শিল্পা দেবনাথ
বসিরহাটের যুবক কমল দেবনাথকে খুনের অভিযোগে তাঁর স্ত্রীর বন্ধু রাজা দাস ওরফে ছোটকা নামে একজনকে গ্রেফতার করল পুলিশ।
কমলের স্ত্রী শিল্পা আগেই ধরা পড়েছিল। আপাতত তাকে ১৪ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করছে পুলিশ। প্রাথমিক ভাবে তাদের অনুমান, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরেই স্বামীকে খুনের চক্রান্ত করেছিল শিল্পা। এই কাজে তাকে সাহায্য করে রাজা। বসিরহাটের নেওড়াদিঘি পাড়ার বাসিন্দা এই যুবক শিল্পা ও তার প্রেমিকের পূর্ব পরিচিত। এই যুবকের মাধ্যমেই বিয়ের কয়েক বছর আগে প্রেমিকের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছিল শিল্পার। বিয়ের আগে বার দু’য়েক তার সঙ্গে বাড়ি ছেড়েছিল ওই তরুণী। বিয়ের আগের দিনও পালায়। কোনও মতে খুঁজে পেতে এনে মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলেন বাড়ির লোকজন।
কমলের পরিবার বিষয়টি আগে জানত না বলেই জানতে পেরেছেন তদন্তকারী অফিসারেরা। দিন কুড়ি আগে কমলের মায়ের মৃত্যু হয়। তার কয়েক দিন আগে শিল্পা ফের প্রেমিকের সঙ্গে বাড়ি ছেড়েছিল। সে বার ফিরে আসার পরে দুই পরিবারের সালিশি হয়। সংসারে মন দেবে বলে কথা দিয়েছিল শিল্পা। তারপরেও এই কাণ্ড।
পুলিশ জানতে পেরেছে, শিল্পার বাপের বাড়ির খুবই বিশ্বাসভাজন রাজা। কমল বেঙ্গালুরুতে কাজ করে যে টাকা পাঠাত, তা জমা হত শিল্পার মায়ের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। সেই অ্যাকাউন্ট থেকে ৭০ হাজার টাকা তুলেছিল রাজা। ওই টাকা ফেরত দেওয়া নিয়ে কমলের সঙ্গে তার মন কষাকষি চলছিল।
পুলিশের অনুমান, শিল্পা রাজাকে টোপ দেয়, কমলকে সরিয়ে দিতে পারলে ওই টাকা আর শোধ করতে হবে না রাজাকে। কমলের মৃত্যুতে শিল্পার প্রেমের পথও পরিষ্কার হত। এই পরিস্থিতিতে কমল-খুনে রাজি হয়ে যায় রাজা, অনুমান পুলিশের।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার রাতে কমল স্ত্রী-মেয়েকে নিয়ে বাড়ি সংলগ্ন দোকানঘরে শুয়েছিলেন। সেখানে শাটার খানিকটা তোলা ছিল। দরজা-জানলা না থাকায় গরমের জন্য শিল্পাই শাটার নামিয়ে রাখে বলে দাবি পুলিশের। কমল ঘুমিয়ে পড়লে রাজা ঢোকে সেখানে। শিল্পার ওড়না ঘুমন্ত রাজার গলায় পেঁচিয়ে তারপরে হাত দিয়ে গলা টেপা হয় বলে অনুমান পুলিশের। ছটফট করতে করতে এক সময়ে নিস্তেজ হয়ে আসে কমলের শরীর। এরপরে রাজা আবার শাটার তুলে বেরিয়ে যায় বলে অনুমান।
পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, কমলকে খুনের আগে শিল্পা প্রেমিকের সঙ্গে বেশ খানিকক্ষণ মোবাইলে কথা বলেছিল। পুলিশ ফোনটি বাজেয়াপ্ত করেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy