Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

চিকিৎসকের বাড়িতে ঢুকে চেম্বারে ভাঙচুর 

ঘটনার সময়ে বাড়ি ছিলেন না বনগাঁ  মহকুমা হাসপাতালের প্রসূতি ও স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ ওই চিকিৎসক মহিতোষ মণ্ডল।

তাণ্ডব: ভাঙচুরের পরে। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

তাণ্ডব: ভাঙচুরের পরে। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

নিজস্ব সংবাদদাতা
বনগাঁ শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৯ ০৩:৪৯
Share: Save:

এক চিকিৎসকের বাড়িতে হামলার অভিযোগ উঠল বনগাঁয়। রোগিনীর সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। বুধবার সকাল ১১টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে বনগাঁ শহরের চড়কতলা এলাকায়।

ঘটনার সময়ে বাড়ি ছিলেন না বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালের প্রসূতি ও স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ ওই চিকিৎসক মহিতোষ মণ্ডল। তবে তাঁর স্ত্রী-সন্তান ছিল বাড়িতেই। গোটা ঘটনায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তাঁরা। খবর পেয়ে পরে তদন্তে আসেন বনগাঁর এসডিপিও অশেষবিক্রম দস্তিদার। মহিতোষ বলেন, ‘‘চেম্বারের চেয়ার টেবিল, চিকিৎসা সরঞ্জাম, ঘরের কাচের টেবিল-সহ নানা জিনিসপত্র ভাঙচুর করা হয়েছে। গালিগালাজ করা হয়েছে। স্ত্রীর মোবাইল ওরা নিয়ে গিয়েছে। পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগও করা হবে।’’

পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার সকালে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি হন দশ মাসের অন্তঃসত্ত্বা তরুণী শিউলি সরকার। তাঁর বাপের বাড়ি বাগদার ডহরপোতা এলাকায়। অভিযোগ, শিউলির পরিবারের লোকজনের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন মহিতোষ। শিউলির বাবা, তৃণমূল নেতা গৌতম মণ্ডল বলেন, ‘‘হাসপাতালে মেয়েকে ভর্তি করার আগেই ওই চিকিৎসকে ফোন করেছিলাম। তিনি জানিয়েছিলেন, মেয়েকে নার্সিংহোমে ভর্তি করতে। আমরা মেয়েকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছি দেখেই উনি দুর্ব্যবহার শুরু করেন। ফের নার্সিংহোমে নিয়ে যেতে বলেন। হাসপাতালে তিনি কোনও চিকিৎসা করবেন না বলেও জানিয়ে দেন।’’ গৌতমের অভিযোগ, জোর করে মেয়েকে হাসপাতাল থেকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়। রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ শিউলিকে নার্সিংহোমে ভর্তি করতে বাধ্য হন পরিবারের লোকজন।

বুধবার সকালে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে মহিতোষের বাড়িতে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, হামলাকারীদের হাতে লাঠিসোটা ছিল। ওই তরুণীর পরিচিতরাই ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ।

গৌতম অবশ্য দাবি করেছেন, চিকিৎসকের চেম্বার, বাড়িতে কারা ভাঙচুর করেছে, তা জানেন না। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা মেয়েকে নিয়ে ব্যস্ত আছি।’’ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ তুলে বনগাঁ থানা ও হাসপাতালের সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন তাঁরা।

মহিতোষ তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ উড়িয়ে বলেন, ‘‘হাসপাতালে ভর্তি রোগী বা বহির্বিভাগে আসা কোনও রোগীকে আমার চেম্বারের ঠিকানা পর্যন্ত দিই না। হাসপাতালে আসা সব রোগীকে সমান ভাবেই চিকিৎসা করি। ওই তরুণী বা তাঁর পরিবারের সঙ্গে কোনও খারাপ ব্যবহার করা হয়নি।’’

এ দিকে চিকিৎসকের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনার নিন্দা করেছে চিকিৎসদের সংগঠন প্রোগ্রেসিভ ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনের বনগাঁ মহকুমার সম্পাদক গোপাল পোদ্দার বলেন, ‘‘অভিযোগ থাকতেই পারে। কিন্তু তা বলে চিকিৎসকের বাড়িতে হামলা চালানো, ভাঙচুর করে আইন হাতে তুলে নেওয়া সমর্থন করা যায় না। এমন হলে চিকিৎসকদের তো কাজকর্ম বন্ধ করে দিতে হবে। সংগঠনে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করা হচ্ছে।’’

বনগাঁ হাসপাতালে সুপার শঙ্করপ্রসাদ মাহাতো বলেন, ‘‘তরুণীর পরিবারের অভিযোগ পেয়েছি। সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের কাছে তাঁর বক্তব্য জানতে চেয়েছি। তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’’ তবে চিকিৎসকের বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর মেনে নেওয়া যায় না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Violence Vandilism Doctor Chamber
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE