Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Durga Puja

ঠাকুর দেখতে যাবই, এখনও বলছেন অনেকে

উৎসাহী: এখনও কন্টেনমেন্ট জ়োন নয় মণ্ডপ। সেই সুযোগে নিজস্বী তুলে রাখছেন দুই তরুণী। মঙ্গলবার গোবরডাঙায় ছবি তুলেছেন সুজিত দুয়ারি

উৎসাহী: এখনও কন্টেনমেন্ট জ়োন নয় মণ্ডপ। সেই সুযোগে নিজস্বী তুলে রাখছেন দুই তরুণী। মঙ্গলবার গোবরডাঙায় ছবি তুলেছেন সুজিত দুয়ারি

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০২০ ০১:৩৯
Share: Save:

জল কি কানে গেল জনতার? উৎসবের আবেগে গা ভাসাতে কতটা আকুলিবিকুলি চলছে মনের ভিতরে?

সোশ্যাল মিডিয়ায় আদালতের রায়ের পক্ষ নিয়ে যতটা সরব বাঙালি, পুজোর দিনে নতুন শাড়ির পাট ভাঙা না হলে অনেকের মনও যে ভাঙবে, সে ইঙ্গিত মিলল মঙ্গলবার। নতুন পোশাকের গন্ধ গায়ে মেখে একবার পুজো মণ্ডপে ঢুকব না— এমন গদগদ ভাবও কম নয়।

পরিবারের সকলের নতুন জামাকাপড়, জুতো কিনেছেন ভাঙড়ের কাশীপুরের ভট্টাচার্য বাড়ির বৌ সুপর্ণা। হাইকোর্টের রায় শোনার পরে মন ভারাক্রান্ত। বললেন, ‘‘ভেবেছিলাম এ বার পুজোয় বাইরে কোথাও প্রতিমা দর্শনে যাব না। তবে নতুন জামাকাপড় পরে বাচ্চাদের নিয়ে পাড়ার পুজো এবং আশপাশের এলাকার কয়েকটি মণ্ডপে ঘুরবো। গাড়িও ভাড়া করেছিলাম। এখন সব পরিকল্পনা বাতিল করতে হবে। তবে অঞ্জলি দিতে পাড়ার পুজোয় যেতেই হবে।’’

নতুন জামাকাপড় কিনে ফেলেছেন মিতালি কর্মকারও। তাঁর কথায়, ‘‘পুজোর সময়ে বাড়িতে আত্মীয়স্বজন আসেন। খুব হইহুল্লোড় হয়। পরিবারের সকলে মিলে এক সঙ্গে শহর ও শহরতলির পুজো মণ্ডপে ঘুরি। এ বার ঠিক করেছিলাম, এলাকার পুজোগুলোই দেখব। কিন্তু এখন তো দেখছি অঞ্জলি দেওয়াটাই মুশকিল হয়ে গেল। কী করব বুঝতে পারছি না।’’ নতুন জামা-শাড়ি পরার সুযোগ না পেলে বাড়ির লোকজনের মনখারাপ হয়ে যাবে, মনে করেন মিতালি। সে ক্ষেত্রে পায়ে হেঁটে আশপাশের কিছু মণ্ডপে যাওয়ারই পক্ষপাতী তিনি।

হাবড়া, বনগাঁয় মঙ্গলবারও পুজোর কেনাকাটা করতে বেরিয়েছিলেন অনেকে। হাবড়া শহরের তরুণী তৃষা সরকার এ দিন সকালে বাড়ির কাছে মণ্ডপে প্রতিমা দেখতে দেখতে বললেন, ‘‘এ বার পরিবারের সকলকে নিয়ে এক সঙ্গে ঠাকুর দেখতে বেরোনো যাবে না। দূর থেকে ঠাকুর দেখতে হবে। তবে ভাল লাগছে, শেষ পর্যন্ত পুজোটা হচ্ছে বলে। অন্য বছর পঞ্চমী থেকে বন্ধু, আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে রোজই ঠাকুর দেখতে বেরোতাম। এ বার একদিনই বেরোবো। দূর থেকেই প্রতিমা দর্শন সারব।’’ বনগাঁ শহরের বাসিন্দা অমিত সরকার পুজোয় কেনাকাটা করেছেন। বললেন, ‘‘বাড়িতে ছোট ছেলেমেয়ে রয়েছে। ঠাকুর দেখতে যাব। তবে সকালের দিকে ভিড় যখন কম থাকবে, তখনই বেরোব।’’ ডায়মন্ড হারবারের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সঞ্জয় প্রামাণিকের দুই ছোট ছেলেমেয়ে। জানালেন, করোনা আবহে এমনিই গত কয়েক মাস ধরে ছেলেমেয়েরা স্কুলে যেতে পারছে না। ঘরবন্দি হয়ে পড়েছে। পুজোর ক’দিন হইহুল্লোড় না করে উপায় নেই।

তাঁর কথায়, ‘‘আদালতের রায় নিয়ে ভাবছি না।’’ ক্যানিংয়ের কল্যাণ সরকার, নন্দিতা দাসদের পুজোর প্ল্যান-প্রোগ্রাম ছকে ফেলা হয়ে গিয়েছে। তাঁদের সাফ বক্তব্য, ‘‘পুজোর দিনগুলোতে কি বাড়িতে বসে কাটানো যায়? দু’এক দিন বেরোতেই হবে।’’ পুজোর পোশাক কিনলেও অবশ্য ঠাকুর দেখতে যাবেন না বলেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বনগাঁ শহরের বাসিন্দা, মানবাধিকার কর্মী দেবাশিস বসু। তাঁর কথায়, ‘‘অনেক ভেবেচিন্তে দেখলাম, এ বারটা বাড়ির বাইরে না বেরোলেই ভাল।’’ এই বিচক্ষণতাটুকুর দিকেই ইঙ্গিত করতে চেয়েছে আদালত, বলছেন সচেতন বহু নাগরিক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Durga Puja High Court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE