Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Safe Homes

সেফ হোমে রোগী কমছে উত্তরেও

বাড়িতে যাঁদের একান্তই আলাদা থাকার ব্যবস্থা নেই, তাঁরাই একমাত্র সেফ হোমে আসছেন। বর্তমানে জেলার কোভিড হাসপাতালগুলিতেও শয্যা খালি রয়েছে।

—প্রতীকী ছবি।

—প্রতীকী ছবি।

সুপ্রকাশ মণ্ডল
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০২০ ০৫:২০
Share: Save:

মাসখানেক আগের কথা। উত্তর ২৪ পরগনায় কোনও কোনও দিন কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা ৯০০ ছাড়িয়ে যাচ্ছে। কোভিড হাসপাতালগুলিতে ঠাঁই নেই রব। এমনকী, সেফ হোমেও ঠাঁই মেলা দুস্কর ছিল। এখন সে পরিস্থিতি অনেকটাই বদলেছে।

খাতায় কলমে কোভিড এখনও বিদায় নেয়নি। দৈনিক সংক্রমণ পাঁচশোর ঘরে নেমে এসেছে। তবুও সেফ হোমগুলিতে এখন আর স্থানাভাব নেই। পুরোপুরি খালি না হয়ে গেলেও রোগীর সংখ্যা অনেক কমেছে। বেশিরভাগ রোগী এখন বাড়িতে থেকে চিকিৎসা করাচ্ছেন বলে কোভিড রোগীদের সেফ হোমে আসার প্রবণতা অনেক কমেছে।

বাড়িতে যাঁদের একান্তই আলাদা থাকার ব্যবস্থা নেই, তাঁরাই একমাত্র সেফ হোমে আসছেন। বর্তমানে জেলার কোভিড হাসপাতালগুলিতেও শয্যা খালি রয়েছে। চিকিৎসকেরা বলছেন, পরীক্ষা পিছু পজ়িটিভ রোগীর সংখ্যা দিনদিন কমছে। সক্রিয় রোগীর সংখ্যা যে হারে কমছে, তাতে আগামী দিনে সেফ হোমের প্রয়োজন ফুরোতে পারে। তবে এখনই সেফ হোমগুলি বন্ধ করা হচ্ছে না।

প্রথম থেকেই রাজ্যে সংক্রমণে প্রথম স্থানে রয়েছে কলকাতা। তার পরেই রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা। দৈনিক আক্রান্ত-মৃত এবং সক্রিয় রোগীর সংখ্যায় বরাবরই কলকাতার ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলেছে এই পড়শি জেলা। অক্টোবর-নভেম্বরে কোনও কোনও দিন দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যায় কলকাতাকে ছাড়িয়ে গিয়েছে এই জেলা। গত এপ্রিল থেকে জেলায় সেফ হোম তৈরির কাজ শুরু হলেও মে মাস থেকে সেফ হোমের সংখ্যা বাড়তে শুরু করে।

জুন মাসে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ২০০ ছাড়ালে প্রতি পুরসভা এবং পঞ্চায়েতকে সেফ হোম তৈরি করতে বলে স্বাস্থ্য দফতর। পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য জেলায় অতিরিক্ত কয়েকটি সেফ হোমের পরিকাঠামো তৈরি করে রাখা হয়েছিল। যদিও সেগুলির প্রয়োজন পড়েনি। কোয়রান্টিন সেন্টার থেকে ‘ফিট’ শংসাপত্র নিয়ে বা সিংহভাগ পরিযায়ী শ্রমিক বাড়ি ফেরেন।

মূলত উপসর্গহীন রোগীদেরই সেফ হোমে রাখার নিদান দেওয়া হয়েছিল। জুলাই মাস থেকে সেফ হোমে রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। পরে স্বাস্থ্য মন্ত্রক নির্দেশিকা জারি করে জানায় বাড়িতে আলাদা থাকার সুযোগ থাকলে সেখানে থেকেই তাঁরা টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে চিকিৎসা করাতে পারেন। অবস্থার অবনতি হলে তাঁদের সরাসরি কোভিড হাসপাতালে আসার কথা বলা হয়। সেপ্টেম্বর থেকে সেফ হোমগুলিতে স্থানাভাব শুরু হয়।

তবে বাড়িতে থেকে চিকিৎসার সুযোগ থাকায়, সেফ হোমে আসার প্রবণতা কমতে থাকে। নভেম্বরের শেষ দিক থেকে সেফ হোমগুলিতে রোগীর সংখ্যা কমতে শুরু করে। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি জেলার বেশিরভাগ সেফ হোমে রোগী নেই। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্যারাকপুর মহকুমার বেশিরভাগ সেফ হোম বর্তমানে রোগী শূন্য। ভাটপাড়া-নৈহাটি-কাঁচরাপাড়া-ব্যারাকপুরের সেফহোমগুলিতে গুটিকয়েক রোগী রয়েছেন। বারাসত এবং মধ্যমগ্রামের সেফ হোমেও রোগীর সংখ্যা অনেক কমে এসেছে। বারাসত জেলা হাসপাতালের সুপার সুব্রত মণ্ডল বলেন, “বেশিরভাগ আক্রান্ত বাড়িতে থেকেই চিকিৎসা করাচ্ছেন। ফলে সেফ হোমগুলিতে রোগীর সংখ্যা এখন অনেক কম। কোভিড হাসপাতালেও শয্যা খালি রয়েছে। যাঁদের অবস্থা জটিল হচ্ছে, তাঁদের আমরা কোভিড হাসপাতালে নিয়ে আসছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Safe Homes Health officials
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE