Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪
বাসন্তীতে অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে

পারমিট মিললেও পথে নামছে না গাড়ি

দীর্ঘ দিন ধরে যাতায়াতের সমস্যা ছিল। এলাকার মানুষের দাবি মতো জেলা পরিবহণ দফতর ১১টি ছোট গাড়ির রুট পারমিট দেয়।

সামসুল হুদা
বাসন্তী শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:৪৫
Share: Save:

দীর্ঘ দিন ধরে যাতায়াতের সমস্যা ছিল। এলাকার মানুষের দাবি মতো জেলা পরিবহণ দফতর ১১টি ছোট গাড়ির রুট পারমিট দেয়। সেই মতো বাসন্তীর হোগলডুরি থেকে ক্যানিং পর্যন্ত প্রায় ২১ কিমি রাস্তায় শুরু হয়েছিল পরিষেবা। অভিযোগ, তৃণমূল নেতাদের মদতে সেই পরিষেবা বন্ধ করে দেয় ভ্যানো চালকেরা।

গাড়ি চালাতে না পেরে ছোট গাড়ির মালিকেরা হাইকোর্টের দারস্থ হন। সেই মতো হাইকোর্ট ১৭ মার্চ জেলা পরিবহণ দফতর ও পুলিশকে নির্দেশ দেয়, ছোট গাড়ি চালানোর ব্যবস্থা করতে।

সেই নির্দেশকে মান্যতা দিতে গত ৮ এপ্রিল বাসন্তী ব্লক অফিসে প্রশাসনের কর্তা, বিভিন্ন পঞ্চায়েত প্রধান ও ভ্যানো চালকদের নিয়ে বৈঠক হয়। ১১ এপ্রিল নতুন করে আবার শুরু হয় ছোট গাড়ি চলাচল। কিন্তু এ বার অভিযোগ ওঠে, গোসাবার বিধায়ক জয়ন্ত নস্করের অনুগামীরা ও ভ্যানো চালকেরা মিলে ফের ওই পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছে।

ওই ছোট যাত্রিবাহী গাড়ির মালিকদের অভিযোগ, জয়ন্তবাবুর অনুগামীরা প্রতি গাড়ি-পিছু ৫০ হাজার টাকা করে দাবি করছেন। টাকা না দিলে হুমকি দিয়ে বলা হয়েছে, কোনও ভাবেই গাড়ি চালাতে দেওয়া হবে না।

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বাসন্তী ব্লকে দীর্ঘ দিন ধরে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রয়েছে। যার এক দিকে আছেন গোসাবার জয়ন্তবাবু। অন্য দিকে বাসন্তীর বিধায়ক গোবিন্দ নস্কর। সম্প্রতি ওই রুটে আবার ম্যাজিক চালানোর রুট পারমিট পান ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক সওকত মোল্লার অনুগামীরা। জয়ন্তবাবুর অনুগামীরা অভিযোগ তোলেন, বহিরাগত লোকজন কেন এলাকায় গাড়ি চালাবে। এ নিয়ে বিভিন্ন সময় রাস্তা অবরোধও করা হয়। প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘হাইকোর্টের রায়কেও মানতে চাইছেন না ওই সব নেতারা।’’

মহকুমাশাসক অদিতি চৌধুরী বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে আমি জেলা পরিবহণ দফতর ও জেলাশাসকের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ করব।’’

ছ‌োট যাত্রিবাহী গাড়ির মালিক হাসান আলি লস্কর ও সাবির শেখ বলেন, ‘‘আমরা কিস্তিতে গাড়ি কিনেছি। অথচ, রুট পারমিট পেয়েও গাড়ি চালাতে পারছি না। গাড়ি চালাতে গেলে মোটা টাকা চাওয়া হচ্ছে। বসে বসে কিস্তির টাকা গুণতে হচ্ছে। এ ভাবে কী করে টাকা শোধ করব, জানি না।’’

অন্য দিকে, ভ্যানো ইউনিয়নের সভাপতি আবুবক্কর মোল্লা বলেন, ‘‘এলাকার গরিব মানুষ অনেক কষ্টে ভ্যানো তৈরি করে চালাচ্ছেন। যদি ওই ছোট গাড়ি চালু হয়, তা হলে ওই সব গরিব মানুষ তো পথে বসবেন!’’ তাঁর দাবি, সে জন্যই ভ্যানো চালকেরা প্রতিবাদ করেছেন। তবে এর মধ্যে তিনি কোনও ভাবেই যুক্ত নন বলে দাবি আবুবক্করের।

হাত ঝেড়ে ফেলতে চেয়েছেন জয়ন্তবাবুও। তাঁর কথায়, ‘‘কিছু গরিব মানুষ প্রতিবাদ করছেন বলে শুনেছি। আমি এ সবের মধ্যে নেই। তাই কোনও মন্তব্য করব না।’’ যদিও পাশাপাশি তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘কোথাও কোনও টাকা চাওয়া হয়নি। যাঁরা এই অভিযোগ করছেন, তাঁরা মিথ্যে বলছেন। এর সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই।’’

সওকতের দাবি, ‘‘হাইকোর্টের রায়কে তো মান্যতা দিতেই হবে। তবে কারও যাতে রুজিতে টান না পড়ে, তা নিয়ে দলের রাজ্যস্তরে কথা বলব।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘বিষয়টি নিয়ে দলের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Car Service Car's permit
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE