‘‘আনুমানিক ১০ হাজার বর্গফুট এলাকা ভাঙনের জেরে কার্যত ঝুলন্ত অবস্থায়। হাজারেরও বেশি মানুষ এই এলাকায় বাস করেন। কিছু করুন!’’

অভিযোগ, এর পরে এক বছর পার হতে চললেও কিছুই কাজ হয়নি। বাসিন্দা রাজু দাসের দাবি, ‘‘প্রশাসনের সর্ব স্তরে দক্ষিণ মিল ঘাটের দুর্দশার কথা জানানো হয়েছে। গত বছর পুরসভা ঘেরাওয়ের পরিকল্পনা হয়েছিল। সে খবর পেয়ে তড়িঘড়ি ইঞ্জিনিয়ারেরা মাপজোখ করে যান। তবে কাজ শুরু হয়নি। আমাদের দাবি, পাড়ের মাটি যাতে আলগা না হয়, প্রশাসন সেই ব্যবস্থা নিক।’’

স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর পলি কয়ালের কথায়, ‘‘ওই এলাকার ভাঙন পরিস্থিতি সত্যিই উদ্বেগের। বিধায়ক, সাংসদ সকলকে জানিয়েছি। পুরসভার প্রতিটি মাসিক অধিবেশনে এ নিয়ে দরবার করছি। ফেরিঘাটে একটা মন্দিরের পাশেও ধস নেমেছে। তা-ও জানিয়েছি। কাজ না হলে কী করব!’’ চেয়ারপার্সন অপর্ণা মৌলিক বলেন, ‘‘ভাঙন রোধের কাজ সেচ দফতরের করার কথা। কাজ যাতে দ্রুত শুরু হয়, সে ব্যাপারে রাজ্য সরকারের কাছে আবারও আর্জি জানানো হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Erosion Soil Municipality
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE