Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
Subhendu Adhikari

নিকাশির হাল ফেরাতে শুরু হচ্ছে পদ্মাখাল সংস্কার

হাবড়া শহরের দীর্ঘদিনের সমস্যা বেহাল নিকাশি ব্যবস্থা। ভারী বৃষ্টিতে পুরসভার বিস্তীর্ণ এলাকায় জল জমে যায়। অতিরিক্ত বৃষ্টি হলে অনেক এলাকা থেকেই মানুষকে ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিতে হয়।

পদ্মা-খাল: হাবড়ায়। ছবি: সুজিত দুয়ারি

পদ্মা-খাল: হাবড়ায়। ছবি: সুজিত দুয়ারি

সীমান্ত মৈত্র
হাবড়া শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০০:৩০
Share: Save:

শহরের নিকাশি ব্যবস্থার হাল ফেরাতে হাবড়ায় শীঘ্রই শুরু হচ্ছে পদ্মাখালের সংস্কারের কাজ। শনিবার হাবড়ায় বাণীপুর লোক উৎসবের উদ্বোধনে এসে পদ্মখালের সংস্কার কাজের শিলান্যাস করেন সেচমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। সংস্কারের পাশাপাশি নালার উপর ৮ বক্স কালভার্ট তৈরি হবে বলেও জানিয়েছেন সেচমন্ত্রী।

হাবড়া শহরের দীর্ঘদিনের সমস্যা বেহাল নিকাশি ব্যবস্থা। ভারী বৃষ্টিতে পুরসভার বিস্তীর্ণ এলাকায় জল জমে যায়। অতিরিক্ত বৃষ্টি হলে অনেক এলাকা থেকেই মানুষকে ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিতে হয়। শহরবাসীর অভিযোগ, ১৯৭৯ সালে পুরসভা তৈরি হওয়ার পর থেকে কখনও সিপিএম, কখনও তৃণমূল, বিজেপি ক্ষমতায় থেকেছে। কিন্তু সুষ্ঠু নিকাশি ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পদক্ষেপ করা হয়নি। অতীতে এলাকার নিকাশির প্রধান মাধ্যম ছিল পদ্মাখাল। বর্ষার জমা জল সেই খাল দিয়ে বেরিয়ে যেত। দীর্ঘদিন ধরেই এলাকবাসী পদ্মাখালের সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসছেন। কয়েকদিন আগে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতে এলাকায় আসেন খাদ্যমন্ত্রী। তাঁর কাছে খাল সংস্কারের দাবি জানান স্থানীয়রা। মন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছিলেন। মানুষের দাবি মেনেই এবার পদ্মাখাল সংস্কারের সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার।

নালা সংস্কারের কাজ করবে বিদ্যাধরী ড্রেনেজ ডিভিশন। ডিভিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, হাবড়া এলাকায় পদ্মানালার সাড়ে তিন কিলোমিটার অংশ সংস্কার করা হবে। নালা থেকে পলি তুলে গভীরতা বাড়ানো হবে। ডিভিশনের এক কর্তা বলেন, ‘‘পদ্মাখালের সংস্কার এবং ৮টি কালভার্ট তৈরির জন্য প্রায় ২ কোটি টাকা অনুমোদন হয়েছে। বর্ষার আগে কাজ শেষ করাই লক্ষ্য।’’ পদ্মাখালের জমি দখল করে তৈরি হয়েছে বাড়িঘর।

শহরবাসীর অভিযোগ, রাজনৈতিক দলগুলির মদতেই খাল বেদখল হয়ে গিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এখানে জলাজমি ও পুকুর বেআইনি ভাবে বোজানো হচ্ছে বলে অভিযোগ। পুরসভা সূত্রে খবর, সম্প্রতি দু’টি পুকুর ভরাটের খবর পেয়ে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

বিরোধীদের দাবি, অপরিকল্পিত ভাবে খাল সংস্কার করা হলে অর্থের অপচয় ছাড়া আর কিছু হবে না। বিজেপি নেতা বিপ্লব হালদার বলেন, ‘‘পুরসভা ভোটের আগে নালা সংস্কার করা নির্বাচনী চমক ছাড়া আর কিছু নয়। মাস্টারপ্ল্যান তৈরি না করে নালা সংস্কার মানে টাকার অপচয়।’’ হাবড়ার সিপিএম নেতা আশুতোষ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘শঙ্করকন্ঠ মুখোপাধ্যায় পুরপ্রধান থাকাকালীন শহরের জল নিকাশির জন্য ম্যাপ তৈরি করেছিলেন। সেটা পরবর্তী সময়ে বাস্তবায়িত হয়নি। পদ্মাখালের যে সব এলাকা দিয়ে জল বের হত সেখানে নির্মাণ গড়ে উঠেছে। ওই সব নির্মাণ কাজের জন্য পুরসভা থেকে অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। পুরসভার সচেতনার অভাবেই হাবড়া জলের তলায় চলে গিয়েছে।’’ প্রাক্তন পুরপ্রধান তৃণমূলের নীলিমেশ দাস অবশ্য বলেন, ‘‘বাম আমলেই পদ্মানালা জবরদখল হয়েছে। বাম পরিচালিত পুরবোর্ডই অনুমতি দিয়েছিল নির্মাণ কাজের। গত পাঁচ বছরে নতুন করে কোনও অনুমতি দেওয়া হয়নি। পাঁচ বছর ধরে বর্ষার আগে আমরা পদ্মাখাল সংস্কার করেছি।’’ জ্যোতিপ্রিয় বলেন, ‘‘খালটি আগের অবস্থায় ফিরেয়ে দিতে পদক্ষেপ করা হচ্ছে। বাম আমলে খালটির সংস্কারের দিকে নজর দেওয়া হয়নি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Padma Khal Subhendu Adhikari
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE